নিউজ ডেস্কঃ কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন চলছে। এর মধ্যে গত রোববার মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অধিকাংশ ক্যাম্পাসে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান ধরেছিল আন্দোলনকারীদের একাংশ। এনিয়ে সমালোচনা চলছে দেশজুড়ে। এই সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন লেখক ও শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
শিক্ষার্থীদের নিজেদের ‘রাজাকার’ দাবির পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর না যাওয়ার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুর পর ‘কোটা’ শিরোনামের নিবন্ধ লিখতে বসেছিলেন জনপ্রিয় এই লেখক। কিন্তু সেটা আর সমাপ্ত করা হয়নি। তবে তাঁর অসমাপ্ত সেই নিবন্ধের একটা অংশ নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভাইরাল ওই অংশে মুহম্মদ জাফর ইকবাল লেখেন: ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়, আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি মনে হয়, আর কোনো দিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইব না। ছাত্রছাত্রীদের দেখলেই মনে হবে, এরাই হয়তো সেই ‘রাজাকার’। আর যে কয়দিন বেঁচে আছি, আমি কোনো রাজাকারের মুখ দেখতে চাই না। একটাই তো জীবন, সেই জীবনে আবার কেন নতুন করে রাজাকারদের দেখতে হবে?’
এরপর অনেক জায়গায় জাফর ইকবালকে বর্জনের ডাক ওঠে। এই ডাকে অংশ নেয় অনলাইনে বই বিপণনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
তবে এর বাইরে কিছু প্রতিষ্ঠান মুহম্মদ জাফর ইকবালের বইয়ের প্রচারের ঘোষণা দিয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শুদ্ধস্বর ও শ্রাবণ প্রকাশনী।
মুক্তচিন্তার লেখকদের বই প্রকাশকারী প্রতিষ্ঠান ‘শুদ্ধস্বর’ ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখে: সারাদেশে বিজ্ঞানমুখী লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের সকল বই প্রচারে শুদ্ধস্বর সমসময় সদা প্রস্তুত। জয় বাঙলা।
মুক্তিচিন্তার লেখকদের বই প্রকাশকারী অপর এক প্রতিষ্ঠান ‘শ্রাবণ প্রকাশনী’ও ফেসবুকে একই ধরনের পোস্ট করে। শ্রাবণ প্রকাশনীর কর্ণধার রবীন আহসান ফেসবুকে লেখেন: আগামী শনিবার থেকে মুহম্মদ জাফর ইকবাল-এর সব বই কিনতে পারবেন শ্রাবণ প্রকাশনীর ফেসবুক পাতা থেকে। আমরা পাশে আছি এই লেখকের বই নিয়ে আপনাদের সাথে।
অপর এক পোস্টে রবীন আহসান রকমারি ডট কম নামের একটা প্রতিষ্ঠানের জাফর ইকবালের বই প্রত্যাহারের সমালোচনা করে লেখেন: 'রকমারি' জাফর ইকবাল স্যারের বই বিক্রি বন্ধের প্রতিবাদে শ্রাবণ প্রকাশনীর সকল বই রকমারি থেকে প্রত্যাহার করতে চাই। লেখকরা মতামত দিন।
তার এই পোস্টে অনেকে মতামত ব্যক্ত করেছেন। কয়েস আহমদ বকুল নামের একজন লেখেন, রকমারি যে পর্যায়ের জঙ্গি মানসিকতার বই প্রমোট করে, রকমারিকেই বাংলাদেশে চিরতরে বন্ধ করা উচিৎ।
মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল লেখেন, সঠিক সিদ্ধান্ত।
রহমান রোকন লেখেন, অবশ্যই প্রত্যাহার করা দরকার!
শহিদুল হাসান খোকন নামের একজন লেখেন, সঠিক সিদ্ধান্ত। আমি রকমারি থেকে আর বই কিনব না।