অনলাইন ডেস্কঃ
করমর্দন করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টি নিয়ে
একাধিকবার খবরের শিরোনামও হয়েছে এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু ট্রাম্পের
সেই করমর্দন ছাপিয়ে গেছে মোদির আলিঙ্গনে। যা দেখে হতবাক হয়ে গেছেন ট্রাম্প
নিজেই।
আনন্দবাজার
পত্রিকার খবর, হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনের লনে তখন সাংবাদিকদের ভিড়। যৌথ
বিবৃতি দেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট
ডোনাল্ড ট্রাম্প। অপেক্ষায় বিশ্বের সব বড় মিডিয়ার কর্মীরা। তবে বিবৃতি দিতে
মাইক্রোফোনের দিকে উঠে যাওয়ার আগে প্রথমে ট্রাম্পের কাছে এগিয়ে গেলেন
মোদি। তাঁকে আচমকাই জড়িয়ে ধরেন ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান। ট্রাম্পের চোখমুখে
তখন দৃশ্যত অস্বস্তির ছাপ। যদিও তা কাটিয়ে উঠে মোদির পিঠ বার কয়েক চাপড়ে
দেন তিনি। এর পরে ছিল করমর্দনের পালা।
খবরে
আরও বলা হয়েছে, একবার নয়, গত সোমবার গোটা দিনে ট্রাম্পকে তিন, তিনবার
আলিঙ্গন করেন মোদি। আর গোটাটাই সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে। মোদির ওই
আলিঙ্গন ট্রাম্পের কাছে যে রীতিমতো অস্বস্তির ঠেকেছে, সেই দাবি নিয়ে
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সরগরম। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল বন্ধুত্বের সেই
‘উষ্ণতার’ ছবি। সে দিন সন্ধ্যাতেও একইভাবে মোদি রোজ গার্ডেনের লনে দু'বার
আলিঙ্গন করেন ট্রাম্পকে। পরে হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়ার সময় আরও একবার।
প্রথমবার বিবৃতি দিতে ওঠার আগে, ট্রাম্পকে আলিঙ্গন করেন মোদি। সেই সময়
অস্বস্তিতে পড়েও মোদির পিঠ চাপড়ে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এর পরে দ্বিতীয় বার
যখন ট্রাম্পকে আলিঙ্গন করেন মোদি, তখন তাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাঁধের
কাছে মাথা রাখতে দেখা যায়। এখানেই শেষ নয়। প্রায় একই ছবিই ফের দেখা গেল
প্রধানমন্ত্রী হোয়াইট হাউস ছেড়ে বের হওয়ার সময়। করমর্দনের পর আলিঙ্গন।
ট্রাম্পের বাঁ-কাঁধে একবার এবং অপর কাঁধে আরও একবার মাথা রাখেন মোদি। এবারও
মোদির পিঠ চাপড়ে তার প্রত্যুত্তর দেন ট্রাম্প। এ সব দৃশ্যই ধরা পড়ে
মিডিয়ার ক্যামেরায়।
গত
ফেব্রুয়ারিতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে প্রায় ১৯ সেকেন্ড
করমর্দনের পর আলিঙ্গল করে সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই ফেলে দেন ট্রাম্প। পরে তিনি
অবশ্য সেই দীর্ঘ করমর্দন নিয়ে যুক্তিও দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, “আমাদের
মধ্যে অত্যন্ত গভীর রসায়ন রয়েছে। ” শুধুমাত্র শিনজো আবে-ই নন, গত
জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে'র সঙ্গে হাত ধরে
হেঁটে মিডিয়া সরগরম করে তুলেছিলেন ট্রাম্প।
ভারতীয়
এই গণমাধ্যমের আরও বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও কম যান
না। তিনিও বিশ্বের বিভিন্ন নেতাকে এর আগে আলিঙ্গন করে মিডিয়ার চর্চায় উঠে
এসেছেন। ২০১৪ সালে তৎকালীন অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবট, গত বছর
কিয়োটোতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বা দিল্লিতে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট
বারাক ওবামা অথবা চলতি বছরে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকো— বিশ্বের
তাবড় নেতাকে আলিঙ্গনাবদ্ধ করেছেন মোদি।
ভারতীয়
সংস্কৃতিতে আলিঙ্গনকে সৌহার্দ্যের অংশ হিসাবেই দেখা হয়। তবে, বিশ্বের অন্য
অনেক দেশ আছে যেখানে এই রীতি তেমনভাবে প্রচলিত নয়। আবার ব্যক্তি বিশেষেও
‘আলিঙ্গন’ পছন্দ-অপছন্দের বিষয় থাকে। সব মিলিয়ে ঠিক কী কারণে ট্রাম্পের
অস্বস্তিদায়ক মুখ দেখা গিয়েছিল, তা নিয়ে যদিও মার্কিন মিডিয়ায় কিছু লেখা
হয়নি।