অবশেষে চালু হচ্ছে কুলাউড়ার তিন রেল স্টেশন


নিউজ ডেস্কঃ কুলাউড়ায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা তিনটি রেল স্টেশন চালুর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের কুলাউড়ার টিলাগাঁও, লংলা ও ভাটেরা স্টেশনসহ দেশের বিভিন্ন সেকশনে বন্ধ থাকা ৪৮ স্টেশন ফের পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগীয় প্রকৌশলী (ঢাকা) মো. সিরাজ জান্নাত স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ওই পত্র সূত্রে জানা যায়, জনবল এবং অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে দেশের বিভিন্ন রেলপথে থাকা ৫৪টি স্টেশন আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে গার্ড, স্টেশন মাস্টার ও পয়েন্টসম্যান নতুন নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এ জন্য যাত্রীদের সুবিধা ও ট্রেন পরিচালনার গুরুত্বের ভিত্তিতে বন্ধ থাকা ৪৮টি স্টেশন পুনরায় চালুর সকল ব্যবস্থা নিতে এক পত্রের মাধ্যমে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। পত্রে আরো বলা হয় চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে এসব স্টেশন চালুর কাজ সম্পন্ন করতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের কুলাউড়ায় জনবল সংকট দেখিয়ে ২০০৯ সালে ভাটেরা ও টিলাগাঁও স্টেশনটি পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করে রেল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া লংলা রেল স্টেশনটিও লোকবল সংকটে গত এক দশক ধরে প্রায়ই সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হতো। সর্বশেষ গত ৭ মাস ধরে সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে স্টেশনটি। এসব স্টেশনের লোকাল ট্রেনের যাত্রাবিরতির পাশপাশি এ রেলপথে চলাচলকারী আন্তনগর ট্রেনগুলোর ক্রসিং দেওয়া হতো। এসব স্টেশন বন্ধ হওয়ার পর থেকে লোকাল ট্রেনের যাত্রাবিরতি ও ট্রেনের ক্রসিং কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে প্রতিনিয়ত যাত্রা বিলম্বতে পড়তে হয় আন্ত:নগর ট্রেনগুলোকে। এ স্টেশনগুলোর মাধ্যমে চলাচলকরী উপজেলার রাউৎগাঁও, হাজীপুর, টিলাগাঁও, শরিফপুর, বরমচাল, ভাটেরা লক্ষাধিক মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। লোকাল ও মেইল ট্রেনে তারা কুলাউড়া, শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ ও সিলেটে যাতায়াত করত। একই সঙ্গে পণ্য পরিবহনে বাণিজ্যিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এদিকে স্টেশনগুলো পুনরায় চালুর জন্য দীর্ঘদিন ধরে একাধিকবার বিভিন্ন সময় ট্রেন আটকিয়ে আন্দোলন ও মানববন্ধন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত থাকায় ভাটেরা ও টিলাগাঁও স্টেশনের ভবন জরাজীর্ণ ও ব্যবহৃত মূল্যবান সরঞ্জামাদি চুরি এবং নষ্ট হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে রেলের কুলাউড়া কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জুয়েল হোসাইন মুঠোফোনে বলেন, আমরা ইতিমধ্যে স্টেশনের স্থাপনা ও অবকাঠামো সংস্কার কাজের প্রক্রিয়া শুরু করেছি আর লোকো লাইনের কাজ চলমান আছে। খুব দ্রুত কাজগুলো শেষ করা হবে।

রেলের চীফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (পূর্ব) মোঃ শহীদুল ইসলামের পক্ষে ওই পত্রে স্বাক্ষর করা রেলের এসিওপিএস (পি, পূর্ব) কামাল আখতার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, স্টেশনগুলো চালুর জন্য ইতোমধ্যে মাস্টার নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে তাদের প্রশিক্ষণ চলছে। স্টেশন পুরোপুরি চালু করতে প্রথমত স্টেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সিগন্যাল ও লাইন সংস্কার করা খুবই প্রয়োজন। এই কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য রেলের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। যত দ্রুত সংস্কার কাজ করা হবে তত দ্রুত আমরা স্টেশনগুলো চালু করতে পারবো। এতে যাত্রী উঠানামা শুরু হবে। আবারও ব্যস্ত হয়ে পড়বে স্টেশনগুলো। এতে রেলের সম্পদ রক্ষা হবে।








 

Post a Comment

Previous Post Next Post