অনলাইন ডেস্কঃ
ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির
অবনতি ঘটেছে। বন্যায় উপজেলার প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ পানিবন্দি। এলাকার
লোকজন গরু-বাছুর, হাঁস, মুরগিসহ অন্যান্য প্রাণী নিয়ে দুর্ভোগের সাথে
দিনাতিপাত করছেন।
শনিবার
(১ জুলাই) উপজেলার ভেলকোনা, সুরিখান্দি, সাইল খান্দি, গংগাপুর, ছত্তিস,
পিটাইটিক, বাগমারা, ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার, ভরাউট, ৯০ মেগাওয়াট, বারহাল,
ঘিলাছড়া, খড়িয়া টিলা, পাঠান চক, আটঘর, দিনপুর, চানপুর, দনারামসহ প্রায় ৫০টি
গ্রামের মানুষের বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে।
বন্যার
পানি দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি দিনদিন মারাত্মক রূপ ধারণ করছে।
বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন।
ফেঞ্চুগঞ্জের
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার,
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থান তলিয়ে গেছে। বন্যায় শত শত
মাছের খামার পানিতে ভেসে গেছে। বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায়
যাদের নৌকা কিংবা কলার ভেলা বাহন হয়ে ওঠেছে। বন্যায় উপজেলার প্রায় সব সড়কে
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
পানিবন্দি এসব মানুষ জানান, আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। ছেলে বাচ্চা নিয়ে কিভাবে খাবো আর দিন কাটাবো তা কিছুই বোঝতে পারছিনা।
হাকালুকি
হাওর সংলগ্ন ঘিলাছড়ার কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, আমাদের মাছের খামার পানির
সাথে মিশে গেছে। এর আগে পানিতে ফসল গেছে। আমাদের লসের উপরে লস।
ফেঞ্চুগঞ্জ
বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ব্রিজের নিচ থেকে বাজারের রাস্তায় পানি
থাকায় তাদের ব্যবসা বাণিজ্য পুরো স্থবির। রাস্তা ভাঙা থাকায় আরো দুর্ভোগ
পোহাতে হচ্ছে বলে জানান তারা।
এদিকে,
শনিবার বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার
বন্যাপ্লাবিত গ্রাম পরিদর্শন করেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. রাহাত
আনোয়ার। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, নদীতীরবর্তী এলাকার গ্রামগুলো প্লাবিত
হয়েছে বেশি। বন্যার্ত ব্যক্তিদের সহায়তায় তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসনের
পক্ষ থেকে ১২৭ মেট্রিক টন চাল ও ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
প্রয়োজনে এ সহায়তা আরও বাড়ানো হবে।
সিলেটের
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ভারতের মেঘালয় ও আসাম
রাজ্যে টানা বৃষ্টির কারণে বরাক নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় বরাকের শাখা নদী
সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
“নদীর পানি তীর উপচে প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। ফলে সুরমা ও কুশিয়ারা অববাহিকায় নদীর তীরের গ্রামগুলো তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে।”
ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।