সাভার থেকে অপহৃত দুই যুবক কুলাউড়ায় উদ্ধার


স্টাফ রিপোর্টারঃ ঢাকার সাভার আশুলিয়া এলাকা থেকে অপহৃত সুলেমান খন্দকার লালন (৩৩) ও জাকির হোসেন (৩৬) নামে দুই যুবককে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত অপহরণকারী ও এদের সহযোগী ১০ নারী-পুরুষকে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (২২ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য দেন কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শামীম মুসা।

এ ঘটনায় অপহৃত সুলেমান নিজে বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে বিবাদী করে কুলাউড়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।

আটককৃতরা হলেন, হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার ঘাটুয়ামারা গ্রামের মৃত আবুল মিয়ার ছেলে মিছির আলী ওরফে মন্তাজ মিয়া (৩৫), মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার জয়পাশা এলাকার মরম মিয়ার কলোনির বাসিন্দা মৃত আব্দুল রহিমের ছেলে সফিকুর রহমান (৪৫), হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট এলাকার কোনাগাও গ্রামের মৃত আইয়ুম আলীর ছেলে মো. কুদ্দুছ মিয়া (৩৮), হবিগঞ্জ থানার দানিয়ালপুর এলাকার মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে কিসমত আলী (৪২), কুলাউড়া থানার লংলা খাস আবাসন (টাটুরা) এলাকার বাসিন্দা (রাজনগর থানার জালালপুর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা) মৃত শরীয়াত উল্লার ছেলে আজর মিয়া (৫৫), কুলাউড়া থানার লংলা খাস আবাসন এলাকার বাসিন্দা (রাজনগর থানার পাচগাও এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা) আশিকুর রহমানের ছেলে লিটন আহমেদ রাব্বী (৩০), চুনারুঘাট থানার ঘাটুয়ামারা গ্রামের মিছির আলী ওরফে মন্তাজ মিয়ার স্ত্রী আয়শা খাতুন (৩০), কুলাউড়া থানার লংলা আবাসন এলাকার সালাউদ্দিনের স্ত্রী ছালেহা খাতুন (৫২), লংলা আবাসন এলাকার (রাজনগর থানার পাচগাও গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা) আশিক মিয়ার স্ত্রী হোসনা বেগম (১৮), কুলাউড়া থানার লংলা খাস আবাসন এলাকার বাসিন্দা (রাজনগর থানার পাচগাও এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা) লিটন আহমেদ রাব্বীর স্ত্রী নাছিমা বেগম (২৬) এবং বাবুল (পিতা-অজ্ঞাত)।

পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, অপহৃত সুলেমান খন্দকার ও জাকির হোসেন ঢাকার আশুলিয়া এলাকার গাজিরচট বাইপাইল মোড় সংলগ্ন জালাল উদ্দিনের মালিকানাধীন শামস্ ইঞ্জিনিয়ারিং (ইন্টার কলি-২) এর কর্মচারী। এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুইজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাদের নিজ বসতবাড়িতে থাই গ্লাসের দরজা-জানালার কাজের লোভ দেখিয়ে ২০ জুলাই শুক্রবার কুলাউড়ায় নিয়ে যায়। কুলাউড়ার লংলা খাস আবাসন এলাকার একটি ঘরে সুলেমান খন্দকার ও জাকির হোসেনের চোখ মুখ বেধে ফেলে। পরে হত্যার হুমকি দেখিয়ে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা।

পরদিন (২১ জুলাই) শনিবার কয়েকটি আলাদা আলাদা বিকাশ নাম্বারে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকা প্রদান করেন ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক জালাল উদ্দিন। টাকা পেয়ে অপহরণকারীরা সুলেমান ও জাকিরকে ঢাকাগামী শ্যামলী বাসে তুলে দিতে আসে। বাস কাউন্টারের ম্যানেজারের কাছে সুলেমান ও জাকির বিষয়টি জানান।

বাস কাউন্টার ম্যানেজার রাহেল বিষয়টি পুলিশকে জানালে সুলেমান ও জাকিরের দেওয়া তথ্যমতে কুলাউড়া থানার ওসি তদন্ত সঞ্জয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এবং এসআই জহিরুল ইসলাম তালুকদার, এসআই আতিক আনোয়র, এসআই বাদল পৃথক অভিযান পরিচালনা করে অপহরণে জড়িত ৭ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারীকে আটক করে পুলিশ।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৮টি মোবাইল ফোন, নগদ ৯ হাজার ৫ শত টাকা এবং বিকাশে জমাকৃত প্রায় ১ লক্ষ টাকা জব্দ করা হয়। বাকি টাকা এবং জড়িত অন্যান্যদের আটকের জন্য পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত আছে বলে পুলিশ জানায়।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শামীম মুসা জানান, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অপহরণের এই ঘটনা ঘটে। আটককৃত অপহরণকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আরও যারা জড়িত তাদেরকে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post