নওয়াজিশ আহমদ আদিবঃলাইলি মজনু প্রেম জগতের একটি পরিচিত নাম। লাইলি ও মজনুর অনবদ্য প্রেম কাহিনী দিয়ে অনেকে প্রেমের গভীরতার পরখ করতে চান। যুগে যুগে তাদের প্রেম উদাহারণ হিসেবে প্রেমিক প্রেমিকারা লালন করেন। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজে সেই গভীর প্রেমের ছাপ লালন করছে লাইলি-মজনু নামের এক প্রজাতির গাছ।
কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল খালেক’র উদ্যোগে বিদ্যাপীঠের ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষের সম্মুখে গাছটি রোপন করা হয়েছে।
‘গাছটি দেখতে অসম্ভব সুন্দর ও আকর্ষণীয়। দেখতে তেমন বড় না হলেও গাছের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য পাতা। পাতার উপরিভাগে রয়েছে কড়া সবুজ ও নিচের অংশে রয়েছে রক্তবর্ণের মতো লাল। এই গাছ সম্পর্কে জনসাধারণের ধারণা কম। তবে, উদ্ভিদ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা গাছটি সম্পর্কে ভাল জ্ঞান রাখেন। তাই গাছটি নিয়ে তাদের আগ্রহটাও অনেক বেশী।
লাইলি- মজনু গাছ সম্পর্কে জানা গেছে, এর নাম Chines croton, jungle fire plant. বৈজ্ঞানিক নাম excoecaria cochinchinensis। এটি Euphorbiaceae গোত্রের বৃক্ষ।
কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল খালেক জানান, গাছটি দুষ্প্রাপ্য। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচয় ও গবেষণা, সংরক্ষণ ও কলেজের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এটি রোপণ করা হয়েছে।
‘লাইলী মজনু’ নামকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই গাছের পাতার ওপরের অংশ সবুজ এবং নিচের অংশ লাল। সবুজ ও লাল অংশ ঠিক যেন ছায়ার মতো; এটিকে আমরা বন্ধন বলি। বন্ধন বা প্রেমের প্রতীক হিসেবে লাইলী মজনুর কথা বলা হয়। এ জন্য এর নামকরণ করা হয়েছে‘ লাইলি-মজনু’।
কলেজ এর এক শিক্ষার্থী মাহমুদা মিম বলেন, এমসি কলেজে ‘লাইলি-মজনু’ নামের গাছটির কথা বন্ধুদের কাছে শুনেছি। দেখার প্রবল ইচ্ছা ছিল।তাই গাছটি দেখতে আসলাম। গাছের পাতার এপিঠ-ওপিঠে দুই রং দেখে আমি সত্যি আশ্চর্য হয়েছি।এ রকম গাছ আমার চোখে পরে নি আগে কখনও।সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ প্রজাতির গাছ এখন বিলুপ্তির পথে ।একই পাতায় দুই রংয়ের সংমিশ্রণ নিবিড় এক সর্ম্পকের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠে এই গাছে। প্রেমের এমন প্রতীক বিশ্বের মধ্যে দুষ্প্রাপ্য হলেও আশ্চর্য্যজনকভাবে সিলেটের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ এমসি কলেজে রয়েছে এমন একটি বিপন্নপ্রায় গাছ।