সরকার ঘাবড়ে গিয়ে কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করছে : মির্জা ফখরুল



নিউজ ডেস্কঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, হাসিনার সরকার ঘাবড়ে গেছে। ঘাবড়ে গিয়ে তারা সরকারি কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করছে। কিন্তু এভাবে শেষ রক্ষা হবে না।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সারা দেশে দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, তাদের নামে মামলা, নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও জামিন বাতিলের প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দেশ শাসনের আর কোনো অধিকার নেই। অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। ভালোয় ভালোয় সরে পড়ুন। নইলে দেশের জনগণ জানে কীভাবে সরাতে হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের চলমান আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এই সরকারের গণবিরোধী কার্যক্রম বন্ধ করা। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা আর তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আমাদের আন্দোলন। সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন। আমরা বলতে চাই, আমাদের যেসব সহযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন তাদের রক্ত ও আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। 

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অবিলম্বে মিথ্যা মামলা ও গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। ইতিহাস ভুলে যাবেন না। দেশের মানুষ কাউকে ক্ষমা করেনি। দেয়ালের লিখন পড়ুন। সাধারণ মানুষের মনের ভাষা বুঝতে শিখুন। 

তিনি আরও বলেন, সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। তারা মানুষের টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করছে। আর প্রধানমন্ত্রী বলছেন বিদ্যুৎ আছে, পাবেন। কিন্তু আমাদের তো চলে না। দিনে পাঁচ ছয়বার লোডশেডিং হয়। মানুষ অতিষ্ঠ। দেশের কলকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কলকারখানা বন্ধ হলে লাখ লাখ কর্মী বেকার হবেন।

ফখরুল বলেন, আজ তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের অবসরে পাঠাচ্ছে। খবরের কাগজে বেরিয়েছে, এই যে ঋণ নিয়ে কাজ করে, বিদেশের কাছ থেকে ধার নিয়ে, এখন আর ঋণ শোধ করতে পারছে না। এর ফলে কী হবে? সব বিদেশি সংস্থা ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দেবে। রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় চলে যাচ্ছে। খুব ঘাবড়ে গেছে, আজকে হাসিনা এত ঘাবড়ে গেছে যে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে বিদায় দেওয়া শুরু করেছে।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস সালাম বলেন, খেলা শুরু হয়ে গেছে, আওয়ামী লীগ হাবুডুবু খাচ্ছে। আওয়ামী লীগ লেজ গুটিয়ে দৌড় দিচ্ছে। তারেক রহমান দেশে এলে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আসন্ন দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচতে হলে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পাঁচজনকে হত্যা করেছেন। প্রয়োজনে বুক পেতে দেব। কিন্তু আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। যারা সমাবেশে যাওয়ার আগেই বাস চলাচল বন্ধ করে দেন, তাদের কালো তালিকা করা হবে। আমরা অনেক সহ্য করেছি, আর নয়। আমরা যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে আওয়ামী লীগের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।

ঢাকা দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের সদস্য সচিব মো. আমিনুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভুইয়াঁ, জয়নুল আবদীন ফারুক, মীর সরাফত আলী সপু, নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, কৃষকদলের হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী ও রাজীব আহসান, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের মো. আব্দুর রহিম, শ্রমিক দলের হুমায়ূন কবির খান, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

Post a Comment

Previous Post Next Post