সেবা ফাউন্ডেশনে জন্ম নেয়া বন্যপ্রাণী অবমুক্ত ও বৃক্ষরোপণ

 



নিউজ ডেস্কঃ শ্রীমঙ্গলে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে জন্ম নেয়া একটি মেছো বাঘ প্রথমবারের মতো ফিরলো তার আপন ভুবনে।

এর আগে বিকেল ৪টায় প্রথম সে গাড়িতে চড়ে। সাড়ে ৪টার দিকে গাড়িতে করে বনে প্রবেশ করে। তারপর সেখানে নামানো হয় তার খাঁচা। বনে খাচা নামানোর পর বাঘটির নিজের আবাসন জঙ্গল হলেও তার কাছে এটি অপরিচিত। কিছুক্ষনের মধ্যেই তাকে অবমুক্ত করার জন্য লাউয়াছড়া বনে ছুঠে আসেন খোদ মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।

এর আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিতেশ রঞ্জন দেব, শ্রীমঙ্গল সহকারী কমশিনার ভুমি মো: নেছার উদ্দিন, সহকারী বন সংরক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিকি, রেঞ্জ অফিসার আব্দুল মোতালিব ও সজল দেব প্রমূখ।

তাকে অবমুক্ত করতে তার আরো বেশ কয়েক প্রজাতির বন্যসঙ্গিও ছিলো। তাদের মধ্যে ছিলো একটি অজগর, একটি লজ্জাবতী বানর, একটি সংকনী সাপ ও একটি গন্ধগকুলসহ আরো বেশ কয়েকটি বন্যপ্রাণী।

প্রথমে অন্যসব প্রাণীকে বনে অবমুক্ত করার সাথে সাথেই তারা বনের পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিলেও সর্বশেষে অবমুক্ত করা মেছো বাঘটি কিছুক্ষন খাচার সামনে দাড়িয়ে রইল। হয়তো তার কাছে মনে হচ্ছিল এটি অন্যকোন পৃথিবী। এ সময় অবমুক্ত করা অতিথিদের মধ্যেও অনেকটা দুশ্চিন্তার ছাপ পড়ে। কিন্তু কিছুক্ষন পর সে মিটি মিটি পায়ে যখন হাটা শুরু করে তখন সকলের দৃষ্টি তার দিকে আরো প্রখর হয়। এক সময় সে রাস্তা দিয়ে হেটে হেঁটে জঙ্গলাকৃত পাহাড়ের দিকে উঠতে থাকে। সেখানেও মিটি মিটি পায়ে। এসময় কেউ তার ছবি তুলতে গেলে সে একটু দৌড়ে গিয়ে একটি গাছের গোড়ায় ঝোঁপের মধ্যে নিরব আশ্রয় নেয়। তখন সকলের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এই ভেবে যে বাঘটি হয়তো নিজভুমে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছে।

বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব জানান, বছর দেড়েক আগে বাঘটির মাকে দিনারপুর এলাকা থেকে আহতবস্থায় উদ্বার করা হয়। সেবা ফাউন্ডেশনে রেখে সুস্থ করার সময় বাঘটি দুটি বাচ্চা দেয়। এটি তাদের একটি।

বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিতেশ রঞ্জন দেব জানান, তার সেবা ফাউন্ডেশনে অনেক প্রাণী। কিছু প্রাণী বনের পরিবেশে অমানান। তাছাড়া আগের বন এখন নেই। বনে এখন মানুষের বিচরণ। বনে পানি ও পশু খাদ্যের অভাব রয়েছে। তাই সব প্রাণী সব সময় অবমুক্ত করতে পারেন না। আবার এদের জন্য সেবা ফাউন্ডেশনে প্রচুর খাদ্যেরও যোগান দিতে তাকে হিমসীম খেতে হয়। তাই অবমুক্ত না করেও উপায়নেই। তাই মঙ্গলবার তিনি বাঘসহ অনান্য প্রাণীগুলো অবমুক্ত করেন। তিনি জানান, তাঁর সেবা ফাউন্ডেশনে জন্ম নেয়া আরো কিছু প্রাণী আছে সেগুলোও তিনি আগামীতে অবমুক্ত করবেন।

বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসে বন বিভাগের সহযোগীতায় লোকালয়ে মানুষের হাতে আহতবস্থায় ধরা পড়া ও সেবা ফাউন্ডেশনে জন্ম নেয়া এ প্রাণীগুলো অবমুক্ত করার পর তিনি অতিথিদের নিয়ে বনের ভিতরে পাখির খাদ্যের জন্য একটি বটবৃক্ষও রোপন করনে।

Post a Comment

Previous Post Next Post