স্টাফ রিপোর্টারঃ বিপরীতে চলা মাছ ইলিশ। নোনা পানির এই মাছ মিঠা পানিতে পাওয়া যায় কেবল প্রজনন মৌসুমে। হাতে গোনা কয়েকটা নদী ছাড়া অন্যান্য নদ-নদীতে কদাচিৎ ইলিশ প্ওায়া যায়। প্রতি বছর পদ্ধা-যমুনা-ব্রহ্মপুত্র হয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ চলে যায় ভারতের আসাম রাজ্যের বিভিন্ন নদীতে।
দেশের সর্ব-বৃহত্তম হাওর মিঠা পানির হাকালুকিতে পাওয়া গেছে ইলিশ। বিগত ৪/৫ বছর যাবৎ ইলিশ পাওয়া গেলেও এবার সংখ্যায় কিছুটা বেশী ইলিশ পায় জেলেরা। এ নিয়ে হাকালুকি পাড়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি হয়। ওই সময় অনেকে ইলিশ দেখার জন্য ছুটে গিয়ছিলো হাকালুকি হাওরে।
বিগত বছরের তুলনায় এবার হাকালুকিতে বেশী মাছ ধরা পড়ে। অতিমাত্রায় মাছ পাওয়ার কারনে হাকালুকির কুলাউড়া-জুড়ি-বড়লেখা অংশের বিভিন্ন অঞ্চলের জেলেরা বেশ উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে মাছ ধরেন। কে কতো বেশি মাছ ধরতে পারে এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে চলে সুপ্ত প্রতিযোগীতা। আর প্রতি জালে কম বেশী ইলিশ ধরা পড়ে।
জানা যায়, এখন চলছে ইলিশের প্রজনন মৌসুম। প্রজননের এই সময় ডিম ছাড়ার জন্য ইলিশ উজানের উদ্দ্যেশ্যে রওয়ানা দেয়। যদিও এখন ডিম ছাড়ার শেষ পর্যায়। প্রজনন মৌসুমে সাগরের নোনা পানি ছেড়ে মা ইলিশের ঝাঁক নদীর মিঠা পানিতে ছুটে আসে। কোন বাঁধা না পেলে ৫’শ থেকে হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ভেতরে চলে যায় ইলিশ। সাগরের মোহনার সঙ্গে মেঘনার সম্পর্ক। আবার মেঘনার সঙ্গে পদ্ধা, মহানন্দা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, সুরমা, কুশিয়ারাসহ অনেক নদীর যোগসূত্র।
ফলে এসব নদ-নদীতে তাই তীব্র স্রোতের বিপরীতে চলা ইলিশ এসব পাওয়া যাচ্ছে। মেঘনার সূত্রধরে কুশিয়ারায় ইলিশ আসে।
গত দু’বছর ফ্লাশ-ফ্লাড এর কারনে কুশিয়ারা নদীর সাথে হাকালুকির সংযোগস্থলে কোন বাঁধা না পাওয়ায় ইলিশ অবাধে ঢুকে পড়ে হাকালুকিতে। শুধুমাত্র ফিডিংয়ের সময় তারা উজানে উঠে। স্বাভাবিক সময় তারা মিঠা পানিতে আসে না। তাছাড়া মিঠা পানিতে বেশীদিন বাঁচবেও না। এমনটি জানিয়েছেন হাকালুকি তীরবর্তী কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. সুলতান মাহমুদ।
তিনি বলেন, মা ইলিশের পেটে যখন ডিম আসে তখন সে খাবার বন্ধ করে দেয়। ফলে কোন খাবার গ্রহণ না করেই টানা ২ মাস ইলিশ বেঁচে থাকে। তাই এসব ইলিশ বিশেষ কিছুদিন অবস্থান করলেও কোন সমস্যা হয় না।
তিনি আরও বলেন- গত ৪/৫ বছর ধরে হাকালুকিতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তবে সংখ্যায় খুব কম। গেলো বছর এবং এবছর ফ্লাশ ফ্লাড এর কারনে সংখ্যাটা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব ইলিশের সাইজ হবে ৩০০-৪০০ গ্রাম।