সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি কমছে


অনলাইন ডেস্কঃ প্রাণঘাতী করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে টানা তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে, এর কোনো ঠিক নেই। খোদ সরকার প্রধান শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, সংক্রমণ পরিস্থিতি উন্নতি না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এমন পরিস্থিতিতে বেশ কিছু বিকল্প উপায় ভাবছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে অন্যতম হল- সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি কমানো।

শনিবার (২৭ জুন) এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইরাবের) ‘করোনায় শিক্ষার চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনারে বিকল্প উপায়গুলো তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘অনির্ধারিত বন্ধে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে এ বছর আর ক্লাস হওয়ার খুব একটা সময় থাকছে না। আমরা হিসেব করে দেখেছি বছরে ১৩০ থেকে ১৪০ দিন ক্লাস হয় আর সাধারণ ছুটি থাকে ১০০ দিনের মতো। করোনাকালে পড়াশোনা যাতে স্বাভাবিক হয় এ কারণে আমরা এই সময়টা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। এ বছর আমরা প্রয়োজনে আমাদের শেষনের সময় বাড়িয়ে হলেও শেষ করার চেষ্টা করবো। এবং আগামী বছর আমরা বিভিন্ন সময়ের ছুটি কমিয়ে সমন্বয় করার চেষ্টা করবো।’

মন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই একই ধরনের চেষ্টা করছি এই করোনাকালীন সময়। আমরা দেখছি সরকার এবং বিশেষজ্ঞদের ভাবনা এক। করোনা পরিস্থিতিতে ঝরে পড়ার হার, দারিদ্রের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, মানুষের চাকরি হারানো বা কর্মসংস্থানের হার অনেক বেড়ে যাচ্ছে। বাল্য বিবাহ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে। শিশুশ্রম বাড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা কারিগরিতে শেখাতে চাই। আমরা যেটুকু শেখানো দরকার আ শেখানো উচিত তা না করে আমরা কাউকে সার্টিফিকেট দিবো না। প্রাকটিক্যালে নিন্মতম শিক্ষা আমরা না দিতে পারলে কাউকে সার্টিফিকেট দিবো না। তবে, এখন আর এটি ভাবার সুযোগ নেই যে, একেবারে প্রাকটিক্যাল ক্লাসরুম ছাড়া বা ওয়ার্কশপ ছাড়া আপনি শিখতে পারেন না। এখন কিন্তু ভার্চুয়াল ল্যাবরেটরিরও কনসেপ্ট আছে এবং সেটি প্রচলিতও আছে। আমরা হয়তো এখনো সেই প্রযুক্তিতে যাইনি তবে, আমরা সামনে এ ধরনের প্রযুক্তি যাতে ব্যবহার করতে পারি তা নিয়ে কাজ চলছে।

পরীক্ষা কেন্দ্রীক পড়াশোনা বা পরীক্ষা নিয়ে যে উৎকণ্ঠা তা এখন কিছুটা হলেও কমবে। এছাড়া যারা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বা বাকপ্রতিদ্বন্ডী তাদের জন্য এ সময়টা বেশ কাজে দিবে। তাদের জন্য আমাদের সংসদ টিভির ক্লাসগুলো ভালো হবে। আমরা এটিকে আরো সহজ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

যে কোনো সংকট শুধু সংকট নয়। যে কোনো সংকট আমাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মেচন করে। এবং আপনি একটা সংকটে পড়লেই তখন আপনি পথ খোঁজার চেষ্টা করেন। আমরাও তাই এই শিক্ষাখাতে নতুন এই সংকট মোকাবিলার পথ খুঁজছি। আমরা অনেক নতুন সম্ভাবনার দিক দেখছি। আমাদের সেই সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ‘১০ লাখ শিক্ষার্থী যাদের কাছে আমরা কোনোভাবেই পৌঁছাতে পারছি না তাদের বিষয়ে আমরা ভিন্ন চিন্তা করছি। আমরা ডিভাইস কেনার ক্ষেত্রে স্টুডেন্ট লোন দেয়া যায় কিনা সে বিষয়ে ভাবছি। অনেক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের কিছু অংকের টাকা দিয়ে সহায়তা করছে।’

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘বছরে আমাদের অন্তত ১০০ দিন ছুটি থাকে। কিন্তু এবার আমরা চিন্তা করছি আগামী বছর থেকে প্রয়োজনে এই ছুটি কমিয়ে আনা হবে। ছুটি কমিয়ে করোনাকালীন সংকট মোকাবিলা করার চেষ্টা করা হবে।’

Post a Comment

Previous Post Next Post