অনলাইন ডেস্কঃ
মরুভূমির মাঝখানে বিশাল এক কাটা হাত। ধূ ধূ বালিয়াড়িতে মাথা উঁচু করে
দাঁড়িয়ে রয়েছে হাতের ৫টা আঙুল। দানবীয় এই হাতটি কার? কোথা থেকে এল? দানা
বেঁধেছে রহস্য। এটি চিলি'র আটাকামা মরুভূমি।
আচমকা
দেখলে মনে হতেই পারে কোনো ফিউচারিস্টিক সিনেমার সেটে ঢুকে পড়েছেন। কিন্তু
এই হাতটি একান্তভাবেই সত্য। চিলির এই আটাকামা মরুভূমি পৃথিবীর অন্যতম
শুকনো এলাকা হিসাবেই পরিচিত। এই মরুভূমির এক খাঁ খাঁ প্রান্তরে হঠাৎই চোখে
পড়বে এই দানবীয় হাত। মরুর বালি ফুঁড়ে উঠে আসা হাতটি যেন থামতে বলছে
কাউকে।
মানো
দেল দেসিয়ার্তো বা হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্ট আসলে ৩৬ ফুট উঁচু একটি
ভাস্কর্য। চিলির প্রখ্যাত ভাস্কর মারিও ইররাজাবাল ১৯৯২ সালে এটি তৈরি করেন।
দেখতে যতই বিদঘুটে হোক না কেন, কাউকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্য বা চমক তৈরির
অভিপ্রায় তাঁর ছিল না। সম্পূর্ণ দার্শনিক ভাবনা থেকে ইররাজাবাল এটি তৈরি
করেন।
মহাবিশ্বের
কাছে মানুষের ক্ষুদ্রতাকে বোঝাতেই এই হাতটি তৈরি করেন ভাস্কর। দিকচিহ্নহীন
মরুর প্রান্তরে এই হাতটি মানুষকে যেন জানান দেয় তার ক্ষণস্থায়িত্ব, জানিয়ে
দেয়, মহাপ্রকৃতির সামনে তার অসহায় অবস্থান। সেই সঙ্গে এটি যেন থামতে বলে
অন্যায়, একাকীত্ব, নির্যাতনকে। এটিকে দেখে মনে হতেই পারে, মরুর বালি দিয়েই
এটা তৈরি। কিন্তু আসলে এটি এক সুবিশাল লৌহকাঠামোর ওপরেই নির্মিত। ক্ষণে
ক্ষণে মরুভূমির আবহাওয়ার পরিবর্তন যাতে এই ভাস্কর্যটির কোনো ক্ষতি করতে না
পারে, তার ব্যবস্থাও নিয়েছিলেন শিল্পী ইররাজাবাল।
বছরের
যে কোনো সময় প্রচুর পর্যটক ভিড় জমান এখানে। আন্তোফোগোস্তা থেকে
প্যান-আমেরিকান হাইওয়ের পথে পড়ে এই ভাস্কর্য। লা মানো নামে আরেকটি হাত
তৈরি করেছিলেন ইররাজাবাল। সেটি মরুভূমির হাতের চাইতে ১০ বছরের বড়। এটি
রয়েছে চিলিরই পুস্তা দেল এন্তের সমুদ্রতটে।