ছদ্মবেশ ধরেছিলো ধর্ষক তারেক, তবু শেষ রক্ষা হয়নি

 

 

অনলাইন ডেস্কঃ লম্বা দাঁড়ির এক যুবক। তার নাম তারেকুল ইসলাম তারেক। সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণী ধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি। এই মামলার এজাহারভূক্ত সব আমামি গ্রেপ্তার হয়ে গেলেও বাকী ছিলো তারেক। তারেক কোথায় এ নিয়ে ছিলো জল্পনা কল্পনা।

অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারেকের খোঁজ পেলো র‌্যাব। তবে তারেকের যে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে তার সাথে গ্রেপ্তার হওয়ার সময়ের চেহারার মিল নেই। গ্রেপ্তার এড়াতে দাঁড়ি কেটে, মাথা মুড়িয়ে ছদ্মবেশ ধরেছিলো তারেক। তবু শেষ রক্ষা হয়নি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের বরমা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গ্রেপ্তার এড়াতে চেহারা পুরো বদলে ফেলেছিলো তারেক। লুঙ্গি পরিহীত, উর্ধাঙ্গ অনবৃত অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।


র‌্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সামিউল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারেককে সিলেট নিয়ে আসা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তারেককে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে এই মামলার এজাহারভূক্ত সব আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হলো। এছাড়া এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আইনুল ও রাজন নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

শুক্রবারের এই ধর্ষণের ঘটনায় শনিবার নির্যাতিতা তরুণীর স্বামী শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, এমসি কলেজের প্রধান ফটক থেকে তাদের জিম্মি করে যারা ধরে নিয়ে আসেন তাদের মধ্যে তারেকুল ইসলাম তারেকও ছিলেন। এসময় নির্যাতিত দম্পত্তির প্রাইভেট কারের দখল নেন তারেক। তিনি প্রাইভেট কার চালিয়ে তাদের ছাত্রাবাসে নিয়ে আসেন। এরপর ধর্ষণ ও নির্যাতনেও অংশ নেন তারেক।

এই মামলার অন্য আসমিদের মধ্যে সোমবার রাত ১১ টায় জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর থেকে এই মামলার আসামি মাহফুজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে কানাইঘাট থানা পুলিশ। এরআগে রোববার সকালে ছাতক থেকে মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও মাধবুপর থেকে অর্জুন লস্করকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোবার রাতে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থেকে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

একই রাতে হবিগঞ্জ সদর থেকে মামলার এজাহারভূক্ত আসামি শাহ মাহবুবুর রহমান রনিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ওই রাতেই সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে  মো. আইনুদ্দিন ও মো. রাজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৯। এজাহারে নাম না থাকলেও এই ঘটনার পর থেকে আইনুদ্দিন ও রাজনের নাম উচ্চারিত হচ্ছে। গ্রেপ্তার হওয়া অন্য আসামিরাও এ ঘটনায় আইনুদ্দিন ও রাজন জড়িত বলে জানিয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া সকলেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।

 


প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। রাত সাড়ে ৮টার দিকে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এ ঘটনায় তরুণীর স্বামীর দায়ের করা মামলায় আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post