মুজিব জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে যুব সংস্থার মাদক নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত



নিউজ ডেস্কঃ সুস্থ সমাজ গঠনে শান্তির প্রয়াস” এই শ্লোগান  সামনে রেখে, মৌলভীবাজার জেলার সর্ববৃহৎ মাদক, ইভটিজিং ও অসামাজিক কার্যকলাপ বিরোধী প্রতিবাদী  সমাজিক সংস্থা জেলা যুব কল্যাণ সংস্থা,মৌলভীবাজার এর সদর উপজেলা যুব কল্যান সংস্থার উদ্যোগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে কষ্টে অর্জিত স্বাধীন দেশে যুব সমাজ কে মাদকের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করতে আমাদের করণীয় শীর্ষক আলাচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২২ মার্চ সোমবার দুপুর ২ ঘটিকায় পশ্চিম শহরতলী এস আর প্লাজা সংলগ্ন এলাকায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ ফজলুল আলী। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভা মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান।

সদর উপজেলা ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাফিজ ওয়ায়েছ আহমদের কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে ও সদর উপজেলা যুব কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মোঃ ওলিউল ইসলাম নিজাম সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক মোঃ জুবেদ মিয়া ও জেলার যুগ্ন-সম্পাদক, মোহাম্মদ আলী টিপুর যৌথ পরিচালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা যুব কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলিম উদ্দিন হালিম।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওঃ মুফতি শামছুল ইসলাম,  মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ গোলাম মর্তুজা, পৌরসভা ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়ছল আহমদ,  কাউন্সিলর, ৮ নং ওয়ার্ড সৈয়দ সেলিম হক, আজাদুর রহমান অদুদ, সাধারণ সম্পাদক ট্রাক ও ট্যাংকলরী, শেখ রুমেল আহমদ  পরিচালক, দি চেম্বার অব কমার্স ইন্ড্রাস্টিজ, মো: নুরুল হক সাধারণ সম্পাদক জেলা যুব কল্যাণ সংস্থা, মোঃ ফয়েজ আহমদ উপ-পরিদর্শক মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর।

অন্যনদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, খালেদ চৌধুরী সভাপতি সম্মিলিত সামাজিক উন্নয়ন পরিষদ, নাজমূল ইসলাম আলী সভাপতি পৌর কমিটি, কলেজ কমিটির যুগ্ন-আহবায়ক, শেখ হেলাল আহমেদ, সদর উপজেলা মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা শাহানা আক্তার ডলি।

বক্তারা বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে আমাদের যুব সমাজ অসংখ্য সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত। এ সব সংকট ও সমস্যার মধ্য হতে অন্যতম সংকট ও সমস্যা হলো মাদক সেবন ও নেশা করা। ইসলামে সব ধরনের মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ হলেও ধর্মীয় মূল্যবোধ হারিয়ে যুব সমাজ মাদকের মরণ নেশায় মেতে উঠেছে। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ যুব সমাজ মাদক-আক্রান্ত হয়ে ধ্বংসের অবলীলায় নিপতিত হতে দেখা যায়। বিভিন্ন ধরনের মাদকের সয়লাব যুবকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়াতে তারা কোনো না কোনো উপায়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।

মাদক বর্তমানে এত বেশি ব্যাপক আকার ধারণ করছে, যার ভয়ানক প্রভাব ও বিস্তার লক্ষ্য করা যায় আমাদের মানুষ গড়ার আঙ্গিনা-শিক্ষাঙ্গনগুলোতেও। এটি বর্তমান সময়ে যুব সমাজের জন্য একটি ভয়ানক পরিণতি ও অশনি সংকেত। তাই, বর্তমানে যদি একজন যুবক নষ্ট হয়ে যাওয়ার আগে তাকে সঠিক পথে রাখার জন্য কিংবা মাদক থেকে দূরে রাখার জন্য সময়মত সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা হয়, তাহলে যুব সমাজের কাছে জাতির যে প্রত্যাশা তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হতে বাধ্য।

যুব সমাজ ধ্বংস ও তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের প্রধান অন্তরায় মাদক। মাদক শুধু একজন যুবকের মেধা ও সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের প্রতিবন্ধক নয় বরং মাদক একজন যুবককে ধ্বংসের অবলীলা ও মারাত্মক পরিণতির দিক ঠেলে দিয়ে তাকে চিরতরে ধ্বংস ও অকেজো করে দেয়। তার মূল্যবান জীবনটা নষ্ট হয়ে যায়।

ইসলামি মূল্যবোধ বান্ধব সমাজ ব্যবস্থা ছাড়া সব সমাজেই মাদকের ছুটাছুটি পরিলক্ষিত। মুসলিম পারিবারিক বন্ধন ও ইসলামি মূল্যবোধ কম-এমন পরিবারের সদস্যরা অতি সামান্য কারণে মাদকদ্রব্যে অধিকতর আসক্ত হচ্ছে। যারা নেশা করে তাদের অধিকাংশই জানে, নেশা কোনও রকম উপকারী বা ভালো কাজ নয় এবং তা মানুষের জীবনীশক্তি বিনষ্ট করে।

এসব জেনেশুনেও মাদকাসক্ত মানুষ নেশার অন্ধকার জগতের মধ্যে থাকতে চায়। মাদকাসক্ত তরুণ প্রজন্ম ধর্ম-কর্ম সবকিছু বিসর্জন দিয়ে হতাশাকে সঙ্গী করে জীবনের চলার পথ থেকে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে এবং বিবেক-বুদ্ধি হারিয়ে সামাজিকতা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।

মানবসভ্যতার প্রতি মারাত্মক হুমকি সৃষ্টিকারী দেশের অন্যতম অভিশাপ মাদকাসক্তি। মাদকদ্রব্যের নেশার ছোবল এমনই ভয়ানক যে তা ব্যক্তিকে পরিবার, সমাজ, দেশ থেকেই বিচ্ছিন্ন শুধু করে না,তা সমগ্র জীবন ধ্বংস করে দেয়। মাদক কেবল সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্রেরই ক্ষতি করে না, সভ্যতা ও সংস্কৃতিকেও বিপন্ন করে।

পরিমাণে অল্প হোক আর বেশি হোক-পান বা অন্য কোনোভাবে গ্রহণ করা হোক, নেশা ও চিত্ত-বিভ্রমক হলেই তা ইসলাম ধর্মে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে।

মাদক হলো এমন এক ধরনের অবৈধ ও বর্জনীয় বস্তু, যা গ্রহণ বা সেবন করলে আসক্ত ব্যক্তির এক বা একাধিক কার্যকলাপের অস্বাভাবিক পরিবর্তন বা বিকৃতি ঘটতে পারে। মাদকাসক্তিতে মানুষের কোনও না কোনও ক্ষয়ক্ষতি তো হয়ই এবং ধীরে ধীরে তা নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। মাদক কেবল একক অপরাধ নয়, মাদকাসক্তির কারণে সব জনপদেই চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস বেড়ে গিয়ে মানুষের জান-মাল ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।সাথে সন্ত্রাস যৌন অ¯িøলতা ও অন্যান্য অপরাধ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।

মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে মানুষের অন্তরে মাদকের ক্ষতির অনুভূতি জাগ্রত করে মাদকের করাল গ্রাসে তরুণ সমাজ আজ সৃষ্টিশীল ও সৃজনশীল কাজে মেধা, যোগ্যতা, প্রজ্ঞার আশানুরূপ অবদান রাখতে পারছে না। যে তরুণ তার অমিত সম্ভাবনাকে পরিবার, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজে লাগাতে পারত, মাদকের নীল দংশন তার সুকুমার বৃত্তি নষ্ট করে, এমনকি ক্রমান্বয়ে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।

যেহেতু মাদকাসক্তি একটি জঘন্য সামাজিক ব্যাধি, জনগণের সামাজিক আন্দোলন, গণসচেতনতা ও সক্রিয় প্রতিরোধের মাধ্যমেই এর প্রতিকার করা সম্ভব। ঘর থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, ধর্মিয় স্থান বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাড়া-মহল্লা ও এলাকায় মাদকদ্রব্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ঘৃণা প্রকাশের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদকদ্রব্যের মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে নিয়মিত সভা-সমিতি, সেমিনার, কর্মশালার আয়োজন করতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ধর্মীয় বিধিবিধান সম্পর্কিত শিক্ষামূলক ক্লাস নিতে হবে। মাদকদ্রব্য উৎপাদন, চোরাচালান, ব্যবহার, বিক্রয় প্রভৃতি বিষয়ে প্রচলিত আইনগুলোর বাস্তব প্রয়োগ ও কঠোর বিধান কার্যকর নিশ্চিত করা দরকার।

সমাজজীবনে এহেন ঘৃণ্য মাদকদ্রব্যের ব্যবহার ও প্রসার রোধ করা অত্যন্ত জরুরি। এ ক্ষেত্রে যারা মাদকদ্রব্য প্রস্তুত, এর প্রচলন ও সরবরাহের কাজে জড়িত তাদের দেশ ও জাতির স্বার্থে এহেন অনৈতিক কাজ অবশ্যই বর্জন করা উচিত।

সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ সকল শ্রেণীর ধর্মপ্রাণ লোক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে মাদকদ্রব্যের প্রসার রোধে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালালে দেশ থেকে মাদকদ্রব্যের ব্যবহার চিরতরে বন্ধ হতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে ।

অতএব, ধর্মভীরু মা-বাবা ও অভিভাবকদের উচিত সর্বনাশা মাদকের কুফল ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সন্তানদের সচেতন করা। তাহলেই মাদকাসক্ত সন্তানদের নিয়ে মা-বাবার সমস্যা অনেক কমে যাবে। মা-বাবা ও অভিভাবকেরা, নিজেদের সন্তানদের সামনে ধর্মীয় রীতিনীতি, ইসলামি মূল্যবোধ ও নীতি-নৈতিকতার সুন্দর আদর্শ তুলে ধরুন।

কারণ তারাই একদিন সমাজ-সংসার তথা দেশের কর্ণধার হবে। প্রত্যেক অভিভাবকের উচিত, তাদের সন্তান যাতে কোনও অসৎ সংস্রবে পড়ে মাদকাসক্ত না হয় সেদিক সজাগ দৃষ্টি রাখা। এ ক্ষেত্রে পারিবারিক শৃঙ্খলা, সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, সর্বোপরি মানসিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করেন বক্তারা।

এসময় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আবু  আহাদ,আছাব আলী, মাসুক আহমদ, কামরুল আলম চৌঃ,জাহিদ আহমদ, কাজী রুহিন আহমদ,মতিউর রহমান শিমূল,দেলোয়ার হোসেন, জেলা  কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সহ-সভাপতি মোঃ ইকবাল,বাছন আহমদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক,মান্না আহমদ (মজনু) , সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, এড. শফিকুল ইসলাম, মোঃ আ: আমিন,সহ মানবাধিকার সম্পাদক,নজমূল খান, সদর কমিটির  উপদেষ্টাদের মধ্যে উপস্থিত, মো: খালিক মিয়া, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার,মোঃ ওয়াহিদ আহমদ,নজরুল ইসলাম, মোঃ মোশাহিদ আহমদ, তারেক হুসেন,রকিবুল হাসান রাকিব,জাহেদুল ইসলাম পাপ্পু,আব্দুর রহিম,সাদ্দাম হোসেন,সদর কমিটির কার্যকরী সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত, সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রাহিন, সহ-সভাপতি হামিদুল ইসলাম, আবুল কাসেম আসাদ,কামরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান মিজু,তারেক আহমদ ।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মোঃ রায়হান মিয়া, জুনেদ আহমদ, সায়েদ আহমদ শিমুল,সাংগঠনিক সম্পাদক, শেখ কামরুল হাসান শাওন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রুপক বৈদ্য, টিপু আহমদ, শেখ সাগর আহমদ,স্বচ্ছ বৈদ্য, রুমান মিয়া,অপু মিয়া।

প্রচার সম্পাদক সোয়েব আহমদ, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অর্থ সম্পাদক সুমেল আহমদ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ওয়ায়েছ মিয়া, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ইমন মিয়া, ক্রীড়া সম্পাদক মুরছালিন আহমেদ তানিম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক, শেখ রেজওয়ান হুসেন জাকারিয়া, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সুফুল মিয়া, আইন বিষয়ক সম্পাদক মিসবাহুর রহমান মুহিব, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ,সেজুল হুসেন, তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ মাহমুদ হাসান, মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক সাইদুল ইসলাম নাইম, সদস্য রুবেল আহমদ, তরিকুল ইসলাম তানিম, মোঃ নাজমুল ইসলাম মাহফুজ, ময়নুল ইসলাম টিটু,আশরাফ আহমেদ তুহিন, মোঃ সামাস আহমদ, কামরান আহমদ, দ্বীপ জয় পাল টনি, মোঃ আব্দুর রহিম প্রমূখ।

Post a Comment

Previous Post Next Post