বাংলাদেশ-আফগানিস্তান টেস্ট শুরু আজ


স্পোর্টস ডেস্ক: সাকিব আল হাসান বনাম রশিদ খান। স্পিন বনাম স্পিন। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ শুরু হতে যাওয়া বাংলাদেশ-আফগানিস্তান একমাত্র টেস্টের ক্যাচলাইন হয়ে উঠেছে স্পিন দ্বৈরথ। চট্টগ্রামের উইকেট অবশ্য চিরকালই অননুমেয়। ঘূর্ণির প্রলয় নাচন সত্যিই ম্যাচের ভাগ্য লিখে দেবে কিনা তা সময়ই বলে দেবে। তবে সব ফেলে স্পিন, স্পিন রব ওঠার যথেষ্ট কারণ আছে। দু’দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সময়ের অন্যতম সেরা দুই স্পিনার সাকিব ও রশিদ। এছাড়া দু’দলই সম্ভবত চার স্পিনার খেলাতে যাচ্ছে। সাকিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণে আছেন তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসান। ঘরের মাঠে গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে প্রতিপক্ষের পুরো ৪০ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন এ চার স্পিনার।

টেস্ট পরিবারের নবীন সদস্য আফগানিস্তানের মূল শক্তিই আবার স্পিন। দারুণ বৈচিত্র্যময় তাদের স্পিন আক্রমণ। ঘূর্ণির জাদুকর রশিদ খানের সঙ্গে আছেন অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবী এবং দুই তরুণ সেনসেশন জহির খান ও কাইস আহমেদ। ফলে ২২ গজে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব বিষয়টিকে একটু অন্যভাবে দেখছেন। দু’দলের স্পিন শক্তি কাছাকাছি হওয়ায় সাকিব মনে করছেন, দিন শেষে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে ব্যাটিং। বুধবার ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানালেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, ‘দেশের মাটিতে আমরা বরাবরই ভালো বোলিং করে এসেছি। আমাদের স্পিনাররা যখনই সুযোগ পেয়েছে, তাদের পছন্দমতো উইকেট পেয়েছে, সব সময় ভালো করেছে। কিন্তু আফগানিস্তান দলেও অনেক বিশ্বমানের স্পিনার আছে। তাই আমার মনে হয়, পার্থক্য গড়ে দিতে পারে ব্যাটিং।’

ব্যাটিংয়ে পরিষ্কার এগিয়ে বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল বিশ্রামে থাকলেও মিডলঅর্ডারে মুশফিক, মুমিনুল, সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর অভিজ্ঞতা ব্যবধান গড়ে দিতে পারে। সঙ্গে থাকবেন সাদমান, সৌম্য ও লিটন। অন্যদিকে ব্যাটিংয়ে আফগানিস্তানের ভরসা রহমত শাহ, হাশমতউল্লাহ ও আসগর আফগান। সব মিলিয়ে এটি আফগানিস্তানের মাত্র তৃতীয় টেস্ট। আগের দুটি টেস্ট খেলেছে তারা ভারতের মাটিতে।

গত মার্চে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলেও গত বছর ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে নিদারুণ ব্যাটিং ব্যর্থতায় দু’দিনেই হেরেছিল আফগানরা। স্বাগতিক হিসেবে বাংলাদেশ তাই পরিষ্কার ফেভারিট। আফগানদের হালকাভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। সাকিবও সেটা মনে করিয়ে দিলেন, ‘টেস্টে তারা অভিজ্ঞ না হলেও আমাদের ‘এ’ দলের বিপক্ষে কিন্তু মনোযোগ ধরে রেখেই ব্যাটিং করেছে। প্রস্তুতি ম্যাচেও ওদের দুই ওপেনার ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। আমাদের তাই অবশ্যই সেরাটা খেলতে হবে। তবে মনোযোগ ধরে রেখে মৌলিক কাজগুলো ঠিকভাবে করতে পারলে আমার মনে হয় আমরা ভালো কিছুই করতে পারব।’

শেষ সাতটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের ছয়টিতে হারায় জয়ের ধারায় ফিরতে উন্মুখ বাংলাদেশ। এছাড়া বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে যাত্রা শুরুর আগে এটাই বাংলাদেশের শেষ টেস্ট। যে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে অভিষেক হচ্ছে রাসেল ডমিঙ্গোর। রাঙানোর মতো একটি উপলক্ষ আছে তাইজুলেরও। টেস্টে বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার হিসেবে ১০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁতে মাত্র একটি উইকেট দরকার তার। ওদিকে আজ টস করতে নামলেই রেকর্ড বইয়ে নাম উঠে যাবে রশিদের। বিশ্বকাপের পর তিন সংস্করণেই তাকে অধিনায়ক করেছে আফগানিস্তান।

জিম্বাবুয়ের তাতেন্দা তাইবুর রেকর্ড ভেঙে টেস্ট ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক হতে যাচ্ছেন রশিদ (২০ বছর ৩৫০ দিন)। তার আসল বয়স ও পাসপোর্টের বয়স নিয়ে অবশ্য অনেকেই রসিকতা করেন! তবে রেকর্ড বইয়ে সেটা লেখা থাকবে না। টেস্টে নেতৃত্বের অভিষেক নিয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত রশিদ। চোট কাটিয়ে প্রায় ১০ মাস পর টেস্টে ফেরা সাকিবের রোমঞ্চও কম নয়। সব রোমাঞ্চ পণ্ড হওয়ার শঙ্কাও অবশ্য আছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, চট্টগ্রাম টেস্টের পাঁচদিনই বাগড়া দিতে পারে বৃষ্টি!

Post a Comment

Previous Post Next Post