সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে স্বল্প বিরতিসম্পন্ন ট্রেন চালুর পরিকল্পনা


নিউজ ডেস্কঃ ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা কোচের সরবরাহ ও রেক পরিবর্তনের ফলে অবমুক্ত কোচ দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সিলেট (স্বল্প বিরতিসম্পন্ন) রুটে নতুন ট্রেন সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা করছে রেল মন্ত্রণালয়। সিলেট-চট্টগ্রাম রুট ছাড়াও দেশের বিভিন্ন রুটে একাধিক ট্রেন চালুর পরিকল্পনাও করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

জানা গেছে, শিগগিরই ঢাকা-তারাকান্দি-বঙ্গবন্ধু সেতু (ভায়া)-ঢাকা রুটে এক জোড়া নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু হতে যাচ্ছে। ঢাকা-তারাকান্দি রুটে চলাচলরত অগ্নিবীণা ট্রেনের রেকের সঙ্গে সমন্বয় করে এই এক জোড়া ট্রেন শিগগিরই রেলের শিডিউলে যুক্ত হবে। এছাড়া কোচ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ঢাকা-নোয়াখালী রুটেও আরেক জোড়া নতুন ট্রেন সার্ভিস চালাবে রেলওয়ে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্রে জানা গেছে, আগের সময়সূচী অনুযায়ী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস (৭৩৫ নং ট্রেন) ঢাকা থেকে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে যেত। একই দিন বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে ৭৩৬ নম্বর ট্রেন হিসেবে তারাকান্দি থেকে ঢাকায় ফেরত আসত। এ রুটে নতুন আরেক জোড়া ট্রেন চালুর ফলে অগ্নিবীণা ট্রেনের শিডিউলও পরিবর্তন হচ্ছে। নতুন ট্রেনটির নম্বর হচ্ছে ৭৯৯ ও ৮০০। নতুন ট্রেনটি পথিমধ্যে ঢাকা বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, টাঙ্গাইল, বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব, ভুয়াপুর, হেমনগর, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে তারাকান্দি পৌঁছবে।

ঢাকা-তারাকান্দি রুটে প্রস্তাবিত ট্রেনটির রেক কম্পোজিশন ১৩/২৬। অর্থাৎ ১৩টি কোচ দিয়ে ট্রেনটি যাত্রী পরিবহন করবে। এর মধ্যে ডব্লিউইআর দুটি (গার্ডব্রেক ও শোভন), ডব্লিউসিসি একটি (প্রথম শ্রেণী চেয়ার), ডব্লিউইসি দুটি (শোভন চেয়ার), ডব্লিউএফসি একটি (প্রথম শ্রেণী সিট), ডব্লিউইসিএফ একটি (পাওয়ার কার), ডব্লিউসিডিই একটি (ডাইনিং কার) এবং ডব্লিউই (শোভন) পাঁচটি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ থেকে রেল ভবনে পাঠানো এ-সংক্রান্ত এক অনুমতিপত্রে দেখা গেছে, ৭৩৫ নং ট্রেনটি (অগ্নিবীণা) বেলা ১১টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে জামালপুর হয়ে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে তারাকান্দি পৌঁছবে। অন্যদিকে তারাকান্দি থেকে বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে নতুন ৮০০ নম্বর ট্রেনটি টাঙ্গাইল হয়ে রাত ১১টা ৩০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছবে। এছাড়া ৭৯৯ নম্বর নতুন ট্রেনটি সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে টাঙ্গাইল হয়ে বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে তারাকান্দি পৌঁছবে। এরপর  বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে ৭৩৬ নম্বর (অগ্নিবীণা) ট্রেনটি তারাকান্দি থেকে ছেড়ে জামালপুর হয়ে রাত ১১টায় ঢাকায় পৌঁছবে। সময়সূচী তৈরি হলেও ট্রেনটির নামকরণ এখনো ঠিক হয়নি। নতুন বছরের শুরুতে ট্রেনটি চালু করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়াও ঢাকা থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত আরও একজোড়া নতুন ট্রেন সার্ভিস চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। নামকরণ চূড়ান্ত না হলেও নতুন এ ট্রেন রেলের আসন্ন নতুন ওয়ার্কিং টাইম টেবিলে সংযোজন করা হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী ট্রেনটি প্রতিদিন সকাল ৮টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে বেলা ২টায় নোয়াখালী পৌঁছবে। অর্থাৎ ট্রেনটির রানিং টাইম রাখা হয়েছে মাত্র ৬ ঘণ্টা। এছাড়া নোয়াখালী থেকে বেলা ৩টায় ছেড়ে রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছবে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক সরদার শাহাদাত আলী জানান, ইন্দোনেশিয়া থেকে নতুন কোচ আসছে। প্রতি মাসেই ২০-২২টি কোচ আসায় রেলওয়ে সারা দেশে নতুন নতুন ট্রেন সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে পূর্বাঞ্চলেও একাধিক ট্রেন চালু হবে। বেশকিছু ট্রেনের প্রস্তাব এলেও এখন পর্যন্ত নাম ও চালুর সময় চূড়ান্ত হয়নি। তবে রেলওয়ে চাহিদাসম্পন্ন রুটেই ট্রেন চালানোর চিন্তাভাবনা করছে।

ইন্দোনেশিয়া থেকে ২৫০টি নতুন কোচ (৫০টি ব্রড গেজ ও ২০০টি মিটার গেজ) আমদানি শুরু হয়েছে। ৫০টি ব্রড গেজ কোচ আমদানির পর এরই মধ্যে কয়েক দফায় মিটার গেজ কোচও এসেছে। এসব কোচ দিয়ে এরই মধ্যে বনলতা, পঞ্চগড় ও বেনাপোল এক্সপ্রেস নামের তিনটি নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে। আমদানিকৃত কোচগুলো দিয়ে রংপুর এক্সপ্রেস চালুর পর বর্তমানে পূর্বাঞ্চল রেলেই নতুন ট্রেন সার্ভিস চালুর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে সিলেট (স্বল্প বিরতিসম্পন্ন), চট্টগ্রাম থেকে  ঢাকা (বিরতিহীন), চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরসহ নতুন আরও বেশ কয়েকটি রুটে ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post