দুই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন


অনলাইন ডেস্কঃ পতাকা অবমাননা ও ভুয়া জন্মদিন পালনের পৃথক দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েস জামিনের এ আদেশ দেন। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন শুনানি করেন তার আইনজীবী মো. মাসুদ আহমেদ তালুকদার। শুনানিতে তিনি বলেন, দুটি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ জামিনযোগ্য ধারা। তিনি বিগত তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। তাকে জামিন দেয়া হোক।

অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্র জানায়, এর আগে গত ১১ জুলাই এ দুই মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। ওই দিন আসামিপক্ষের আবেদন গ্রহণ করে জামিন শুনানির জন্য এদিন ধার্য করেন আদালত।

এরও আগে গত ৫ জুলাই রাজধানীর বকশীবাজার অস্থায়ী আদালতে পৃথক দুই মহানগর হাকিম ওই দুই মামলায় জামিন নাকচের আদেশ দেন। গত ২১ জুন ওই দুই মামলায় ঢাকার হাকিম আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

শুনানি শেষে ওই দুই হাকিম আদালত আদেশের জন্য ৫ জুলাই দিন ধার্য করেন। এরও আগে গত ১৪ জুন ওই দুই মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে হাকিম আদালতে জামিন আবেদন করা হয়।

সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগে বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী বাদী হয়ে পতাকা অবমাননা মামলাটি দায়ের করেন।

২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে এ মামলাটি দায়ের করা হয়। আদালত বাদীর অভিযোগের শুনানি নিয়ে মামলটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে রাজধানীর তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এরপর ঢাকা মহানগর হাকিম মো. নূর নবী ২২ মার্চ ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে খালেদা জিয়াকে হাজির হতে সমন জারির আদেশ দেন। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আদালত খালেদা জিয়াকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে বলেন। তা না হলে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যুসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দেন।

এরপর বেশ কয়েকটি ধার্য তারিখে উপস্থিত না হলে ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

অপরদিকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ভুয়া জন্মদিন পালনের মামলাটি দায়ের করেন। ওই বছরের ১৭ নভেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে ১৯ ও ২২ আগস্ট দুই জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী তার এইচএসসি পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী জন্মতারিখ ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।

১৯৯১ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট। তার বিবাহের কাবিননামায় জন্মদিন ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট।

সর্বশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পার্সপোর্ট অনুযায়ী তার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট। বিভিন্ন মাধ্যমে তার পাঁচটি জন্মদিন পাওয়া গেলেও কোথাও ১৫ আগস্ট জন্মদিন পাওয়া যায়নি।

এ অবস্থায় তিনি পাঁচটি জন্মদিনের একটিও পালন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীর জাতীয় শোক দিবসে আনন্দ উৎসব করে জন্মদিন পালন করে আসছেন। শুধু বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য তিনি ওইদিন জন্মদিন পালন করেন। #যুগান্তর

Post a Comment

Previous Post Next Post