বিশেষ প্রতিনিধিঃ
স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে মৌলভীবাজারের জুড়ী শহর হতে সিলেট শহরে জনসাধারণের
যাতায়াতের জন্য অদ্যবধি কোনো বাস সার্র্ভিস চালু করা হয়নি। ফলে, জনসাধারণ
বাস সার্ভিসের অভাবে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন দীর্ঘদিন।
জুড়ী
উপজেলা থেকে শত শত শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা গ্রহনার্থে সিলেট শহরের বিভিন্ন
কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় পড়াশোনার জন্য যেতে হয়। এ ছাড়াও
শিক্ষক, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন বিভিন্ন কাজে জুড়ী থেকে সিলেট
যাতায়াত করতে হয়। বিধায়, জুড়ী উপজেলাবাসী দীর্ঘ এক বছর পূর্ব থেকে মোটরবাস
মালিক সমিতি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর জুড়ী টু সিলেট রুটে বাস সার্ভিস
চালুর জন্য লিখিত আবেদন করেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মালিক সমিতির পক্ষ
থেকে বাস সার্ভিস চালুর ব্যাপারে বার বার আশ্বাস প্রদান করেও ব্যর্থ হন।
কিন্তু দীর্ঘ এক বছর অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি বাস সার্ভিস চালুর কোনো আভাস
পাওয়া যায়নি। মালিক সমিতির ব্যর্থতায় তিক্ত হয়ে জুড়ী উপজেলাবাসীর পক্ষে
জুড়ী সচেতন নাগরিক সমাজ তৎকালিন হুইপ আলহাজ্ব শাহাব উদ্দিন এমপিসহ
সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট ওই রুটে বাস সার্ভিস চালুর
ব্যাপারে আবেদন নিবেদন করেন। প্রত্যেকেই বাস সার্ভিস চালুর আশ্বাস প্রদান
করলেও এখনো কোনো এর আভাস পাওয়া যায়নি।
নাগরিক
সমাজের দাবি জনসাধারণের যাতায়াতের উন্নয়নে সরকার দেশের বিভিন্ন রুটে
বিআরটিসি বাস চালু করে দিয়ে সেবার মান বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা কেন এ সেবা
থেকে বঞ্চিত থাকবো, এ প্রশ্ন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষের নিকট। এটা হতে পারেনা। ওই রুটে বাস সার্ভিস চালুর দাবিতে
জুড়ীবাসী আজ সোচ্চার হয়ে ওঠেছে। সরেজমিনে নাগরিক সামাজের অনেক নেতার সাথে
আলাপ হলে, তাঁরা বলেন, জনসাধারণের সুবিধার্থে ওই রুটে বাস সার্ভিস চালু
করতে হবে। নতুবা দাবি আদায়ে বৃহত্তর আন্দোলনে বাধ্য হবেন তারা। এরই
ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি জুড়ী সচেতন নাগরিক সামাজের ব্যানারে জুড়ী শহরের নাইট
চৌমুহনা (উপজেলা চত্বর) এক মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন
রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন।
নেতৃবৃন্দরা তাদের বক্তব্যে বলেন, অত্রাঞ্চলের জনসাধারণের যাতায়াতের
সুবিধার্থে এখনই বিআরটিসি বাসসহ অন্য বাস চালু করে যাত্রীদের সময় ক্ষেপন,
অধিক ব্যয় ও ভোগান্তি দূরীকরণে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের
সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
এ
ব্যাপারে জানতে চাইলে, জুড়ী উপজেলা মোটরবাস মালিক সমিতি সভাপতি হাজী মঈন
উদ্দিন মইজন (সাবেক চেয়ারম্যান) ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম জানান,
অত্রাঞ্চলের জনসাধারণের যাতায়াতের সুবিধার্থে জুড়ী-সিলেট রুটে বাস সার্ভিস
চালুর ব্যাপারে আমাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। সাধারণ জনগন, শিক্ষক,
শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন দৈনন্দিন সিলেট যাতায়াত করতে হয়। যাতায়াত
করতে গিয়ে জুড়ী থেকে সিলেট বাস সার্ভিস চালু না থাকায় তারা বার বার
ভোগান্তিতে পড়েন। তারা আরো জানান, যদিও কুলাউড়া থেকে সিলেট ট্রেন কিংবা
সিএনজি ও লাইটেস সার্ভিস চালু থাকলেও জুড়ীর জনসাধারণের জন্য ব্যয় বহুল।
তাতে সময় ক্ষেপন ও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়। তা অধিকাংশ কম আয়ের লোকজনের
জন্য ভাড়া বহন করা কষ্ট সাধ্য হয়ে যায়। জনসাধারণের কষ্টের কথা বিবেচনা করে
আমরা ওই রুটে বাস সার্ভিস চালুর ব্যাপারে রুট পারমিটের অনুমতি চেয়ে
সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত আবেদন করেও ব্যর্থ
হয়েছি। কোন্ কারণে যে, সংশ্লিষ্ট বিভাগ রুট পারমিট দিচ্ছেন না, তা আমাদের
বোধগম্য নয়। বলা বাহুল্য, এ ব্যাপারে দীর্ঘ এক বছরে বহু অর্থ ব্যয় করতে
হয়েছে আমাদের।
একটি
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার ও জকিগঞ্জ উপজেলা মোটরবাস মালিক
সমিতি ওই রুটে বাস সার্ভিস চালুর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আপত্তি
দিয়েছেন। তা আমাদের ভাববার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। পরিশেষে নাগরিক সমাজ ওই রুটে
বিআরটিসিসহ অন্য বাস চালু করে জনসাধারণের দুর্ভোগ লাগবে মাননীয় প্রধান
মন্ত্রী শেখ হাসিনার সু-দৃষ্টি কামনা করেন।