সোনা নিয়ে আলোচনা অনর্থক: অর্থমন্ত্রী


অনলাইন ডেস্কঃ ভল্টে রক্ষিত সোনার পরিমাণ খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি কমিটি গঠন করলেও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সেখানে রাখা ৯৬৩ কেজি সোনার মধ্যে দূষিত মাত্র ৩ কেজি, এটা কোনো সমস্যা নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত সোনা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ভল্টে রাখা সোনা নিয়ে যেসব আলোচনা হচ্ছে, সেগুলো অনর্থক (ইউজলেস)।

সচিবালয়ে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিষয় সম্পর্কিত কার্য-অধিবেশন শেষে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে থাকা সোনা নিয়ে যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে, সেটিকে কীভাবে দেখছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ওই প্রতিবেদনের কোনো দরকার ছিল না।

এদিকে ভল্টে রক্ষিত সোনার পরিমাণ খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার একটি কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেমকে প্রধান করে ছয় সদস্যের এ কমিটি ভল্টে রক্ষিত সোনার ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ও নীতিমালা সময়োপযোগী করার সুপারিশ দেবে।

১৮ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক করে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল মান্নানও বলেছিলেন, ভল্টে রাখা সোনা নিয়ে অনিয়মের প্রতিবেদন দুনিয়া কাঁপানোভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠন করা কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে, বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক ভল্টে সোনা জমা দেওয়া ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সোনা গ্রহণের পদ্ধতি পর্যালোচনা। এ ছাড়া ভল্টে সোনা সংরক্ষণের ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ও নীতিমালা সময়োপযোগী করার সুপারিশ করবে এ কমিটি। ভল্টে রক্ষিত সোনা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এনবিআরের চেয়ারম্যান যে আধা সরকারি পত্র পাঠিয়েছেন, তা-ও খতিয়ে দেখবে গঠিত কমিটি। কমিটি এ ছাড়া ভল্টের সোনা নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের প্রতিবেদনের অসামঞ্জস্য খতিয়ে দেখবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল মান্নান ১৮ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআরের সদস্য কালীপদ হালদার ও শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সহিদুল ইসলামকে নিয়ে সচিবালয়ে যে বৈঠক করেন, সেখানেই তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম এ নিয়ে বলেন, ভল্টে রক্ষিত সোনা নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তার প্রকৃত অবস্থা জানতেই এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। সংস্থাটির প্রতিবেদনে উঠে আসে, ভল্টে জমা রাখা হয়েছিল ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের সোনার চাকতি ও আংটি, তা হয়ে আছে মিশ্র বা সংকর ধাতু। ছিল ২২ ক্যারেট সোনা, হয়ে গেছে ১৮ ক্যারেট।

দৈবচয়ন ভিত্তিতে নির্বাচন করা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত ৯৬৩ কেজি সোনা পরীক্ষা করে এ অনিয়ম ধরা পড়ে। অধিদপ্তর প্রতিবেদনটির পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে এনবিআরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিল।

Post a Comment

Previous Post Next Post