কুলাউড়ায় একবছরে দুর্ঘটনায় ২১ জনের প্রাণহানি


এস আলম সুমন: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বিদায়ী (২০১৯ সালে) একবছরে সড়কপথ ও রেলপথে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নারী-পুরুষ এবং শিশুসহ প্রাণ ঝরলো ২১ জনের। এর মধ্যে উপজেলার বরমচাল স্টেশনে দেশের অন্যতম আলোচিত উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় নারীসহ ৪জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এছাড়া ট্রেনে কাটা পড়ে আরো ৪জনের মৃত্যু হয়। এদিকে মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়কে দুর্ঘটনায় ১৩জন নিহত হন।
তথ্যমতে, গত ২৩ জুন রোববার রাতে সিলেট-আখাউড়া রেলসেকশনের কুলাউড়া বরমচাল রেল স্টেশন সংলগ্ন বড়ছাড়া ব্রিজে ঢাকাগামী আন্ত:নগর উপবন এক্সপ্রেস সবচেয় বড় দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে ট্রেনের ৪টিবগি লাইনচুত্য হয়ে দুমড়েমুচড়ে খালে ও রেল লাইনের পাশে পড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ট্রেনযাত্রী কুলাউড়া পৌরশহরের আব্দুল বারীর স্ত্রী মনোয়ারা পারভীন (৪৫), সিলেট দক্ষিণ সুরমা উপজেলার আব্দুল্লাপুর গ্রামের আব্দুল বারীর মেয়ে ও  সিলেট নার্সিং ইনিস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ফাহমিদা ইয়াছমীন ইভা (২১), তাঁর সহপাঠি বাগেরহাটের আকরাম  মোল্লার মেয়ে সানজিদা আক্তার (২০) এবং হবিগঞ্জের বাহুবলের নুর হোসেনের ছেলে কাউছার আহমদ (২৬)। এছাড়া আহত হন শতাধিক ট্রেন যাত্রী। এতে বাংলাদেশ রেলের ব্যাপক আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এদিকে রেলপথে ট্রেনে ধাক্কায় এবং কাটা পড়ে ১৬ ফ্রেবুয়ারি মনু রেল ব্রিজ এলাকায় ২৪ বছর বয়সী অজ্ঞাত যুবক, ৬ অক্টোবর ২২ বছর বয়সী এক যুবতী, ২৩ অক্টোবর পলাশ মৃধা নামে এক চা শ্রমিক ও ২২ নভেম্বর ৭০ বছর বয়সী অজ্ঞাত বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।
২৪ জুন দুপুর ২টার দিকে মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহসড়কের কুলাউড়ার চাঁতলগাঁও এলাকায় বাস-মোটর সাইকেল সংঘর্ষে প্রাণ হারান মোটরসাইকেল আরোহী মুক্তিযোদ্ধা সোলেমান আলী (৬৫) ও তাঁর ভাতিজা আসাদ (১৮)। এতে বাসচালকসহ ১০জান যাত্রী গুরুতর আহত হন।
২০ আগস্ট মঙ্গলবার রাত ১০ টায় কুলাউড়ার নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মুখে সিএনজি অটোরিক্শা দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বাসিন্দা বেসরকারি ঔষুধ কোম্পানীর কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন রানা (৪০)। এসময় তাঁর স্ত্রী রে‌হানা বেগম (৩০) ও শিশু কন্যা ঐতী (৫) গুরুতর আহত হন।
১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহসড়কের উত্তর কুলাউড়ায় সিএনজি অটোরিক্শা-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে সোনালী পাল (৮) নামে এক শিশু ও নার্গিস আক্তার শামীমা (৪০) নামে দুজন যাত্রী মারা যান। এসময় আরো ৪ যাত্রী আহত হয়েছেন।
১৯ অক্টোবর সকালে কুলাউড়ায় মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহসড়কের ব্রাহ্মণবাজার লোহাইউনি এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছমিরুন নেছা (৬০) নামের এক বৃদ্ধা মারা যান।
১৯ অক্টোবর রাতে উপজেলার কালিটি চা বাগানে বিদ্যুতের খুঁটিবাহি ট্রলির ধাক্কায় জয় অলমিক (৮) নামে এক চা শ্রমিক শিশুর মৃত্যু হয়।
২ অক্টোবর বিকেলে উপজেলা ব্রাহ্মণবাজার-শমসেরনগর সড়কের পাল্লাকান্দি এলাকায় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় সিএনজি অটোরিকশা চালক আজগর আলীর (৪০) মৃত্যু হয়।
১৩ আগস্ট বিকেলে কাদিপুর-ছকাপন সড়কের ছকাপন এলাকায় দ্রুতগামী মোটরসাইকেলের ধাক্কায় রশিদ মিয়া (৫০) নামে এক পথচারী  মারা যান।
৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাজার মিশন এলাকায় দ্রুতগতির বাসচাপায় শহীদুর রহমান শহীদ (৪৬) নামে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হন।
৭ এপ্রিল উপজেলার উত্তর কুলাউড়ায় অটোটেম্পো-মোটসাইকেলের সংঘর্ষে এক অজ্ঞাত যুবকের মৃত্যু হয়।
৩১ জানুয়ারী সকাল ৭ টার দিকে শহরের কুলাউড়া পৌর শহরে উছলাপাড়ায় ট্রাক চাপায় খয়রুন নেছা (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
১৭ জানুয়ারী ৯টার উপজেলার কালিটি চা বাগানের নতুন লাইন এলাকায় ইটবোঝাই দ্রুতগামী একটি পিকআপ ভ্যান চাপায় লছমনিয়া রবিদাস নামে এক চা শ্রমিক নারীর মৃত্যু হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post