বৃষ্টির অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে সবজির দাম

বৃষ্টির অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে সবজির দাম


অনলাইন ডেস্কঃ টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে রাজধানীর বাজারগুলোতে। বৃষ্টির অজুহাতে দেশি পেঁয়াজ ও সবজির দাম বাড়ানো হয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় শুক্রবার দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫ টাকা বেশি দামে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

তবে রাজধানীর শান্তিনগর কাঁচা বাজারে এই পেঁয়াজ ৬৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। নানা ধরনের সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। অপরদিকে কারণ ছাড়াই ডিমের দাম বাড়ছে।
গত সপ্তাহে ১০০ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতি ডজন (১২ পিস) ফার্মের ডিম ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের দামও বেড়েছে। তবে ডাল, ভোজ্যতেল, রসুন, মাছ-মাংসসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম ছিল স্থিতিশীল। শুক্রবার রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ানবাজার, শান্তিনগর ও মালিবাগ বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।কারওয়ানবাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা সোনাই বলেন, সকালে পাইকারি পেঁয়াজের আড়তে পেঁয়াজের দাম বাড়তি ছিল। পাইকাররা বলছেন, দেশে কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে।এ কারণে রাজধানীতে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজ আসছে না। ঘাটতি থাকায় পেঁয়াজের দাম একটু বেড়েছে। পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনে তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে সবজির দাম।

৫-১০ টাকা বেশি দরে একাধিক সবজি বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি গাজর ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। বরবটি ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি শসা ৬০-৬৫ টাকা, বেগুন ৪০-৫০ টাকা, করলা ৬০-৬৫ টাকা, টমেটো ৯০-১০০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০-১৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪৫ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, আদা ১০০-১১০ টাকা ও রসুন ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাঝারি আকারের লাউ প্রতিটি ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

শান্তিনগর কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বৃষ্টির কারণে সবজির দাম একটু বাড়তি। টানা বৃষ্টি ও দেশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অনেক জায়গায় তলিয়ে গেছে সবজির ক্ষেত। এ কারণে সবজি সংগ্রহে হিমশিম খাচ্ছে পাইকাররা। বাজারে পণ্য সরবরাহ কম থাকায় দাম একটু বেশি।এদিকে সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে রাজধানীর বাজারগুলোয় গত সপ্তাহের ১০০ টাকা ডজনের ডিম ১০৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পুরান ঢাকার নয়াবাজারের ডিম বিক্রেতা মো. এখলাস বলেন, পাইকারি ডিমের বাজারে দাম বাড়তি। তাই বেশি দাম কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

রাজধানীর বাজারগুলোয় চাল বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।মালিবাগ বাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা মো. দিদার হোসেন বলেন, নতুন করে চালের দাম বাড়েনি। গত সপ্তাহের দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা কেজি দরে। মিনিকেট ও নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০-৬৫ টাকায়। এছাড়া বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা কেজি দরে।শান্তিনগর কাঁচা বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা বাপ্পারাজ চৌধুরী বলেন, প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন অজুহাতে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। এ সপ্তাহে বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তবে মনে হচ্ছে বৃষ্টির কারণে নয়, সামনে কোরবানির ঈদ তাই ব্যবসায়ীরা এক হয়ে এখন থেকেই পেঁয়াজের দাম বাড়াতে শুরু করেছে।

এজন্য সংশ্লিষ্টদের সজাগ ভূমিকা পালন করতে হবে। তা না হলে ঈদের আগে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়ানো হবে। অন্যদিকে মাছ ও মাংসের বাজারে অনেকটা স্বস্তি বিরাজ করছে। প্রতি কেজি রুই ও কাতলা ২৩০-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেজিপ্রতি বড় আকারের চিংড়ি এক হাজার টাকা, মাঝারি আকারের চিংড়ি ৭০০-৭২০ টাকা ও ছোট আকারের চিংড়ি ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া কেজিপ্রতি তেলাপিয়া ১৩০-১৪০ টাকা, কই ১৪৫-১৫৫ টাকা, সিলভার কার্প ১০০-১৩০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১১০-১৩০ টাকা, নলা ১২৫-১৩৫ টাকা ও সরপুঁটি ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাংসের বাজারও ছিল স্থিতিশীল। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি পাকিস্তানি মুরগি আকারভেদে ১৫০-৩০০ টাকা, লেয়ার ২০০ টাকা ও গরুর মাংস ৪৭০-৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post