নিউজ ডেস্কঃ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ছোট বহুলা গ্রাম থেকে নিখোঁজের ৭ দিন পর আকাশ (৭) নামের এক শিশুর গলিত (কংকাল) উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আমিনের স্বীকারোক্তি মতে পুলিশ শিশুর ১৯ টি হাড় উদ্ধার করে।
রোববার
(৭ মে) বিকালে ঘাতক আমিন মিয়া ওরফে সুমন (২০) কে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
আমিন মিয়া ওরফে সুমন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ কাওছার আলম এর
আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়।
৩০
মিনিটের জবানবন্দিতে সে জানায়, গত ২৮ এপ্রিল সকাল ৯টায় ধান কাটার কথা বলে
শিশু আকাশকে প্রলোভন দিয়ে পার্শ্ববর্তী সিরাজ মিয়ার জমিতে নিয়ে যায়। সেখানে
শ্বাসরোদ্ধ করে হত্যা করে পানিতে ডুবিয়ে রাখে।
হত্যাকান্ডের
বিবরণে সে আরো জানায়, আকাশের বাবা ছোটবহুলা জাঙ্গাল সড়কের কাদুয়ার বাড়ির
বাসিন্দা। নিহত আকাশের পিতা খুর্শেদ আলী এবং সুমনের পিতা ইসমাইল মিয়ার মাঝে
জমি ও ধান কাটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এনিয়ে তাদের মাঝে
মামলা মোকদ্দমাও হয়। কয়েকদিন পূর্বে আবারো উভয় পরিবারের মাঝে ঝগড়া হয়। এ
সময় ইসমাইল মিয়ার স্ত্রীকে গালিগালাজ করেন খুর্শেদ আলী ও তার পরিবারের
লোকজন। কিন্তু কোন ভাবেই তাদের ঘায়েল করতে না পারায় সে শিশু আকাশকে হত্যার
পরিকল্পনা করে। হত্যাকান্ডটি সে একাই ঘটিয়েছে বলে স্বীকারোক্তিতে উল্লেখ
করা হয়।
জবানবন্দি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।
প্রসঙ্গত,
২৮ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৮টায় রিচি প্রাইমারি স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র
খুর্শেদ আলীর পুত্র আকাশ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুজি করে কোন
সন্ধান না পেয়ে ওই দিন বিকালে আকাশের পিতা খুর্শেদ আলী হবিগঞ্জ সদর থানায়
সাধারণ ডায়েরী করেন। সাধারণ ডায়েরীর প্রেক্ষিতে পুলিশ বিভিন্নস্থানে
শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। শুক্রবার (৫ মে) সন্ধ্যায় গোপন সূত্রে
পুলিশ জানতে পারে ওই হত্যাকান্ডের সাথে আমিন মিয়া ওরফে সুমন ও তার পিতা
ইসমাইল মিয়া জড়িত। শনিবার (৬ মে) রাতেই পুলিশ আমিন ওরফে সুমন (২০) কে আটক
করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আমিন হত্যাকান্ডের ঘটনা স্বীকার
করে সুমন। শনিবার রাত ২টার দিকে তার দেয়া স্বীকারোক্তির মতে পুলিশ ওই
গ্রামের সিরাজ মিয়ার জমির পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় শিশুটির গলিত লাসের (১৯
টি) হাড় উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ
করে।
রোববার
ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের জিম্মায় হাড়গুলো হস্তান্তর করে পুলিশ। রাতে
আকাশকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় আকাশের পিতা খুর্শেদ আলী
বাদি হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
খুর্শেদ আলী জানান, তার সন্তানকে ঘাতক আমিন হত্যা করেছে। তিনি ঘাতক আমিনের ফাঁসি দাবি করেন।
হবিগঞ্জ
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক জানান, আদালতে
স্বীকারোক্তি দিয়েছে আমিন। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন।