কমলগঞ্জ সমাজকল্যাণ পরিষদের ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমন


হিফজুর রহমান তুহিন: মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ সমাজকল্যাণ পরিষদের আয়োজনে ঘুরাঘুরিতে শিক্ষা সফর  ও আনন্দ  ভ্রমন ৯ অক্টোবর অনুষ্টিত হয়েছে। পরিষদের সভাপতি ফাতেহ রশিদ চৌধুরী মাহফুজের পরিচালনা  সময় ৭৫ জন  যাত্রী নিয়ে দুটি গাড়ি যোগে নারায়নগঞ্জ সোনারগাঁও এর ঐতিহাসিক স্থানগুলো ভ্রমন করা হয়।

যাত্রার প্রথমে "পানাম সিটি ও বাংলাদেশ লোকশিল্প জাদুঘর" নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্তর্গত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মোগড়াপাড়া ক্রসিং থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার উত্তরে সোনারগাঁও অবস্থিত। সবুজ বন-বনানী আর অনুপম স্থাপত্যশৈলীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য়ের নান্দনিক ও নৈসর্গিক পরিবেশে ঘেরা বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁও। ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষভাগে হিন্দু আমলের রাজধানী এখানেই অবস্থিত ছিল বলে ধারণা করা হয়। পরবর্তীকালে মুসলিম শাসকদের পুর্ববঙ্গের প্রাদেশিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল। প্রাচীন সুবর্ণগ্রাম থেকে সোনারগাঁও নামের উদ্ভব বলে কারো কারো ধারণা রয়েছে। অন্য ধারণামতে বারো ভূঁইয়া প্রধান ঈশা খাঁ’র স্ত্রী সোনাবিবি’র নামানুসারে সোনারগাঁও নামকরণ করা হয়। বাংলাদেশের প্রাচীন জনপদের মধ্যে শিল্পকলা, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে সোনারগাঁও একটি গৌরবময় জনপদ। আনুমানিক ১২৮১ খ্রিস্টাব্দে এ অঞ্চলে মুসলিম আধিপত্যের সূচনা হয়। মধ্যযুগে এটি মুসলিম সুলতানদের রাজধানী ছিল। ১৬১০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে ঢাকা সুবে বাংলার রাজধানী হিসেবে ঘোষিত হবার পূর্ব পর্য়ন্ত সোনারগাঁও ছিল পূর্ববঙ্গের রাজধানী। ঈশা খাঁ ও তাঁর বংশধরদের শাসনামলে সোনারগাঁও ছিল পূর্ববঙ্গের রাজধানী। সোনারগাঁও-এর আরেকটি নাম ছিল পানাম। 

পরির্দশনকালে দেখা যায়, পানাম নগরের নির্মিত ভবনগুলো ছোট লাল ইট দ্বারা তৈরী। ইমারতগুলো কোথাও একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন, আবার কোথাও সন্নিহিত। অধিকাংশ ভবনই আয়তাকার এবং উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত। দীর্ঘ একটি সড়কের উভয় পাশে দৃষ্টিনন্দন ভবন স্থাপত্যের মাধ্যমে পানামনগর গড়ে উঠেছিল। উভয় পাশে মোট ৫২টি পুরোনো বাড়ী এই ক্ষুদ্র নগরীর মূল আকর্ষণ। পানাম শহরের ঠাকুরবাড়ি ভবন ও ঈশা খাঁ’র তোরণকে একত্রে নিয়ে মোট প্রায় ষোল হেক্টর স্থান জুড়ে লোকশিল্প ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের অবস্থান। এখানে ১টি জাদুঘর, ১টি লোকজ মঞ্চ, সেমিনার কক্ষ ও কারুশিল্প গ্রাম রয়েছে। এখানকার জাদুঘরে প্রায় সাড়ে চারহাজার নিদর্শন সংরক্ষিত আছে। প্রতি শুক্রবার থেকে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্য়ন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। তবে শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ২টা পযন্ত জুমার নামাজের জন্য জাদুঘর বন্ধ থাকে বলে জানাযায়। 

যাত্রার ২য় পর্যায়ে দেশীয় তাজমহল ও পিরামিডসহ অপরুপ দৃশ্যগুলো দেখা শেষে সন্ধ্যা লগ্নে ঘুরাঘুরি শেষে অনুষ্টিত হয় কুইজ প্রতিযোগিতার ফলফল প্রকাশ। এ সময় বিজয়ীদের হাতে পুরুষ্কার  তোলে দেন সংগঠনের সভাগতি ও উপদেষ্টাবৃন্দ। অনুষ্টান শেষে শিক্ষা সফর সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post