সিলেট-আখাউড়ার পাহাড়ি রেলপথে ঝুকি নিয়ে চলছে ট্রেন


নিউজ ডেস্কঃ সিলেট-আখাউড়া রেলপথে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ট্রেন চলাচল। দুর্বল ইঞ্জিনের কারণে ট্রেনগুলো মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের উঁচু টিলা অতিক্রম করতে না পারায় প্রায়ই আটকা পড়ে পাহাড়ি এলাকায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। এ ছাড়া বৃষ্টির দিনে রেলপথে বালু ছিটিয়ে চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট-আখাউড়া রেলপথের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী আট কিলোমিটার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পাহাড়ি এলাকা। এ এলাকায় ছোটখাটো কয়েকটি টিলা থাকলেও দুটি টিলা বেশ উঁচু, যা ট্রেন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ।


রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সাধারণত বৃষ্টির দিনে ও শীতের সময় ঘন কুয়াশায় সব ধরনের ট্রেনকেই খুব সতর্কতার সঙ্গে উঁচু এ টিলাগুলো পার হতে হয়। ওই সময়গুলোতে উদ্যানের পাহাড়ি এলাকার রেলপথ পিচ্ছিল থাকায় ইঞ্জিনের চাকাও পিছলে যায়। তাই বৃষ্টি ও শীতের সময় মেইল ও মালবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনে করে বালুর বস্তা নিয়ে যাওয়া হয়। টিলার যে স্থানগুলোতে ট্রেন পিছলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, সে অংশে বালু ফেলা হয়। অনেক সময় বালুতেও কাজ করে না। তখন ট্রেনকে পেছনের দিকে ফিরিয়ে নিতে হয়।


রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, সিলেট-আখাউড়া রেলপথে সিলেট থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম পথে প্রতিদিন পারাবত, উপবন, উদয়ন, কালনি, জয়ন্তিকা, পাহাড়িকা ও জালালাবাদ এক্সপ্রেস নামে ছয়টি আন্তনগর ট্রেন, কুশিয়ারা এক্সপ্রেস ও ডেমু নামে দুটি সাধারণ ট্রেন ও সুরমাসহ চারটি মেইল ট্রেনে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ হাজার যাত্রী চলাচল করেন। এ ছাড়া তেলবাহী ট্যাংকার ও সারবাহী ট্রেনও চলাচল করে।


শমশেরনগরের স্টেশনমাস্টার কবির আহমদ ও শ্রীমঙ্গলের স্টেশনমাস্টার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন থেকে ওই বড় দুটি টিলা প্রায় ১০০ ফুট উঁচু। বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশার কারণে ট্রেনগুলো লাউয়াছড়া উদ্যানের উঁচু টিলা অতিক্রম করতে না পেরে প্রায়ই আটকা পড়ে। গত বছর ২৩ জানুয়ারি ভোর চারটায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী আন্তনগর উপবন ট্রেনটি উদ্যান এলাকার একটি টিলা অতিক্রম করতে না পেরে প্রায় ৩০ মিনিট আটকা থাকার পর শ্রীমঙ্গল স্টেশনে ফিরে যায়। ভোর পাঁচটায় আবারও ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে উদ্যানের মাগুরছড়া এলাকার একটি ভাঙা সেতুর ওপর আটকা পড়ে। ২৮ জানুয়ারি সারবাহী একটি ট্রেন টিলার কাছে আটকে যায়। একই বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি মালামাল বহনকারী ট্রেন অতিক্রমের সময় উদ্যান এলাকায় দুভাগে ভাগ হয়ে যায়।


স্টেশনমাস্টার কবির আহমদ আরও বলেন, মালগাড়ি ও তেলবাহী ট্যাংকারগুলো ওই এলাকায় আটকা পড়লে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সিলেট রেলপথের ট্রেনগুলোতে নতুন ইঞ্জিন যুক্ত করা ছাড়া বিকল্প নেই।


রেলওয়ের গণপূর্ত বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মনির হোসেন বলেন, দুর্বল ইঞ্জিনের কারণেই ট্রেনগুলো উঁচু টিলা অতিক্রম করতে না পেরে পাহাড়ে আটকা পড়ে। তাই ট্রেনগুলোতে নতুন ইঞ্জিন যুক্ত করার কথা বলেন তিনি। -
প্রথম আলো

Post a Comment

Previous Post Next Post