জেলেই গুম ৮২,০০০; কয়েদিরাই ফেলে কয়েদিদের লাশ

অনলাইন ডেস্কঃ সিরিয়ায় কারাগারে আটক হাজার হাজার কয়েদিকে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করা হচ্ছে। কয়েদিদের গাদাগাদি করে রাখা হচ্ছে। ঠিকমতো খেতে দেয়া হচ্ছে না। অসুস্থ হলে চিকিৎসা কিংবা ওষুধ নেই। এর ফলে অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছেন অনেকেই।

চাল, আলু ও তেল দিয়ে তৈরি এক ধরনের সুপ দেয়া হয় কয়েদিদের। এই সুপ খেয়ে ডাইরিয়ায় ভুগেও মারা যাচ্ছেন বহু কয়েদি। সুপ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেও কোনো ওষুধ দেয়া হয় না। সম্প্রতি সিরিয়ার সেনাবাহিনীর এক বিদ্রোহী কর্মকর্তা নিহত কয়েক হাজার কয়েকর ছবি ফাঁস করে দিয়েছেন। ওই ছবিগুলো এবং নিহতদের স্বজনদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে করা প্রতিবেদনে এ সব তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কারও চোখ উপড়ে, কারও খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে চেহারা বিকৃত করে হত্যা করা হয়েছে। এভাবে হত্যার পর লাশগুলো গুম করে ফেলা হয়েছে। বড় বড় গণকবরে পুঁতে ফেলা হয় এসব লাশ। আর নিহত কয়েদিদের লাশ ফেলতে অন্যান্য কয়েদিকে বাধ্য করা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের নেতৃত্বেই সরকারি বাহিনী এ হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে যুক্তরাজ্যভিত্তিক টিভি চ্যানেল ‘চ্যানেল ফোর’র ডকুমেন্টারি ‘সিরিয়া’স ডিসআপিয়ার্ড : দ্য কেস এগেইনস্ট আসাদ’-এর পরিচালক সারা আফসার গার্ডিয়ানে লেখা এক নিবন্ধে একই তথ্য জানান। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এসব কারাগারকে ‘কসাইখানা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। সিরিয়ার এক খ্যাত চিত্রশিল্পী নাজাহ আল বুকাইকেও এমন একটি জেলে রাখা বন্দি করে রাখা হয়েছিল।

নিহত কয়েদিদের বহন করে গণকবরে নিতে তাকেও বাধ্য করা হয় বলে সিএনএনকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি। তিনি বলেন, প্রথম যে লাশটা আমার ফেলতে হয়েছিল, তাতে একটা সাদা কাগজের ওপর একটা নম্বর লেখা ছিল।

২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার যুদ্ধ এখন শেষের পথে। আসাদ সরকার এখন কারাগারে নিহত ওই সব কয়েদির রেকর্ড প্রকাশ করছে। এরই মধ্যে প্রায় ৮০০ জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে। কিন্তু নিহতদের লাশ তাদের পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি।

Post a Comment

Previous Post Next Post