অনলাইন ডেস্কঃ রাজধানীর ফার্মগেটে বাসের চাপায় আহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুনী আক্তারের (২৬) পা বাঁচাতে অন্তত ৪ লাখ টাকা প্রয়োজন। তবে এখনও বাসের মালিক তার খোঁজ নেননি। রুনীর পরিবারের পক্ষেও এতো টাকা খরচ করে চিকিৎসা করানো সম্ভব না বলে জানিয়েছেন তার বাবা রফিকুল আলম।
তিনি জানান, চিকিৎসার যে খরচ এটা আমার পক্ষে বহন করা সম্ভব না। আমার মেয়ে যে অফিসে চাকরি করে, সেখান থেকেই খরচ বহন করা হচ্ছে। এখনও চিকিৎসার অনেক কিছু বাকি, এতো টাকা তার অফিস খরচ করে কি না তাও বুঝতে পারতেছি না।
গত বুধবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস রুনীকে চাপা দেয়। এতে তার ডান পা থেঁতলে যায়। মতিঝিল-চিড়িয়াখানা রুটের ‘নিউ ভিশন’ বাসের চালককে যাত্রীরা তখন আটক করে পুলিশে দেয়। বাসটি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী রুনী বর্তমানে কল্যাণপুরের ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছয় তলার ৬০৪ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শনিবার তৃতীয় দফায় তার পায়ের অস্ত্রোপচার হয়েছে। রবিবার তার স্বাস্থ্যেরও অবনতি হয়েছে।
তবে ঘটনার চারদিন পরও আহত শিক্ষার্থীর খোঁজ নেননি বাসমালিক বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। রুনীর বাবা রফিকুল আলম জানান, গত চারদিনে ৮৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিন দফায় পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আরও করতে হবে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কমপক্ষে দেড় থেকে দুই মাস রুনীকে হাসপাতালে থাকতে হবে। তার পায়ের মাংস নেই। সব থেঁতলে উঠে গেছে।
রফিকুল আলম অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর বাসের মালিকপক্ষের কেউ আমাদের কোনও খোঁজ নেয়নি। তারা একবারও জানতে চাইলো না আমার মেয়েটার চিকিৎসা কিভাবে হচ্ছে?
রুনীর বাবা স্যানিটেশনের ঠিকাদার হিসাবে কাজ করেন। জিগাতলার ট্যানারি মোড়ের ভাড়া বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন। দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে রুনী আক্তার দ্বিতীয়। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ। রুনী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইউডা) এমবিএ’র শিক্ষার্থী। এমবিএ পড়ার পাশাপাশি তিনি তেজগাঁওয়ের রেলগেট এলাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘র্যাংগস প্রপার্টিজ লিমিটেডে’ চাকরি করেন।
ঘটনার দিন বাসা থেকে বের হয়ে অফিসে যাচ্ছিলেন রুনী। ফার্মগেটে পৌঁছালে বাসটি তাকে চাপা দেয়। এর পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বাসচালক আব্দুল মোতালেব বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। তেজগাঁও থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সুমিত কুমার সাহা বলেন, আমরা আইনগতভাবে বাস চালককে আদালতে চালান দিয়েছি। সে কারাগারে আছে, কিন্তু মালিক এখনও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। বাসটি আমাদের থানা হেফাজতে রয়েছে। আমরা আদালতকে তা অবহিত করেছি।
