যেভাবে গ্রেপ্তার হলেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক

 



অনলাইন ডেস্কঃ রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় করা ভাঙচুরের মামলায় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার পর কয়েকটি গাড়িতে আসা দাঙ্গা পুলিশ মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের আশপাশে অবস্থান নেয়। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদাপোশাকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মাদ্রাসার গলিতে একটি পাজেরো গাড়ি নিয়ে ঢোকেন।

এর কিছুক্ষণ পরেই মামুনুল হককে নিয়ে তারা দ্রুত বের হয়ে যান। গাড়ি বের হওয়ার সময় মামুনুল হককে দেখা গেছে পেছনের সিটে দুজনের মাঝে বসা।



মামুনুলকে নিয়ে যাওয়ার সময় মাদ্রাসার কিছু শিক্ষার্থী গাড়ির পিছু পিছু মিছিল নিয়ে মূল রাস্তায় ওঠার চেষ্টা করেন। তবে পুলিশের বাধায় শেষ পর্যন্ত তারা ফিরে যান।

তাকে গ্রেপ্তারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদ জানান, মোহাম্মদপুর থানায় ২০২০ সালে করা মামলায় সোমবার মামুনুলকে আদালতে পাঠানো হবে। ডিএমপির পল্টন, মতিঝিল থানায় মামুনুলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সেসব মামলাতেও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

মোহাম্মদপুরের মামলার বিষয়ে ডিসি হারুন বলেন, ‘আমরা এই মামলাটি তদন্ত করছিলাম। তদন্তে মামুনুল হকের সম্পৃক্ততা পেয়েছি। সে জন্য তাকে গ্রেপ্তার করেছি।’

মামুনুলকে গ্রেপ্তারে বাধা এসেছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো বাধা আমরা পাইনি। তাকে পুলিশ আগে থেকেই নজরদারিতে রেখেছিল।’

মামুনুলকে রোববার মাদ্রাসা থেকে বের করে আনতে সময় লাগার কারণ ব্যাখ্যা করে ডিসি হারুন বলেন, ‘সে ছিল অনেক উপরে। আমরা কথা বলে তাকে নিয়ে এসেছি, যে কারণে একটু সময় লাগছে।’

মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মামুনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি শিক্ষকতা করেন ওই মাদ্রাসায়।

গ্রেপ্তারের পর তাকে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় সাম্প্রতিক সহিংসতা ও রিসোর্টকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা হয় মামুনুলের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর তাণ্ডবসহ তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা আছে।

এদিকে, মামুনুল হককে গ্রেপ্তার কেন্দ্র করে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে মাদ্রাসার পরিবেশ ছিল অনেকটাই শান্ত।

মামুনুলকে গ্রেপ্তারের সময় মাদ্রাসার কিছু শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানের সামনের গলিতে কয়েক মিনিট বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। তবে পরিস্থিতি ছিল পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।



আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, মামুনুল রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। এ জন্যই পরিকল্পিতভাবে একের পর এক সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছিলেন তিনি।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ রিসোর্ট-কাণ্ডের পর থেকে মামুনুল হককে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তিনি শিক্ষকতা করেন মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসায়।

৩ এপ্রিল রিসোর্ট-কাণ্ডের পরদিন ওই মাদ্রাসায় হেফাজত নেতারা জরুরি বৈঠক করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মামুনুল হক। এরপর আর তাকে সাংগঠনিক কোনো কর্মকাণ্ডেও দেখা যায়নি।

Post a Comment

Previous Post Next Post