বিশেষ প্রতিনিধিঃ
দুবাইয়ে দুর্ঘটনায় নিহত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের
বড়চেগ গ্রামের আজাদ মিয়া (৩২) এর মরদেহ দীর্ঘ এক মাস বৃহষ্পতিবার ২৯ আগস্ট
সকালে দেশে আসছে বলে পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন। চলতি বছরের ২৫ জুলাই
আবুধাবির আলাইন শহরে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। একমাস ধরে
শুধু টাকার অভাবে তাঁর লাশ দেশে আনতে পারছিলেন না পরিবার। এক মাস যাবত
আবুধাবির একটি হাসপাতালের মর্গে আজাদের লাশ পড়ে থাকায় আবুধাবিতে আজাদের
পরিচিতজনরা টাকা তুলে লাশ পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
আজাদ মিয়ার ছোট বোন সাজনা আক্তার বলেন, আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না। ভাই অনেক কষ্ট করে আমাদের সংসারে অর্থের যোগান দিয়েছেন। ২ বোনকে বিয়ে দিয়েছেন। বিদেশে গিয়ে ভাই মারা গেছেন। এখন শুধু টাকার অভাবে ভাইয়ের লাশও দেশে আনতে বিলম্ব হয়েছে। আবুধাবিতেও সরকারি লোকজন কেউ সাহায্য করেননি। লাশের কফিন, টিকেট কিনতে আবুধাবিতে পরিচিতজনরা সাহায্য তুলেছেন ভাইয়ের লাশ দেশে পাঠানোর জন্য। আগামী বৃহষ্পতিবার লাশ দেশে আসবে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এখন সেই অপেক্ষাতেই আছি। তিনি বলেন, ভাই মারা যাওয়ার পর বিদেশ থেকে তার বন্ধুবান্ধবরা আমাদের মোবাইলে একটি ভিডিও পাঠান। সেই ভিডিওতে দেখেছি ভাই ডিউটিতে ছিলেন। এসময় একটি শেওল গাড়ি পাশের একটি ঘরে ধাক্কা দেয়। ওই ঘরটি আমার ভাইয়ের উপর পড়ে। যার ফলে তিনি মারা যান।
আজাদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর ভ্রমণ ভিসায় আবুধাবি যান। সেখানে গিয়ে তিনি দেশের চলমান আইন অনুযায়ী বিজনেস ভিসা অর্থাৎ ইনভেস্টার পার্টনার প্রফেশনে (এক্বামা) আইডি লাগিয়ে কাজ করছিলেন। চলতি বছরের ২৫ জুলাই আবুধাবির আলাইন শহরে ডিউটিরত অবস্থায় একটি গাড়ি স্টিলের একটি রেডিমেট ঘরে ধাক্কা দিলে ঘরটি ভেঙে আজাদের উপরে পড়ে। আঘাতে ঘটনাস্থলেই আজাদ মারা যান। এর পর থেকেই আবুধাবির খলিফা হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে আজাদ মিয়ার লাশ।
এদিকে আজাদ মারা যাওয়ার খবর শোনার পর থেকেই তাঁর মায়ের আহাজারি শুরু হয়। ছেলের লাশ দেখার দেখার জন্য এক মাস যাবত আহাজারি করছেন আজাদ মিয়ার মা রোকেয়া বেগম। ছেলেকে একনজর দেখার জন্য নাওয়া খাওয়া ছেড়ে রোকেয়া বেগমের শারীরিক অবস্থারও অবনতি হয়ে গেছে।
আজাদ মিয়ার ছোট বোন সাজনা আক্তার আরো বলেন, ‘ভাইতো মারা গেছঅইন, এখন মাও খোয়ানির সময় আইছে। ভাইয়ের লাশ দেখার লাগি গত ১ মাস থাকি আমরার ঘরো মাতম চলে। আম্মাতো কানতে কানতে ঘুমাইন আবার ঘুম থাকি উঠি কান্দা শুরু করঅইন।
আজাদ মিয়ার বাবা মারা গেছেন অনেক আগে। ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি ৩য়। বড় ভাই অসুস্থ থাকায় কোনো কাজ করতে পারেন না। তাই তিনি কাজ করে সংসার চালাতেন। দেশে থাকা অবস্থায় দীর্ঘদিন মৌলভীবাজারের হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে কাজ করেন। কষ্ট করে ২ বোনের বিয়েও দিয়েছেন। এরপর ভাগ্য বদলের আশায় ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর ভ্রমণ ভিসায় আবুধাবি যান দরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম যুবক আজাদ মিয়া।
আবুধাবির চলমান আইন অনুযায়ী বিজনেস ভিসা অর্থাৎ ইনভেস্টার পার্টনার প্রফেশনে (এক্বামা) আই ডি লাগিয়ে কাজ শুরু করেন এই প্রবাসী। এই এক্বামা লাগানোর জন্যও বোনেরা ধার কর্জ করে ২ লক্ষ টাকা দেশ থেকে পাঠান আজাদের কাছে। আবুধাবিতে পরিচিতদের কাছ থেকে টাকা ধার করেন এক্বামার জন্য। এক্বামা পেয়ে যখন যে মালিকের কাজ পেতেন করতেন। মৃত্যুর আগে আবুধাবির আলাইন শহরের রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন তিনি।
জানা যায়, বৈধভাবে বিদেশগামীদের প্রবাসে নিজ দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। বৈধ কোনো প্রবাসী মৃত্যুবরণ করলে লাশ দূতাবাসের মাধ্যমে দেশে পাঠানোর নিয়ম রয়েছে। তবে অবৈধভাবে বা ভিজিট ভিসায় গিয়ে কেউ কোনো বিপদে পড়লে বা মারা গেলে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করায় রয়েছে সীমাবদ্ধতা। যেকারণে অবৈধভাবে বা ভিজিট ভিসায় বিদেশ গিয়ে বিপদে পড়লে বা কেউ মারা গেলে ওইখানের বাংলাদেশী কমিউনিটির মাধ্যমেই সাহায্য করে দেশে লাশ পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের প্রবাসী কল্যাণ শাখার দায়িত্বরত মৌসুমী আক্তার বলেন, বিদেশ থেকে লাশ আনার বিষয়ক কাজ আমাদের শাখায় হয় না। এটা আমাদের অধীনস্থ কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের মাধ্যমে করানো হয়।
মৌলভীবাজার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, কোনো বৈধ শ্রমিক বিদেশে মারা গেলে তার লাশ আমরা দূতাবাসের মাধ্যমে আনার ব্যবস্থা করে দেই। এক্ষেত্রে আমাদের অফিসে এসে আবেদন করলেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে অবৈধভাবে বিদেশ গেলে সেটা আমরা করতে পারবো না কারণ যারা অবৈধভাবে যান তাদের ডাটা থাকে না আমাদের কাছে।
আজাদ মিয়ার ছোট বোন সাজনা আক্তার বলেন, আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না। ভাই অনেক কষ্ট করে আমাদের সংসারে অর্থের যোগান দিয়েছেন। ২ বোনকে বিয়ে দিয়েছেন। বিদেশে গিয়ে ভাই মারা গেছেন। এখন শুধু টাকার অভাবে ভাইয়ের লাশও দেশে আনতে বিলম্ব হয়েছে। আবুধাবিতেও সরকারি লোকজন কেউ সাহায্য করেননি। লাশের কফিন, টিকেট কিনতে আবুধাবিতে পরিচিতজনরা সাহায্য তুলেছেন ভাইয়ের লাশ দেশে পাঠানোর জন্য। আগামী বৃহষ্পতিবার লাশ দেশে আসবে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এখন সেই অপেক্ষাতেই আছি। তিনি বলেন, ভাই মারা যাওয়ার পর বিদেশ থেকে তার বন্ধুবান্ধবরা আমাদের মোবাইলে একটি ভিডিও পাঠান। সেই ভিডিওতে দেখেছি ভাই ডিউটিতে ছিলেন। এসময় একটি শেওল গাড়ি পাশের একটি ঘরে ধাক্কা দেয়। ওই ঘরটি আমার ভাইয়ের উপর পড়ে। যার ফলে তিনি মারা যান।
আজাদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর ভ্রমণ ভিসায় আবুধাবি যান। সেখানে গিয়ে তিনি দেশের চলমান আইন অনুযায়ী বিজনেস ভিসা অর্থাৎ ইনভেস্টার পার্টনার প্রফেশনে (এক্বামা) আইডি লাগিয়ে কাজ করছিলেন। চলতি বছরের ২৫ জুলাই আবুধাবির আলাইন শহরে ডিউটিরত অবস্থায় একটি গাড়ি স্টিলের একটি রেডিমেট ঘরে ধাক্কা দিলে ঘরটি ভেঙে আজাদের উপরে পড়ে। আঘাতে ঘটনাস্থলেই আজাদ মারা যান। এর পর থেকেই আবুধাবির খলিফা হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে আজাদ মিয়ার লাশ।
এদিকে আজাদ মারা যাওয়ার খবর শোনার পর থেকেই তাঁর মায়ের আহাজারি শুরু হয়। ছেলের লাশ দেখার দেখার জন্য এক মাস যাবত আহাজারি করছেন আজাদ মিয়ার মা রোকেয়া বেগম। ছেলেকে একনজর দেখার জন্য নাওয়া খাওয়া ছেড়ে রোকেয়া বেগমের শারীরিক অবস্থারও অবনতি হয়ে গেছে।
আজাদ মিয়ার ছোট বোন সাজনা আক্তার আরো বলেন, ‘ভাইতো মারা গেছঅইন, এখন মাও খোয়ানির সময় আইছে। ভাইয়ের লাশ দেখার লাগি গত ১ মাস থাকি আমরার ঘরো মাতম চলে। আম্মাতো কানতে কানতে ঘুমাইন আবার ঘুম থাকি উঠি কান্দা শুরু করঅইন।
আজাদ মিয়ার বাবা মারা গেছেন অনেক আগে। ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি ৩য়। বড় ভাই অসুস্থ থাকায় কোনো কাজ করতে পারেন না। তাই তিনি কাজ করে সংসার চালাতেন। দেশে থাকা অবস্থায় দীর্ঘদিন মৌলভীবাজারের হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে কাজ করেন। কষ্ট করে ২ বোনের বিয়েও দিয়েছেন। এরপর ভাগ্য বদলের আশায় ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর ভ্রমণ ভিসায় আবুধাবি যান দরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম যুবক আজাদ মিয়া।
আবুধাবির চলমান আইন অনুযায়ী বিজনেস ভিসা অর্থাৎ ইনভেস্টার পার্টনার প্রফেশনে (এক্বামা) আই ডি লাগিয়ে কাজ শুরু করেন এই প্রবাসী। এই এক্বামা লাগানোর জন্যও বোনেরা ধার কর্জ করে ২ লক্ষ টাকা দেশ থেকে পাঠান আজাদের কাছে। আবুধাবিতে পরিচিতদের কাছ থেকে টাকা ধার করেন এক্বামার জন্য। এক্বামা পেয়ে যখন যে মালিকের কাজ পেতেন করতেন। মৃত্যুর আগে আবুধাবির আলাইন শহরের রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন তিনি।
জানা যায়, বৈধভাবে বিদেশগামীদের প্রবাসে নিজ দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। বৈধ কোনো প্রবাসী মৃত্যুবরণ করলে লাশ দূতাবাসের মাধ্যমে দেশে পাঠানোর নিয়ম রয়েছে। তবে অবৈধভাবে বা ভিজিট ভিসায় গিয়ে কেউ কোনো বিপদে পড়লে বা মারা গেলে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করায় রয়েছে সীমাবদ্ধতা। যেকারণে অবৈধভাবে বা ভিজিট ভিসায় বিদেশ গিয়ে বিপদে পড়লে বা কেউ মারা গেলে ওইখানের বাংলাদেশী কমিউনিটির মাধ্যমেই সাহায্য করে দেশে লাশ পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের প্রবাসী কল্যাণ শাখার দায়িত্বরত মৌসুমী আক্তার বলেন, বিদেশ থেকে লাশ আনার বিষয়ক কাজ আমাদের শাখায় হয় না। এটা আমাদের অধীনস্থ কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের মাধ্যমে করানো হয়।
মৌলভীবাজার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, কোনো বৈধ শ্রমিক বিদেশে মারা গেলে তার লাশ আমরা দূতাবাসের মাধ্যমে আনার ব্যবস্থা করে দেই। এক্ষেত্রে আমাদের অফিসে এসে আবেদন করলেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে অবৈধভাবে বিদেশ গেলে সেটা আমরা করতে পারবো না কারণ যারা অবৈধভাবে যান তাদের ডাটা থাকে না আমাদের কাছে।