বরমচালে ট্রেন দূর্ঘটনার দায়বার কি কেউ নেবেনা?

নিউজ ডেস্কঃ কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলওয়ে ষ্টেশনে গত ২৪ জুন ঘটে যাওয়া উপবন এক্সপ্রেসের দায়ভার কর্তৃপক্ষ কিভাবে অস্বীকার করবে?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিনিয়ত এলাকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে লিখে থাকি। আশায় থাকি যদি এই লিখনির মাধ্যমে প্রবাস জীবনে থেকেও যদি লেখার সমস্যা তুলে ধরার পর যদি এলাকার কোন মানুষ বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সুন্দর একটা সমাধানের পথে যাবে। কখনো লিখনির মাধ্যমে উত্তাপিত এসব সমস্যা সমাধান হয় আবার কখনো হয় না।তাই বলে হাল ছাড়িনা কখনো এই ভেবে যে হয়তো এলাকার কোন একজন সামাজিক সচেতন মানুষের দৃষ্টি গোছর হলে ভালো কিছু একটা ফল আসবে।

ঠিক তেমনে একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করেছিলাম গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। এলাকার বড় ভাই হুসনুল আমিন চৌধুরীর ফেইসবুক আইডি থেকে ছবি ও কিছু তথ্য নিয়ে। বিষয়টি ছিল, রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা যেকোনো সময় ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। রেললাইন ক্লিপ ছাড়াই চলছে রেলগাড়ি।

সেই লিখাটিতে সেদিন এলাকায় অনেক সচেতন মানুষ তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত জানিয়েছিলেন এবং তাদের মতামতের আলোকে সেদিন হুসনুল আমিন চৌধুরী ফাজু ও বরমচাল কালা মিয়া বাজারের ব্যাবসায়ী মনসুর আলম চৌধুরী সুলতান সহ বেশ কয়েকজন সমাজ সচেতন লোক সাথে সাথে বিষয়টি বরমচাল রেলওয়ে ষ্টেশনে কর্তব্যরত মাষ্টার কাজল আহমদকে অবগত করেন। এরপর আরো তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তারা আবারো খুজ নেন ষ্টেশন মাষ্টারের কাছে তখন ষ্টেশন মাষ্টার কাজল আহমদ জানান তিনি বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন যা ইতিমধ্যে বেশ কিছু গণমাধ্যম স্পষ্ট উঠে এসেছে।

আমার প্রশ্ন হল ২৮ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি অবিহিত করা পর কর্তব্যরত মাষ্টার তার উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানালেন তিন দিন পর আর উর্ধতন কর্মকর্তা কাজে এতো বেশি ব্যাস্ত ছিলেন যে তার এই ব্যাস্ততা কারনে ৪ মাস অতিবাহিত হয়ে গেল তার আর বিষয়টি দেখছি বলে আজো অদেখাই রয়ে গেল। যার ফলস্রুতিতে হারাতে হল তরতাজা এতো গুলো প্রাণ। উর্ধতন কর্মকর্তা কি এমন কাজ ছিল এতো গুলো মাস অতিবাহিত হলেও তিনি অতি গুরুত্বপূর্ন এ বিষয়টির দিকে দৃষ্টিপাত করতে কালক্ষেপণ করলেন তা আমাদের জানা নেই।

এতো গুলো মানুষ কার গাফিলতির কারনে আজ চলে যেত হল আপনজন ছেড়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে?কেন সেদিন সহস্রাধিক মানুষের কান্নায় বরমচালের আকাশ বাতাস ভারি হয়েছিল? সারা দেশবাসী সেদিন কেন অসহায়ের মতো তাকিয়ে ছিল কি হচ্ছে বরমচালে?

দূর্ঘটনার পর মন্ত্রী মহোদয় ঠিকই আসলেন তবে ঘটনা ঘটে যাওয়ার দুই দিন পর! প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেন দূর্ঘটনায় প্রতিটি স্বজন হারানোদেরকে জন প্রতি এক লক্ষ টাকা! দেশে কি দূর্ঘটনায় নিহত মানুষের দাম লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়? যার স্বজন চলে যায় সে বুঝে কি হারিয়েছে। তার পরেও তারা বলে তাদের আত্নীয় স্বজনের মতো যেন এভাবে রেলওয়ে কর্তপক্ষের চরন উদাসীনতায় আর যেন কারো পরিবার স্বজন হারা না হয়।

কিন্তু মন্ত্রী মহোদয় আপনি সরাসরি বলে দিলেন এ দায়ভার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নিতে পারবেনা! আর আপনারা তদন্তের জন্য যাদের দায়িত্ব দিয়েছেন তাদেরকে ও তো খুব যত্নসহকারে আগাগোড়া বুঝিয়ে তদন্তের জন্য মাঠে নামিয়েছেন। তারাও যে এ দায়ভার আপনাদের উপর দিবে তাদের কি সে সাহস আদৌ হবে?

আমরা কুলাউড়া উপজেলাবাসী ও বরমচালবাসী আপনাদেরকে অবগত করেছি সেটা কিভাবে অস্বীকার করবেন। যার জলন্ত প্রমাণ আপনার স্থানীয় কর্তব্যরত মাষ্টার জলিল আহমদ।

আমরা বরমচালবাসী এভাবে মানুষের জীবনের বিনিময়ে রেলওয়ে ষ্টেশন আধুনিকায়ন ও আন্তনগর যাত্রা বিরতি চাইনি। আমরা চাইনি কোন মায়ের বুক খালি করে আপনি আমাদের রেল  যোগাযোগ মাধ্যমে আধুনিকায়ন করবেন।

আপনাদের রেলওয়ে কর্তপক্ষের গাফিলতির কারনে আর কত এভাবে স্বামী হারাবে তার স্ত্রীকে,মা হারাবে তার সন্তানক?ভাই হারাবে তার বোনকে?

এ দায়ভার আমরা বরমচালবাসী ততা কুলাউড়া উপজেলাবাসী কি করে নিব? আপনাদের গাফিলতির কারনে আমরা আজীবন এ স্বজন হারানো ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াবো। তার পরেও বলি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আপনারা আর গাফিলতি করে এভাবে স্বজন হারানো শোক আমাদের  বার বার দয়া করে দিবেন।অন্তত কুলাউড়ার বরমচালে ঘটে যাওয়া এ দায়বারটা স্বীকার করে রেলওয়েতে ঘটে যাওয়া সকল দূর্ঘটনার দায়ভার হতে রেলওয়েকে কলংক মুক্ত করবেন সে আশায় কুলাউড়াবাসী এমনকি পুরো দেশবাসী অপেক্ষামান।

লেখকঃ লুৎফুর রহমান রাজু
সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক
বরমচাল অনলাইন প্রবাসী গ্রুপ।

Post a Comment

Previous Post Next Post