বিদেশ যাওয়া হলো না রাকিব ও হিসামের



নিউজ ডেস্কঃ কেউ ছিলেন চলতি বছরে মাধ্যমিক শ্রেণির পরীক্ষার্থী, কেউ ছিলেন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। আবার কেউবা ছিলেন এইচএসসি পাশ করা শিক্ষার্থী। তারা সবাই জীবন গড়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। উচ্চ শিক্ষায় কেউ কেউ বিদেশে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের স্বপ্ন, স্বপ্নই রয়ে গেল। শুক্রবার চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলায় ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের যাত্রী নিহত হন। তাদের মধ্যে চলতি বছরে এইচএসসি পাশ করা মোস্তাফা মাসুদ রাকিব (১৯) এবং এসএসসি পরীক্ষার্থী মোসহাব আহমেদ হিসাম (১৬) রয়েছেন।

হাটহাজারী উপজেলার চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের খন্দকিয়া গ্রামের যুগিরহাট এলাকার ‘আর অ্যান্ড জে কোচিং’ সেন্টারের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে আনন্দ ভ্রমণের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ আনন্দভ্রমণে গিয়ে মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হন। নিহত রাকিবের বাবা মোতাহার হোসেন জানান, এ শোক আমরা কীভাবে সইব। এ কথা বলতে বলতে তার চোখ ভিজে যাচ্ছিল। তিনি জানান, তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে রাকিব নগরীর একটি সরকারি কলেজ থেকে চলতি বছরে এইচএসসি পাশ করে। এসএসসি ও এইচএসসিতে রাকিব গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছিল। লন্ডনে রাকিবকে পাঠিয়ে দিতে তার চাচা বলেছেন। ওই দেশে গিয়ে সে পড়ালেখা করবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ভর্তির কার্যক্রম প্রায় শেষপর্যায়ে ছিল। দুই মাস পর তার চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু একেবারেই চলে গেল ছেলেটা। হাটহাজারী উপজেলার নজুমিয়া হাট এলাকায় মোতাহের হোসেনের বাড়ি। রাকিব থাকত তার নানাবাড়ি খন্দকিয়া গ্রামে। সেখানে চার বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছিল কোচিং সেন্টার ‘আর অ্যান্ড জে কোচিং’। একই উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের কেএস নজু মিয়া হাইস্কুল থেকে চলতি বছরে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল হিসাম। তার মা, ভাই ও বোন সবাই কানাডায় থাকেন। পরীক্ষা দিয়ে তার কানাডায় চলে যাওয়ার কথা ছিল। এলাকার বজল আহমেদ কন্ডাক্টর বাড়ির মোজাফফর আহমেদের ছেলে হিসাম তার ছোট চাচা আকবর হোসেন মানিকের কাছে বড় হয়েছেন। বুকফাটা আর্তনাদ করে মানিক বলেন, হিসামকে এভাবে কাফনে দেখার আগে কেন আমার মৃত্যু হলো না। তার মাকে এখন আমি কি জবাব দেব।

Post a Comment

Previous Post Next Post