স্টাফ রিপোর্টারঃ হাকালুকি হাওরের কুলাউড়া উপজেলার প্রায় ৩টি ইউনিয়নের বোরো চাষাবাদের পানির উৎস বড়ছড়া থেকে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে স্থানীয় এলাকাবাসী।
জানা গেছে, দেশের প্রসিদ্ধ সিলিকা বালুর উপর দিয়ে বয়ে চলছে বড়ছড়ার পানি। এই ছড়ার উপর দিয়ে প্রবাহিত পানির নাব্যতায় বরমচাল, ভূকশিমইল, ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষ বোরো ফসল উৎপাদন করতে পারছেন নিশ্চিন্তে। ছড়ার পাশ ঘেঁষা একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি কলেজ, মসজিদ, মন্দিরসহ কয়েক হাজার ঘরবাড়ি অবস্থিত। শুকনো মৌসুমে চাষাবাদের সুবিধার জন্য সরকার প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি স্লুইস গেইট নির্মাণ করে। দীর্ঘদিন স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে বালু উত্তোলন বন্ধ ছিলো। সম্প্রতি সময়ে এই বড়ছড়ার বালুমহাল লিজ প্রদান করা হলে স্থানীয়দের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের দাবি, এই ছড়া থেকে বালু উত্তোলন হলে আশেপাশের ঘরবাড়ি, স্কুল, কলেজ ধ্বসে যাবে। তাই এখান থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করা উচিৎ।
এই লিজ প্রত্যাহারের দাবিতে কুলাউড়া উপজেলার বরমচালে ২০ জুন রবিবার বড়ছড়ার একটি সেতুর উপর অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ। সমাবেশে ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ লিজ বাতিলের দাবি জানিয়ে বক্তব্য দেন।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রউফ চৌধুরী তুতির সভাপতিত্বে ও কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বরমচাল ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আহমদ খান সুইট, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজ খান, ইউনিয়ন জাতীয় পার্টি নেতা মুফিজ খান, বিএনপি নেতা জয়নুল ইসলাম জুনেদ, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোক্তাদির মুক্তার, বরমচাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলাম, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ, আওয়ামীলীগ নেতা জামাল হোসেন, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন খসরু, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান রাব্বি মিরাজ, ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম রাজিব, সাহানুর আহমদ সাদন, শামীম আহমদ, তরুণ সংগঠক খালেদ আহমদ, রাহাত হাসনাত প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বড়ছড়া থেকে বালু উত্তোলন করলে রেলব্রিজ, সওজ ব্রিজ, একটি স্লুইস গেইট, ‘বরমচাল আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ এবং ‘বরমচাল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ’, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবালয় হুমকির মুখে পড়বে। ঘরবাড়ি, রাস্তা ধ্বসে যাবে। তাছাড়া পানির স্তর নিচে নেমে গেলে হাজার হাজার একর জমিতে বোরোধান আবাদ বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে কৃষকরা বোরো ধান ছাড়াও শীতকালিন রবিশস্য উৎপাদনে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হবে।
মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ ছাড়াও লিজ বাতিলের দাবিতে এলাকাবাসী মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেন। আবেদনে ইউনিয়নবাসীর বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে বড়ছড়া বালু মহালটি লিজ বাতিল করার আহ্বান জানান।