ক্রিড়া প্রতিবেদকঃ নতুন বছরের বছরের প্রথম দিনটিতেই জরিমানার সাজা পেলেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। বিপিএলের পঞ্চম আসরে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটকে 'জঘন্য' বলায় তাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
একইসঙ্গে দেওয়া হয়েছে সতর্কবার্তা। বিসিবি সভাপতির মত, তামিমের ওসব কথাবার্তা দেশের ক্রিকেটের জন্য 'বিপজ্জনক'।
ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের ২ ডিসেম্বর বিপিএলে রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ম্যাচ। ওই ম্যাচটিতে ৯৭ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল রংপুর। এরপর ওই ম্যাচ জিততে তামিমের কুমিল্লাকেও অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছিল। ম্যাচ শেষে উইকেটকে টি-টোয়েন্টির জন্য 'জঘন্য' বলেন তামিম। পাশাপাশি শের-ই-বাংলার আউটফিল্ড ও কিউরেটরের সমালোচনাও করেছিলেন সমালোচনা করেন।
একই ম্যাচ শেষে উইকেটের সমালোচনা করেছিলেন রংপুর অধিনায়ক মাশরাফিও। তবে, তামিম ইকবাল ছিলেন বেশি আক্রমণাত্মক।
তাই তাকে শোকজ করে বিসিবি। গত ১৪ ডিসেম্বর শুনানির পর আজ বছরের প্রথম দিনে তার শাস্তির সুপারিশ করেছে বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি। শুনানিতে অবশ্য নিজের দোষ স্বীকার করেছিলেন দেশসেরা ওপেনার।
আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলেন, 'ওকে শক্ত আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। অনেকেই বলছেন, মাশরাফি, মোসাদ্দেক একই কথা বলেছে উইকেট নিয়ে। বিদেশি ক্রিকেটাররাও বলেছে। কিন্তু তামিমের ব্যাপারটি ছিল পুরো ভিন্ন। সবকিছু আনুষ্ঠানিকভাবে বলতে পারছি না, কারণ সেটির প্রভাব বাংলাদেশের ক্রিকেটের ওপর আসতে পারে। '
পাপন আরও বলেন, 'তবে ওর (তামিমের) কথাবার্তা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ছিল বিপজ্জনক। এটা আমাদের ক্রিকেটের প্রচুর ক্ষতি করতে পারে বা পারত। এজন্য আমরা মনে করেছি, সহ-অধিনায়ক হিসেবে কথাবার্তা বলায় ওকে আরও অনেক সতর্ক হতে হবে। '
নাজমুল হাসানের কথায় বোঝা গেল, তামিমের সেই দিনের বক্তব্যের মধ্যে বিসিবির মূল আপত্তির জায়গাটা উইকেট নয়। বিসিবি প্রধানের মূল আপত্তি তামিম আউটফিল্ড নিয়ে কথা বলায়, 'একটা পিচ নিয়ে ক্রিকেটাররা বলতেই পারে যে টি-টোয়েন্টির জন্য আদর্শ নয়। কিন্তু আপনি আউটফিল্ড নিয়ে বলবেন কেন? কিউরেটর নিয়ে বলবেন কেন?'
পাশাপাশি নাজমুল নতুন ভাবে সংস্কার হওয়া হোম অব ক্রিকেটের একটি সমস্যাও মনে করিয়ে দেন, 'আমাদের আউটফিল্ড এর মধ্যেই দুটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়ে বসে আছে। চারটা হলে ঢাকা শহরে আর কোনো খেলা হবে না। তো এটা কি ধরনের কথাবার্তা? একজন অধিনায়ক তো এ ধরনের কথা বলতে পারেন না! আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। '
বিপিএলের মাঝখানেই জাতীয় টেস্ট দলের নেতৃত্বে রদবদল হয়। সরিয়ে দেওয়া মুশফিকুর রহিমকে। তার ডেপুটি হিসেবে থাকা তামিম ইকবালকেও সরানো হয়। এর পেছনেও নাকি তামিমের এই মন্তব্য অন্যতম কারণ বলে বিসিবি সভাপতির কথায় ফুটে উঠল।
নাজমুলের ভাষ্য অনুযায়ী, 'অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক হলে বা যে সমস্ত ক্রিকেটারের মিডিয়ার কাছে যাওয়ার সুযোগ থাকে, তাদেরকে কথাবার্তা চিন্তা ভাবনা করে বলতে হবে। এটার জন্য নেতৃত্বে বদল হয়েছে, তা নয়। তবে এটিও কারণগুলোর মধ্যে একটি। '