বিস্কুটের প্যাকেটের সূত্র ধরে খুনি শনাক্ত, মেয়ে হত্যায় জড়িত বাবার স্বীকারোক্তি



নিউজ ডেস্কঃ কুলাউড়ায় গত মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকা থেকে পপি সরকার (১১) নামের এক শিশুর গলায় ওড়না পেঁচানো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

ঘটনার দিন রাতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে থানায় পপির বাবা দিগিন্দ নম বাদী হয়ে সুরমান আলীসহ আরও তিনজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ওইদিন রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে সুরমান আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পরদিন বুধবার সকালে সুরমানকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

তবে হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনার মোড় এখন পাল্টে গেছে। রবিবার (২ অক্টোবর) সকালে পুলিশ এক সংবাদ সম্মেলনে জানায় পপিকে তার বাবা হত্যা করেছে! পপির বাবা আদালতেও হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে কুলাউড়া থানার ওসি মো. আব্দুছ ছালেক জানান, পপির বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান ঘটনার দিন রাতে পপি বিছানা থেকে পড়ে গেছে- এমন শব্দ পেয়ে তার ঘুম ভেঙে যায়। পরে ঘুম থেকে উঠে তিনি তার মেয়েকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি স্থানে নিয়ে রেখে দেয়।

পরদিন মঙ্গলবার সকালে পপির বাবা দিগিন্দ বাড়ির মালিক কামাল মাস্টার, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও এলাকার লোকজনদের বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে গিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।

ওসি আরও জানান, নিজের মেয়েকে হত্যার পর প্রতিবেশী সুরমান মিয়াসহ কয়েকজনকে ফাঁসানোর জন্য পূর্বপরিকল্পিতভাবে দিগিন্দ তার মেয়ে পপি সরকারকে হত্যা করে থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে।

মামলায় দিগিন্দ বিস্কিট খাওয়ানোর প্রলোভনের অভিযোগ এনে প্রতিপক্ষে ফাঁসাতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশি তদন্তে সে নিজে বাড়ির পাশের দোকান থেকে বিস্কিট কেনার প্রমাণ পাওয়া যায়।

শনিবার বিকেলে এ ঘটনায় পপির বাবা আদালতে হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি দিলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. হারুনুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, দিগিন্দ নম হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার পাঞ্জারাই এলাকার বাসিন্দা। তারা সুলতানপুর এলাকায় মৃত আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। 

Post a Comment

Previous Post Next Post