৯ দফা দাবি নিয়ে মানববন্ধনে কমলগঞ্জে চা শ্রমিকরা



কমলগঞ্জ প্রতিনিধিঃজাগো চা শ্রমিক জাগো” এই স্লোগান নিয়ে চা বাগানে ভূমি অধিকার নিশ্চিতকরণসহ ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মানববন্ধন কর্মসূচী পালণ করেছে চা শ্রমিক ছাত্র ও যুবকরা। ঢাকাসহ দেশের ১৩ টি স্থানেও একযোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। শুক্রবার (২৮ জুলাই) সাড়ে ১১টায় উপজেলার শমশেরনগর চৌহমুহনায় মানববন্ধন এ কর্মসূচী পালন করা হয়। চা শ্রমিক সন্তানদের সংগঠন জাগরণ যুব ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাসের নেতৃত্বে শমশেরনগর চৌমুহনায় অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন কর্মসূচীতে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো: জুয়েল আহমদ, গোপাল মাদ্রাজী, রাম ভজন রবিদাস, মিঠুন রিকিয়াশন, সনাতন লোহার, কৈলাশ রবিদাস, রাজ কুমার রবিদাস ও রঞ্জিত রবিদাস। মানববন্ধন কর্মসূচীতে আয়োজক প্রধান মোহন রবিদাস বলেন, চা শ্রমিকরা এ দেশের নাগরিক। চা শ্রমিকদের ভোটে সিলেট বিভাগের ১টি আসনের সাংসদ নির্বাচিত হলেও সাংসদরা সংসদে গিয়ে চা শ্রমিকদের দুঃখ দুর্দশার কথা বলেন না। চা শ্রমিকরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হলেও সরকারীভাবে এখন পর্যন্ত চা শ্রমিকদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে দেশের অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী চাকুরী থেকে সকল ক্ষেত্রে যে সুবিধা ভোগ করছে চা শ্রমিকরা এ সুবিধা ভোগ করতে পারছে না। চা শ্রমিকদের মাঝে ৮৫টি জাতি সম্প্রদায় ও তাদের নিজস্ব ঐতিয্য সংস্কৃতি রয়েছে। তা বিকাশের কোন সুযোগ পাচ্ছে না। চা শ্রমিক পরিবার ও চা শ্রমিক ছাত্রদের ৯ দফা দাবি আদায়ে সরকারকে এক সপ্তাহের সময় বেধে দেওয়া হয় এ কর্মসূচী থেকে। অন্যতায় আগামীতে আরও বড় ধরনের কর্মসূচী পালন করা হবে বলেও জানান তারা। মোহন রবিদাস আরও জানান শুক্রবার একযোগে ঢাকা প্রেস ক্লাবের সামনে, হবিগঞ্জে জেলা প্রসাসকের কার্যালয়ের সামনে, সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবলসহ মোট ১৩টি স্থানে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। দাবিকৃত ৯ দফা হচ্ছে যথাক্রমে চা বাগানে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তালিকায় অন্তুর্ভুক্ত করা, দেশের সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারী চাকুরীতে কোটা সংরক্ষণ করা, চা বাগানে চা জনগোষ্ঠীর ভুমি অধিকার নিশ্চিত করা, চা জনগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ইত্যাদি সংরক্ষণের জন্য একটি কালচারাল একাডেমী প্রতিষ্ঠা করা, চা বাগানে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, কারিগরি বিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা, জাতীয় বাজেটে চা জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্ধ দেওয়া, চা বাগানের বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে একটি কমিশন বা মন্ত্রণালয় গঠণ করা, চা বাগান এলাকায় পর্যাপ্ত সরকারী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা ও চা বাগানের ছাত্র-ছাত্রীদের কারিগরি প্রশিক্ষণসহ বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা করা।

Post a Comment

Previous Post Next Post