প্রবাস মানেই আরেকটি যুদ্ধের ময়দান

প্রবাস মানেই আরেকটি যুদ্ধের ময়দান


অনলাইন ডেস্কঃ বর্তমানে ছয়-সাত লাখ টাকা খরচ করে একজন তরতাজা যুবক সাধারণ শ্রমিক হিসেবে সিঙ্গাপুরে এসে যে পরিশ্রম করছেন, সে টাকা নিয়ে এর অর্ধেক পরিশ্রম যদি সে দেশে থাকতে করতেন, তা হলে আমার মনে হয় সিঙ্গাপুরের চেয়ে বেশি টাকা রোজগার করতে পারতেন।

কেননা অল্প মূলধন থাকলেও আমাদের দেশে যে কোনো ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করা যায়। সমস্যা হল আমরা বাঙালি। আমাদের সারা শরীরে লজ্জার আবরণ লাগানো। ছোটখাটো কিছু কাজ করতে গেলেই হিনমন্যতায় ভুগতে থাকি অথবা পরিচিত কাউকে ছোটখাটো কিছু করতে দেখলে তার প্রতি বিরূপ আচরণ প্রকাশ করি।

অনেক সময় প্রেস্টিস পাঙ্চার হয়ে যায়! কিন্তু আমরা যদি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে পারতাম, তা হলে সমাজে কিন্তু অনেক পরিবর্তন চলে আসত। দুর্নীতি কম হতো। চাঁদাবাজি কম হতো। মানুষের মন থেকে লোভলালসা কমে যেত।

কেননা শারীরিক পরিশ্রমের ফলে একজন মানুষের মনে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ঘটে। আমরা ধরেই নিয়েছি শিক্ষিত মানুষ দ্বারা যেনতেন কাজ করা সম্ভব নয়। তারা শুধু অফিস-আদালতে চেয়ার-টেবিলে বসে কাজ করবে। আর আমরাও বইয়ের ব্যাগ কাঁধে নিয়েই নিজেকে শিক্ষিত ভাবা শুরু করি।

মাধ্যমিক অথবা উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেই বর্তমানে বেশিরভাগ যুবক প্রবাসে শ্রম দিতে যাচ্ছেন। কিন্তু বিদেশে গিয়ে তারা কি কাজ করেন, সেটি কি আমাদের দেশের পরিবারের সদস্যারা জানেন? অবশ্য তারা জানার প্রয়োজনও বোধ করেন না।

কারণ ততদিনে তারা ঐকিক নিয়মের বেড়াজালে ডুবে যান। পাঠাতে কত টাকা খরচ হয়েছে, মাস গেলে কত টাকা আসবে কত টাকা সংসারে খরচ করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। অন্যদিকে প্রবাসের বলি হয়ে একটি তাজা মনের মৃত্যু ঘটে।

যেখান থেকে স্বাভাবিক জীবন নিয়ে আর ফিরে আসা সম্ভব হয় না। তাই আমাদের দেশের প্রতিটা যুবকের উচিত- প্রবাস নয়, দেশেই কর্ম নিয়ে সর্বাত্মক পরিশ্রম করে যাওয়া এবং পরিবারের উচিত কাউকে বিদেশ না পাঠিয়ে দেশে কিছু করার জন্য উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি তাকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করা।

Post a Comment

Previous Post Next Post