পিছিয়ে পড়েও বলিভিয়ায় জিতল আর্জেন্টিনা

 


স্পোর্টস ডেস্ক: শুরুতে যেন হাঁটছিলেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। ‘অফ দা বল’-এ ছিল না তেমন কোনো মুভমেন্ট। প্রথম ৩০ মিনিটে রাজত্ব করে বলিভিয়া, এগিয়েও যায় তারা। শক্তি বাঁচিয়ে রেখে খেলা লিওনেল স্কালোনির দল ঠিক সময়ে মুঠোয় নেয় লাগাম। পিছিয়ে পড়েও তুলে নেয় দারুণ এক জয়।

সমুদ্রপৃষ্ট থেকে তিন হাজার ৬০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত এরনান্দো সাইলসে মঙ্গলবার ২-১ গোলে জিতেছে আর্জেন্টিনা। ২০০৫ সালের পর এই প্রথম বলিভিয়ায় জিতল তারা।

শুরুতে বলিভিয়াকে এগিয়ে নেন মার্সেলো মোরেনো মার্তিন্স। প্রথমার্ধে লাউতারো মার্তিনেস সমতা ফেরানোর পর জয়সূচক গোলটি করেন হোয়াকিন কোররেয়া।

দেশের মাটিতে একুয়েডরকে হারিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে শুভসূচনা করা দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা পেল টানা দ্বিতীয় জয়। ব্রাজিলের বিপক্ষে হার দিয়ে অভিযান শুরু করা বলিভিয়া অনেক প্রস্তুতি নিয়েও হারল নিজেদের দুর্গে।

লা পাস যেন আর্জেন্টিনার দুঃস্বপ্নের ভেন্যু। এই মাঠে হার এড়াতে পারলেই ‘খুশি’ থাকার আভাস দিয়েছিল দলটি। মনের বাঘ এবার কাবু করতে পারেনি তাদের। দারুণ কৌশলী ফুটবলে পার হয়েছে অনেক বড় বাধা।

সপ্তম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো বলিভিয়া। সাউল তরেসের ক্রসে খুব কাছ থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মার্সেলো মোরেনো মার্তিন্স। লিওনেল মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে দশম মিনিটে ৩৫ গজ দূর থেকে শট নেন লেয়ান্দ্রো পারদেস। খুব একটা দূর দিয়ে যায়নি বল।

২৪তম মিনিটে এগিয়ে যায় বলিভিয়া। আলেহান্দ্রো সাউলের চমৎকার ক্রসে জাল খুঁজে নেন মার্সেলো মার্তিন্স।

সাত মিনিট পর বাড়তে পারতো ব্যবধান। মার্সেলো মার্তিন্সের ক্রসে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি কার্লোস সাউসেদো।

এরপর যেন বদলে যায় আর্জেন্টিনা। গা ঝাড়া দিয়ে খেলার গতি বাড়ায় সফরকারীরা। ৩৬তম মিনিটে লুকাস ওকাম্পোসের শট একজনের গায়ে লেগে দিক পাল্টে একটুর জন্য জালে যায়নি। চার মিনিট পর পারদেসের শট ব্যর্থ হয় পোস্টে লেগে।

বলিভিয়ার রক্ষণকে চেপে ধরা আর্জেন্টিনা সৌভাগ্যের গোলে প্রথমার্ধের শেষ সময়ে সমতা ফেরায়। বাঁ দিক থেকে মার্তিনেস খুঁজে নিতে চেয়েছিলেন ওকাম্পোসকে। মাঝপথে ঠেকিয়ে দেন কারাসকো। তার শট সফরকারী স্ট্রাইকারের পায়ে লেগে খুঁজে নেয় ঠিকানা।

আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে জমে ওঠে ম্যাচ। দুই দলই দূরপাল্লার শটে জাল খুঁজে নেওয়ার চেষ্টায় ছিল। ৬০তম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে ফ্রি-কিক কাজে লাগাতে পারেননি মেসি।

সাত মিনিট পর এসেকিয়েল পালাসিওসের রক্ষণচেরা এক পাসে সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান মার্তিনেস। সামনে ছিলেন কেবল বলিভিয়ার গোলরক্ষক। কিন্তু অনেক উপর দিয়ে মেরে দলকে হতাশ করেন ইন্টার মিলানের এই স্ট্রাইকার।

৭৫তম মিনিটে আবার সুযোগ আসে মার্তিনেসের সামনে। মেসির দুর্দান্ত পাসে সামনে পেয়েছিলেন কেবল গোলরক্ষককে। বার ঘেঁষে শট নিলে হয়তো জালের দেখা পেতেন। কিন্তু মাঝ বরাবর শট নেওয়ায় ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন বলিভিয়ান গোলরক্ষক।

চার মিনিট পর এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষের একজন বল হারালে পেয়ে যান মেসি। অধিনায়কের বাড়ানো বল ধরে মার্তিনেস খুঁজে নেন খানিক আগে বদলি নামা কোররেয়াকে। তার বুলেট গতির শট জড়ায় জালে।

বাকি সময়ে দারুণ চেষ্টা করেছিল বলিভিয়া; কিন্তু সমতা আর ফেরাতে পারেনি তারা। আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেওয়ার মতো এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।

পুরনো ব্যর্থতা ঝেরে ফেলে স্কালোনির কোচিংয়ে নতুন শুরুর ইঙ্গিত দেওয়া দলটি সব মিলে এই নিয়ে টানা ৯ ম্যাচ অপরাজিত থাকল।



 

Post a Comment

Previous Post Next Post