ঘূর্ণিঝড় 'মোরা'র নামকরনের ইতিবৃত্ত

ঘূর্ণিঝড় 'মোরা'র নামকরনের ইতিবৃত্ত
অনলাইন ডেস্কঃ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়া ঘূর্ণিঝড় 'মোরা' বাংলাদেশের ভোরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হেনেছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, থাইল্যান্ডের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এই ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করা হয়েছে 'মোরা'।

'মোরা' শব্দটি একটি থাই শব্দ। এর ইংরেজি হচ্ছে- 'স্টার অব দ্য সি'। বাংলা করলে শব্দটির অর্থ 'সাগরের নক্ষত্র' বা 'সাগরের তারা'।

গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে অহরহ ঘূর্ণিঝড় হয়। তথ্য সংরক্ষণ ও বোঝানোর সুবিধার জন্য আগে থেকেই এসব ঝড়ের নাম ঠিক করে রাখা হয়।

অতীতে ঝড়ের নামকরণ করা হতো অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু এটি প্রকাশের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়। যেমন- '১৮.৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১.৩ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশের ঝড়টি এখন বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে' -এটি বলার চেয়ে 'ঘূর্ণিঝড় মোরা ধেয়ে আসছে' বলা অনেক সহজ।

১৯৪৫ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়।

সাধারণত ওয়ার্ল্ড মেটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) ও জাতিসংঘের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এসকাপ এসব ঝড়ের নামকরণ করে থাকে।

আঞ্চলিক পর্যায়ের নিয়ম অনুসরণ করে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়। পূর্বনির্ধারিত নামের তালিকা থেকে একেকটি ঝড়ের নাম দেয়া হয়।

১৯৯৯ সালে ওডিশায় ঘূর্ণিঝড়ের পর ২০০০ সালে ডব্লিউএমও ও এসকাপ তাদের বৈঠকে উত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরুর বিষয়ে একমত হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে থাইল্যান্ডে এসকাপ ও ডব্লিউএমওর ঘূর্ণিঝড় বিশেষজ্ঞ প্যানেলের বৈঠকে ছয়টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম আগাম ঠিক করে রাখা হয়। সেখানেই এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়েছিল 'মোরা'।

পর্যায়ক্রমে যে ঘূর্ণিঝড়গুলো আসবে, এগুলোর নাম যথাক্রমে ওচি, সাগর, ম্যাকুনু ও ডায়ে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, আগে শুধু নারীদের নামে ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করা হতো। যেমন- রিটা, ক্যাটরিনা, স্যান্ডি, নার্গিস, সিডর, রেশমী, বিজলী ইত্যাদি।

বর্তমান তালিকায় সমানভাবে পর্যায়ক্রমে নারী ও পুরুষের নাম রয়েছে। ঝড় যেহেতু মৃত্যু ও ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত, তাই কোনো নাম দ্বিতীয়বার ব্যবহার করা হয় না।

Post a Comment

Previous Post Next Post