অনলাইন ডেস্কঃ কথিত জিনের ভয়ে চাঁদপুর শহরে ছয়তলাবিশিষ্ট ভবন রোজ গার্ডেন-এ বসবাসকারী ২৩টি পরিবারের মধ্যে এখন আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে। বিষয়টি নজরে যাওয়ার পর থানা পুলিশ খোঁজ নেওয়া শুরু করেছে।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এটি মানসিক সমস্যা। চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর উপ-মহাব্যবস্থাপক মনিরুল ইসলাম পরিবার নিয়ে কয়েক মাস ধরে ট্রাক সড়কের রোজ গার্ডেনের চতুর্থ তলায় থাকেন। তিনি বলেন, হঠাৎ করে পাঁচ দিন ধরে বাসায় থালাবাটি ছুড়ে ফেলা, জিনিসপত্র এলোমেলো করা এবং দেয়ালে ছায়া ঘোরাফেরা করছে। গত ১৫ আগস্ট থেকে বাসায় একা আছি। চেয়ার নিয়ে টানাটানিও হয়েছে। এক পর্যায়ে ভয়ে দৌড়ে পাশের বাসায় আশ্রয় নিই। পরে অন্যরা সেখানে গিয়ে এসব দৃশ্য দেখে।
তিনি জানান, এমন পরিস্থিতিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের বাসায় ফিরে না আসতে অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে গত শুক্রবার তিনি চতুর্থ তলার বাসা ছেড়ে পঞ্চম তলায় ওঠেন। সেখানেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। ওই দিনই তিনি একজন মাওলানার কাছ থেকে তাবিজ-কবজ নিয়ে আসেন। এমন কাণ্ডকারখানা দেখে এরই মধ্যে সেখানে মাওলানাদের ডেকে পবিত্র কোরআন খতম দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কথিত জিন কোনো অবস্থায় বাসা ছাড়ছে না। রোজ গার্ডেনের মালিক শাহজালাল মোল্লা প্রবাসে থাকেন। বাড়িটির তত্ত্বাবধায়ক আবু তাহের বলেন, ঘটনাটি প্রথমে আমাদের বিশ্বাস হয়নি। কারণ আট বছর আগে তৈরি করা এই বাড়িতে আর কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি।
একই ফ্ল্যাটের অন্য ভাড়াটিয়া ওষুধ ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির বলেন, কয়েক দিন ধরে বাসায় কথিত জিনের আলামত আমরাও দেখিছি। এখন এ নিয়ে অন্য বাসার পরিবারগুলোয় এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আরেক ভাড়াটিয়া শাওন বলেন, জিনের আলামত লক্ষ করেছি। তাই নিরাপত্তার খাতিরে এই বাসা ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছি। গত রবিবার বিকেলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বাসাটি ছেড়ে দিব।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. ওয়ালী উল্যাহ বলেন, ওই বাসায় জিনের উপদ্র্রব সম্পর্কে পুলিশকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নজরদারির মধ্যে নিয়ে সেখানে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে নিরাপত্তা দিতে সেখানে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সঙ্গে থানা পুলিশের টহলের ব্যবস্থা করা হবে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মতিউর রহমান বলেন, এটি মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা। একজনের থেকে অন্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। কেউ আতঙ্কিত হয়ে অসুস্থ হলে তার চিকিৎসা দেবে স্বাস্থ্য বিভাগ। সুত্রঃ বিডিপ্রতিদিন
