সিলেটে ১৮ বছর পর হত্যা মামলার রায়, পলাতক ৬ আসামের যাবজ্জীবন


এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া: সিলেটের বালাগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ফখরুল ইসলাম হত্যা মামলায়  আসামিদের পলাতক রেখে ৬ জনের যাবজ্জীবন রায় দিয়েছে আদালত। এ মামলায়  অপর আসামি কাঠগড়ায় হাজির একজনের এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে। এছাড়া মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন ৫ জন।

  রোববার (৩ নভেম্বর) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক শায়লা শারমিন এ রায় ঘোষণা করেন।

পাশাপাশি রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।

এক বছরের দণ্ডপ্রাপ্তকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রমে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কবির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছর পর মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

 যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার জামালপুর গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে মাহমদ আলী উরফে কাছা (৪৫), একই এলাকার মৃত তৌফিক মিয়ার ছেলে ছাবের আহমদ (২৪), তার সহোদর জুবের আহমদ (২৬), মৃত রফিক মিয়ার ছেলে আফিক মিয়া (৩০), আখলিছের ছেলে সুহেল ও মৃত লালা মিয়ার ছেলে শামীম চৌধুরী (৩৫) এবং এক বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত ইন্তাজ (৪০) একই গ্রামের মৃত গণির ছেলে ইন্তাজ (৪০)।

রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাহমদ আলী উরফে কাছা আদালতের কাঠগড়ায় হাজির থাকলেও অপর ৬ আসামি পলাতক ছিলেন।

মামলা থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন- বালাগঞ্জের জামালপুর গ্রামের মনির আলীর ছেলে শাহিদ আলী, মৃত রফিক মিয়ার ছেলে মাফিক (২৬), একই এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে কাইয়ুম (২২), সালেহ আহমদের স্ত্রী আমারজান বিবি (২২) ও মৃত রইছ আলীর ছেলে তজম্মুল আলী (৪০)।

মামলা চলাকালে একই এলাকার মৃত জোয়াদ উল্লার ছেলে আখলিছ (৪৫) ও সিরাজ আলীর ছেলে মনির আলী (৩৫) মারা যান।

মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ২০০৬ সালের ১২ মে দুপুরে জামালপুর গ্রামের ইউছুফ আলীর ছেলে ফখরুল ইসলাম (৩৫) জুমার নামাজ আদায়ের জন্য বাড়ি হতে বের হন। মসজিদে যাওয়ার পথে আসামিরা শক্রতা ও মামলা-মোকদ্দমার জেরে পরিকল্পিতভাবে ফখরুলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ফখরুল ইসলাম আত্মরক্ষার্থে দৌঁড়ে খাইশাপাড়া মাদ্রাসার সামনে পৌঁছালে তাকে ঘেরাও করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আসামিরা কোপাতে থাকেন।

একপর্যায়ে ফখরুল ইসলাম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আসামিরা কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। তার চিৎকারে সহোদর আব্দুল নুর ও বোন দিলারা বেগম এগিয়ে গেলে আসামিরা ব্যাপক মারপিট করে তাদের গুরুতর আহত করে।

পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ফখরুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আব্দুর নুরসহ অন্যান্য আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই সিরাজুল ইসলাম উরফে সিরাতুল বাদী হয়ে ১৪ জনকে আসামি করে বালাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ২৮ জুলাই ১৪ জন আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০০৮ সালে ১ জুলাই থেকে আদালত এ মামলার বিচার শুরু হয়।

দীর্ঘ শুনানি ও ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার (৩ নভেম্বর) আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট গোলাম এহিয়া চৌধুরী সুহেল।

বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ  ফরিদ উদ্দিন আহমদ ভুইয়া  এ প্রতিবেদকে জানান,  ঘটনাটি অনেক আগের মামলাটি বালাগঞ্জ থানায় হয়েছিল ।  থানাপুলিশ সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগ পত্র   কোর্টে প্রেরণ করার কারণে   বাদীপক্ষ বিচার পেয়েছে। আদালতে একজন আসামী  হাজির ছিল। যাবজ্জীবন  সাজা  প্রাপ্ত  ৬ পলাতক.।চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড টি  বালাগঞ্জ থানার  দেওয়ানবাজার  ইউনিয়নের  জামালপুর গ্রামের  ঘটনা। হত্যা মামলাগুলো  চুল ছেড়া  বিশ্লেষণ করে  নিরাপত্তা তদন্ত করলে  বাদী পরিবার  ন্যায়বিচার পাবে  আইনের প্রতি  মানুষ শ্রদ্ধাশীল হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post