পাঁচ তলা থেকে পড়ে গিয়েও বেঁচে গেল এই শিশুটি

অনলাইন
ডেস্কঃ পাঁচ তলা থেকে পড়ে গিয়েও বেঁচে গেল আড়াই বছরের শিশু গুনগুন। এটি গল্প বা সিনেমা-নাটকের দৃশ্য নয়, বাস্তব। অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া শিশুটিকে দেখতে ভিড় করছেন এলাকার লোকজন। ঘটনাটি ভারতে। এয়ারপোর্ট আড়াই নম্বর গেটের মতিলাল কলোনির ‘পার্পল গ্লো’ আবাসনে। সে দিনের ঘটনার কথা মনে করলে এখনো কেঁপে উঠছেন তার বাবা সঙ্গম আর মা সঙ্গীতা গুপ্ত। জামশেদপুরের বাসিন্দা গুপ্ত পরিবার এই ফ্ল্যাটে এসেছেন বছর পাঁচেক আগে। গুপ্ত পরিবার জানায়, ঐদিন (২১ জুন) সকাল এগারোটা নাগাদ ফ্ল্যাটে খেলছিল গুনগুন। সঙ্গম আর সঙ্গীতাও ছিলেন। ফ্ল্যাটের দক্ষিণ দিকের ছোট বারান্দাটা গ্রিল দিয়ে ঘেরা। গ্রিলের একটা অংশ জামাকাপড় শুকোনোর জন্য খোলা যায়। সেদিন ওই অংশটা যে খোলা রয়েছে, তা আমরা খেয়াল করিনি। বারান্দার বেসিনে মুখ ধুচ্ছিলাম। কোন ফাঁকে গুনগুন নিঃশব্দে এসে গ্রিল বেয়ে উঠে ওই খোলা অংশে পৌঁছে গিয়েছে। হাত বাড়িয়ে ধরার আগেই চোখের সামনে আমাদের মেয়ে গ্রিলের ওই খোলা জায়গাটা দিয়ে পড়ে গেল। আমার চোখের সামনে সব কেমন ধূসর হয়ে যাচ্ছিল। কিছু শুনতে পাচ্ছিলাম না। পাঁচ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাসা ফিরেছে শিশু গুনগুন। ফেরার পর হইহই করে মিষ্টিমুখ হয়েছে তার ফ্ল্যাটে এবং পাড়ায়।চিকিৎসকেরা বলছেন, পাঁচ তলা থেকে নীচে পড়ে এক বোতল রক্তও লাগল না, মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে আহত হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ি চলে গেল, এমন ঘটনা বিরল। অ্যাপোলো গ্লেনেগেলস হাসপাতালের চিকিৎসকেরাই জানিয়েছেন, পাঁচ তলার উপর থেকে গুগন পড়েছিল একটি পাঁচিলের ওপরে। তবে উপুড় হয়ে। উপুড় হয়ে পড়ায় মাথায় তেমন আঘাত লাগেনি। আর পাঁচিল থকে নীচে পড়ার সময় পড়ার সময় চিৎ হয়ে পড়েছিল মেয়েটি। কিন্তু তার মাথা বাঁচিয়ে দিয়েছে আবাসনের নীচে ছড়িয়ে থাকা কিছু থার্মোকলের প্যাকেট। অত উঁচু থেকে উপুড় হয়ে পড়াতেও কীভাবে প্রায় অক্ষত থাকল গুনগুন? ওর তো বুকের পাঁজর ভেঙে যাওয়ার কথা, ফুসফুসও ফেটে যেতে পারত। হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক বৈশালী শ্রীবাস্তব ও ইনটেনসিভ কেয়ার চিকিৎসক অভিষেক পোদ্দার জানিয়েছেন, শিশুটির ফুসফুস, প্লীহা, অন্ত্রে ধাক্কা লেগে শরীরের ভিতরে জায়গায় জায়গায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। কাঁধের হাড়, শিরদাঁড়ার একটি হাড় ভেঙেছে। কিন্তু কোনও আঘাতই খুব গুরুতর নয়। নিরাপত্তাকর্মী শঙ্কর ভৌমিক জানান,হঠাৎ ধুপ করে ভারী কোনো জিনিস পড়ার আওয়াজ পেলাম। উপর থেকে চিৎকারও শুনলাম। তাড়াতাড়ি গিয়ে দেখি, বাচ্চাটা অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছে।। কোলে করে উঠিয়ে আনলাম। ও বেঁচে ফিরেছে এখনও ভাবতে পারছি না।

Post a Comment

Previous Post Next Post