সপ্তাহে ৪ দিন চলবে মৈত্রী এক্সপ্রেস

সপ্তাহে ৪ দিন চলবে মৈত্রী এক্সপ্রেস
অনলাইন ডেস্কঃ এ বছরের আগস্ট থেকে ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে চারদিন চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকাস্থ ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। দুই দেশের ইমিগ্রেশনে যাত্রী ভোগান্তিও কমবে বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশন আয়োজিত `বিয়ন্ড সামিট্রিজ’: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্প্রতি সফল ভারত সফর শীর্ষক সম্মেলনে এ কথা বলেন ভারতীয় হাইকমিশনার।

তিনি বলেন, মৈত্রী এক্সপ্রেস এখন পুরো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যাত্রী সেবা দিচ্ছে। শিগগিরই ঢাকা ও কলকাতা ভ্রমণের সময়সীমা কমিয়ে এটি নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করবে।

হর্ষ বর্ধন বলেন, খুলনা ও কলকাতার মধ্যে চলাচলের জন্য একটি নতুন মৈত্রী এক্সপ্রেস চালু করার কাজ চলছে, ইতোমধ্যে এটির পরীক্ষামূলক চলাচল সম্পন্ন হয়েছে। যাত্রী চলাচল আরও সহজ করার জন্য কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা এবং ঢাকা-শিলং-গৌহাটি ছাড়াও খুলনা ও কলকাতার মধ্যে একটি নতুন বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।

দীর্ঘ সাত বছর পর শেখ হাসিনার ভারত সফরের পর্যালোচনা করে তিনি বলেন , ২০১৫ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে দিল্লির প্রাণকেন্দ্রে একটি সড়কেরও নামকরণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর হিন্দি অনুবাদ উদ্বোধন করেন। উভয় দেশই বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে যৌথভাবে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছে যেটি ২০২০ সালে তার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুক্তি পাবে।

হর্ষ বর্ধন বলেন, মুক্তিযুদ্ধে প্রাণদানকারী ভারতীয় সৈন্যদের পরিবার পরিজনদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মান জানানো ছিল এক বিশেষ শুভেচ্ছার নিদর্শন যা ১২৫ কোটি ভারতীয় জনগণের হৃদয় স্পর্শ করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিদের জন্য অতিরিক্ত ১০ হাজার রুপি শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেন (বাংলাদেশি টাকায় ৪৬ কোটি টাকা )। প্রতিবছর ১শ মুক্তিযোদ্ধাকে ভারতীয় হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান, এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দীর্ঘ পাঁচ-বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা দেয়ার ঘোষণা দেন।

নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর ও শেখ হাসিনার ভারত সফরে সর্ব সাফুল্যে ৬০টি দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছে জানিয়ে হর্ষ বর্ধন বলেন, এটি কোনও ছোট অর্জন নয়। এটি আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অপার সম্ভাবনার কথা বলে। সম্পর্ক এগিয়ে নিতে উভয় পক্ষের বিপুল রাজনৈতিক আগ্রহ রয়েছে।

ভারত থেকে বাংলাদেশে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, বর্তমানে এবং এতে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করতে পারবো বলে আশা করি।

তিনি আরও বলেন, আমরা সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রায় ৫০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা ভাবছি। এর মধ্যে দুটি প্রধান বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে, আদানি পাওয়ার লিমিটেড এবং রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে মোট ৩শ ২০কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে যা বাংলাদেশে অতিরিক্ত দুই হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।

তিনি জানান, যশোর-খুলনা অঞ্চলের চাহিদামূলক কেন্দ্রগুলোতে এলএনজি সরবরাহ, ভারত এবং বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-খুলনা পাইপলাইনের মধ্যে গ্যাস গ্রিড আন্ত:সংযোগ স্থাপন, কুতুবদিয়ায় আইওসিএল-র একটি এলপিজি আমদানি টার্মিনাল স্থাপন এবং এলপিজি পাইপ লাইন নির্মাণের কথা ভাবা হচ্ছে। এছাড়া শিলিগুড়ি থেকে পার্বতীপুরে গ্যাস অয়েল সরবরাহের জন্য ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি মৈত্রী পাইপ লাইন স্থাপন করা হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post