কুলাউড়ায় লকডাউনের নির্দেশনা মানতে অনীহা, স্বাস্থ্যবিধিও উপেক্ষিত

 



এস আলম সুমন: দেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে প্রতিদিন। এ অবস্থায় করোনার সংক্রমণ রোধে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের নির্দেশনা মানছেন না মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার মানুষজন।

প্রশাসন অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক মামলা ও জরিমানা করলেও মানুষের অপ্রয়োজনে ঘুরাফেরা থামছে না। অনেকেই আবার সামাজিক দুরত্ব না মেনে মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, ১ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ৭৯ জন করোনা টেস্টের নমুনা দিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ জন। ১৯ এপ্রিল ২ জন নতুন করে টেস্টের নমুনা দিয়েছেন।



উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৪ এপ্রিল থেকে জারীকৃত লকডাউনের নির্দেশনা কার্যকর করতে সচেতনতামূলক মাইকিং করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অপ্রয়োজনে বাহিরে ঘোরাফেরা রোধে অভিযান পরিচালনা, বিকেল ৩টার পর দোকান খোলা রাখা ও গাড়ি-মোটরসাইকেল নিয়ে চলাফেরা করার দায়ে মামলা এবং জরিমানা করা হচ্ছে। লকডাউনের ৫ দিনে ৫১টি মামলায় ২৫ হাজার ২’শ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। তবুও নানা অজুহাতে লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছেন। এসব ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাজরাতুন নাঈম।

সরেজমিনে পৌরশহরসহ উপজেলার রবিরবাজার, ব্রাহ্মণবাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচাবাজারসহ নিত্যপণ্যোর দোকানে ভিড় মানুষের। কারো মুখে মাস্ক আছে কারো নেই। অনেকে দোকানপাটও খোলা রাখছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেলে দোকানের সার্টার বন্ধ করে দিচ্ছেন। ইফতারী কেনার জন্য  রেস্তোরায় একজন আরেকজনের ওপর গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছেন। বাস চলাচল না করলেও সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল বেড়েছে দুইদিন থেকে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিনয় ভূষন রায় জানান, কুলাউড়ার ২টি সিএনজি গ্যাস পাম্পে ঢালাওভাবে গাড়ি ও সিএনজি অটোরিক্সায় গ্যাস না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি। জরুরী অ্যাম্বুল্যান্স এবং রোগীবাহী গাড়ি ও মুভমেন্ট পাস গ্রহণকারীদের গাড়িতে গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারে পুলিশ লকডাউনের নির্দেশনা কার্যকর করতে মাঠে রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আকতার বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের ঝুকি হ্রাসে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। করোনার টেস্ট দিতে মানুষের আগ্রহ কম। স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা মানুষরা শারীরিক দুরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারে অনীহাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে চান না। তবুও সাবইকে সেবা নিতে হলে স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক ব্যবহার করতে নির্দেশ দেই।’

তিনি বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত রোগীর হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাঁর পরিবারের লোকজনকে টেস্ট করার জন্য বলি। এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘরের বাহিরে না বের হওয়ার পরামর্শ দেই। করোনার টিকা নেওয়ার আগ্রহ বাড়ছে লোকজনের মধ্যে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি রোধে লকডাউনে নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে লোকজনকে সচেতন করা হচ্ছে। এছাড়াও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা মামলা দেই, জরিমানা আদায় করি। তবুও লোকজন অজুহাত দেখিয়ে অযথা ঘোরাফেরা করছেন। সবাইকে নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

Post a Comment

Previous Post Next Post