বিশেষ প্রতিনিধিঃ নির্বাচন কমিশন ঘোষিত পুন:তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছে মনোনয়ন বিক্রি শুরু করে এবং আওয়ামী লীগ নের্তৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোটের শরীকদলগুলোও বিক্রি শুরু করে।
রোববার
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে মৌলভীবাজার-২
আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোননীত প্রার্থী কে হচ্ছেন এ নিয়ে আলোচনার ঝড়
বইছে। তথ্যমতে মৌলভীবাজার-২ আসনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের রেকর্ড সংখ্যক
ডজনখানেক র্প্রাথী মনোনয়ন দলীয় সংগ্রহ করেছেন। এদিকে ঐক্যফ্রন্টের
প্রার্থীতার দাবিদার আওয়ামী লীগের সাবেক সংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান
ঐক্যপ্রক্রিয়ার নেতা সাবেক সাংসদ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, সাবেক সাংসদ
এম এম শাহীন ও বিএনপি নেতা অ্যাড. আবেদ রাজা। এই আসনে কে হচ্ছেন মহাজোটের
প্রার্থী আর কে হচ্ছেন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী স্থানীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের
মধ্যে এনিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। তবে সবকিছুর পরে স্থানীয় নেতাকর্মী ও
দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের ভোটারদের কাছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন
সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও এম এম শাহীন। এই দুজনই কুলাউড়ার সাবেক সাংসদ। দুই
ঘরানার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্ধী সাবেক এই দুই হেভিওয়েট সাংসদ এবার একই
ঘরানার মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রতিদ্বন্ধী।
জানা যায়, বর্তমানে গণফোরাম, নাগরিক ঐক্যসহ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট মিলে গঠিত ঐক্যফ্রন্টের নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ইতোমধ্যে বিভিন্ন সমাবেশে ও গণমাধ্যমে জানিয়েছেন এখনো “মুজিব কোট পরেও জয় বাংলা বলে” নির্বাচনে প্রতিদন্ধিতা করবেন। প্রতীক হতে পারে ধানের শীষ অথবা উদিত সূর্য। তবে আওয়ামী ঘরানার রাজনীতি থেকে এসে বিএনপির প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন কিনা এ নিয়ে স্থানীয় ভোটার ও তৃণমূল নেতকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাঁর অনুুসারীরাও অনেকেই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। এছাড়াও নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের হয়ে এই আসনে যদি তিনি প্রার্থী হন তাহলে তাঁর রাজনৈতিক মতাদর্শের ঠিক উল্টো ঘরানার রাজনৈতিক দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য এবং তাদের কতটুকু বাগিয়ে নিতে পারবেন সেটা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
এদিকে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাকে পরাজিত করে চমক সৃষ্টি করেন সাবেক সাংসদ এম এম শাহীন। এবার ভোট যুদ্ধ নয় মনোনয়ন যুদ্ধে সুলতান মনসুরের প্রতিদ্বন্দী সেই এম এম শাহীন। এম এম শাহীন তাঁর অনুসারীরদের নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে এলাকায় ব্যাপকভাবে গণ-সংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর অনুসারীদের দাবি তিনি এবার দলীয় মনোনয়ন পাবেন। এদিকে গুঞ্জন রয়েছে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে যদি তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হোন তাহলে আবারও তিনি স্বতন্ত্র হতে পারেন। যদি তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হোন তাহলে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীর একটি অংশ (এম এম শাহীন অনুসারী) তাঁর পক্ষেই কাজ করবেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। এই প্রেক্ষাপটে সুলতান মনসুর ও এম এম শাহীন এই দুই হেভিওয়েট সাবেক সাংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হলে তৃণমূল নেতাকর্মী, তাদের অনুসারী এবং ভোটারদের সমর্থন কতটুক আদায় করতে পারবেন সেই আলোচনায় মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের রাজনীতির মাঠ সরগরম।