বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুলাউড়া উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। ঈদের আগের
দিন ২৫ জুন থেকে ফের অবনতি শুরু হয়। বর্তমানে তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ৫টি
আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে বানভাসী মানুষের সংখ্যা। উপজেলার ভুকশিমইল
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির জানান, ২৪ জুন থেকে ফের ভারী
বর্ষণের ফলে আর সীমান্তের ওপার থেকে আসা ঢলে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি
হয়েছে। ইউনিয়নের সাদিপুর, মহেষগৌরী, মদনগৌরী, কাইরচাক, কাড়েরা, জাব্দা,
শশারকান্দি এলাকার ৮০ ভাগ মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়া। হাওর এলাকায় গত ৩ মাস থেকে
গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছে মানুষ। গোখাদ্য সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে।
ব্রাহ্মণবাজার
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মমদুদ হোসেন জানান, তার ইউনিয়নে দুটি আশ্রয় কেন্দ্রে
জালালাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ছিলো ১৫টি পরিবার ২৯ জুন বৃহস্পতিবার আরও
২টি পরিবার নতুন এসেছে। শ্রীপুর মাদ্রাসা কেন্দ্রে ১২টি পরিবার ছিলো
বেড়েছে নতুন ৩টি পরিবার। ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডেে ব্রাহ্মণবাজার,
পূর্বগুড়াভুই, কানুপট্রি, ১নং ওয়ার্ডের শ্রীপুর ও লামাপাড়া, ৩নং ওয়ার্ডে
নাছনী এবং ৭নং ওয়ার্ডের উত্তর হিঙ্গাজিয়া গ্রাম বন্যায় সবচেয়ে বেশি
ক্ষতিগ্রস্থ। কাদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান ছালাম জানান,
উচাইল হোসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে ১৪টি ও ছকাপর
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। যেভাবে পানি
বাড়ছে তাতে আশ্রিতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তিনি জানান।
এছাড়া
বরমাচাল ইউনিয়নের রাউৎগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে ১০টি
পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তাছাড়া জয়চন্ডী ইউনিয়নে কুলাউড়া শাহবাজপুর রেললাইনে
আরও ৫-৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
কুলাউড়া
পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের দেখিয়ারপুর ও ১নং ওয়ার্ডের সোনাপুর, বিহালা ও
আহমদাবাদ এলাকায় বন্যায় শতকরা ৭০ ভাগ মানুষের ঘরে বন্যার পানিতে। তাছাড়া
এসব এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুলগুলো বন্যা কবলিত। ০১ জুলাই থেকে শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান খোলা। কিন্তু বন্যা কবলিত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নেয়া
সম্ভব হবে না। কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বি
জানান, ২২ জুন বন্যার্থ মানুষের জন্য ৪৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ আসে। যেগুলো
২৯ জুন থেকে বিতরণ শুরু হয়েছে। বর্তমানে ৫টি আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়া কুলাউড়া
ইয়াকুব তাজুল মহিলা কলেজ ও রাবেয়া আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরও দুটি নতুন
আশ্রয় কেন্দ্র চালু হওয়ার কথা রয়েছে।