নিউজ ডেস্কঃ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ব্যবসায় প্রশাসন (বিবিএ) বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থীকে পরিচয় পর্বের নামে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ওই রাতকে ‘জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ রাত’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ সময় তাকে ধর্ষণের দৃশ্য করে দেখানো, যৌনকর্মী সেজে সঙ্গী ডাকার মতো কাজ করতে বাধ্য করেন।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা সবাই ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতার অনুসারী বলে জানা গেছে। বহিষ্কৃতরা হলেন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. খলিলুর রহমানের অনুসারী আল আমিন, পাপন মিয়া, রিয়াজ হোসেন, ক্যাম্পাস ছাত্রলীগ নেতা সুমন মিয়ার অনুসারী আপন মিয়া ও রসায়ন বিভাগের সভাপতি মেহেদী হাসান স্বাধীনের অনুসারী আশিক হোসেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বহিষ্কার আদেশ কার্যকর থাকাবস্থায় তারা ক্যাম্পাস ও হলে অবস্থান করতে পারবেন না।
র্যাগিংয়ের বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, র্যাগিংয়ের সময় শাহপরান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে থাকা ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সবাইকে ডেকে নিয়ে আসেন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আশিক হোসেন। এ সময় পরিচয় হওয়ার কথা বলে নানাভাবে তাদেরকে হেনস্থা করেন সিনিয়ররা। তাদের মধ্যে যারা অধিক র্যাগ দেন তাদের নামে অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।
সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে সৈয়দ মুজতবা আলী হলের ১১১ নম্বর কক্ষে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ১৬ জন শিক্ষার্থীর পরিচয় পর্ব চলে। এসময় র্যাগিংয়ের শিকার হওয়া এক শিক্ষার্থী গত বুধবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্তদের সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে ওই কক্ষে পরিচয় হওয়ার কথা জানতেন না বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগ নেতা মো. ফারহান ও স্বাধীন।
তিনি আরো বলেন, ‘ভাইয়েরা আমাদের মধ্য থেকে একজন যেন অন্যজনকে ধর্ষণ করে- এমন দৃশ্য দেখাতে বাধ্য করেন। এছাড়া, যৌনকর্মী সেজে তার দেহ প্রদর্শন ও খরিদদার ধরার দৃশ্য প্রদর্শন করান। তৃতীয় লিঙ্গের ট্রেনে টাকা নেয়ার দৃশ্য, কয়েকটি যৌন উত্তেজক গানের উত্তেজক দৃশ্য দেখানোসহ পরিচয় চেয়ে বিভিন্ন শব্দকে পরিবর্তন করে যৌনতা সম্পর্কিত শব্দ যোগ করে বলতে বলেন। বলতে অস্বীকার করলে শারীরিক নির্যাতনের হুমকির পাশাপাশি অনবরত ধমক দিয়ে বলতে বাধ্য করছিলেন।’