শিল্পীদের এতো পাপী ভাববেন না- ফরিদা পারভীনের বিদায়ে কনকচাঁপা


নিউজ ডেস্কঃ দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর গত শনিবার রাতে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান দেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা। সেখানে তিনি প্রয়াত শিল্পীকে স্মরণ করে জানালেন গভীর শোক ও আক্ষেপ।

কনকচাঁপা বলেন, ‘ফরিদা পারভীন আপা লালনগীতে যে জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করেছিলেন, পুরো জায়গাটি তিনি শূন্য করে নিজের সঙ্গে নিয়ে গেলেন। যারা লালনগীতি শুনতাম, ফরিদা আপাকেই শুনতাম। মূলত যারা লালনের আখড়ায় গান করেন তাদের গান একরকম, আর ফরিদা আপার গান আরেকরকম।’

এই শিল্পী বলেন, ‘শুধু লালনের কথা বললে তাকে ছোট করা হবে। তার কণ্ঠ অনবদ্য, রয়েছে মায়া। এক কথায় বলতে গেলে, ফরিদা আপার কণ্ঠ তীরের মতো হৃদয় স্পর্শ করতো। ভরাট একটা সংগীতাঙ্গন দেখে আমি বড় হয়েছি; সেটাই ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছি। আমাদের মাথার ওপর যারা বটবৃক্ষের মতো ছিলেন, তাদের আমরা হারিয়ে ফেলছি। আমরা খুবই অসহায় হয়ে যাচ্ছি।’

তবে সাধারণ মানুষের প্রতি খানিকটা আক্ষেপও রাখেন কনকচাঁপা। বলেন, ‘সাধারণ মানুষ মনকে আনন্দিত করতে গান শোনেন। কিন্তু যখন কোনো শিল্পী মারা যান তখন পাপ-পুন্য, দোজখ-বেহেশত নিয়ে তারা অনেক কথা বলেন। সেই মন্তব্যগুলো দেখলে আমি ভীত হয়ে যাই, আমাদের খুব খারাপ লাগে।’

কনকচাঁপা অনুরোধ করেন, ‘যারা অনলাইন বা সামাজিকমাধ্যমে সক্রিয়, তাদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ- শিল্পীদের এতো পাপী ভাববেন না। আমাদের দেশে পাপ অনেক জায়গায় আছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আছে; কিন্তু আমরা শিল্পী, আমরা শুধু গান করি। আমাদের ঘুষ খাওয়ার জায়গা নেই, দুর্নীতির জায়গা নেই, মিথ্যাচার করার জায়গা নেই, আমাদের অন্যায় করার জায়গা নেই।’

উল্লেখ্য, সদ্য প্রয়াত ফরিদা পারভীন বেশকিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। চলতি বছরে তিন দফায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাকে।

সবশেষ গত ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ফরিদা পারভীনকে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে নেওয়ার পরই নিয়ে যাওয়া হয় আইসিইউতে। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টেও নেওয়া হয়; সেখান থেকে আর তাকে ফেরানো যায়নি। 

Post a Comment

Previous Post Next Post