নয়ন বন্ডের বাড়িতে চুরি, পাওয়া যাচ্ছে না গুরুত্বপূর্ণ নথি


অনলাইন ডেস্ক: বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ডের বাসায় চুরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বরগুনা সরকারি কলেজঘেঁষা নয়ন বন্ডের বাড়িতে চুরি হয়।

চোরেরা নয়নের ঘরের তালা ভেঙে আলমিরা থেকে ৪১ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজপত্র নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন নয়নের মা সাহিদা বেগম। তিনি এ ব্যাপারে বরগুনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সাহিদা বেগমের দাবি, তিনি বৃহস্পতিবার বিকালে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সকালে প্রতিবেশীরা নয়নের ঘরের তালা ভাঙা দেখে তাকে খবর দেন। তিনি বাসায় এসে দরজার তালা ভাঙা দেখতে পান। পরে ঘরে প্রবেশ করে আসবাব এলোমেলো দেখে বাসায় থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার খুঁজতে থাকেন।

তিনি জানান, নয়নের কুলখানির জন্য বাসায় তিনি ৪১ হাজার টাকা রেখেছিলেন আলমিরায়। ঘরে প্রায় দশ ভরি স্বর্ণালংকার ছিল। তার বড় ছেলে মিরাজের স্ত্রীর কক্ষেও ১২ হাজার টাকা এবং পূত্রবধূ ও নাতনির স্বর্ণালঙ্কার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

নয়নের কিছু কাগজপত্র ও জমির দলিলপত্রও চুরি হয়েছে বলে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।

সরেজমিনের নয়নের বাসায় গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির আসবাব এলোমেলো। ঘরের তালা ভাঙা। পুলিশ তদন্ত করছে।

এ বিষয়ে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, নয়নের মা চুরির অভিযোগ করেছেন। তার বাসায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের পর আমরা অভিযোগ গ্রহণে ব্যবস্থা নেবে।

প্রসঙ্গত বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এ মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

এদিকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের দাবি, মিন্নির কাছ থেকে জোর করে জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। তিনি এ হত্যা মামলার এক নম্বর সাক্ষীকে (মিন্নি) আসামি করা ও রিমান্ডে নেয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে দায়ী করে আসছেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, ‘সবকিছুই শম্ভু বাবুর খেলা। তার ছেলে সুনাম দেবনাথকে রক্ষা করার জন্য আমার মেয়েকে বলি দেয়া হচ্ছে।’ শম্ভুর ছেলে সুনামের বিরুদ্ধে কিশোরের অভিযোগ, তার জন্যই এতদিন মিন্নির পক্ষে আদালতে দাঁড়াননি আইনজীবীরা। এ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহু সমালোচনার পর বরগুনা ও ঢাকার আইনজীবীদের একটি অংশ মিন্নির পক্ষে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post