বিশেষ প্রতিনিধি:
জুড়ীতে রোববার রাতের ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সাগরনাল বাশ মহালের ৬টি
হান্ডর (বাঁধ) ভেঙ্গে ভেসে গেছে কয়েক লাখ টাকার বাশ। আশংকা রয়েছে বাঁশ
মহালের কোটি টাকার তির।
বনবিভাগ
সুত্রে জানা গেছে, ৩২৭৯একর আয়তনের সাগরনাল বাঁশ মহালের ইজারা নেন স্থানীয়
মহালদার মামুনুর রশিদ। ১ বছরের মেয়াদে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকায় ৪০ লাখ ২০
হাজার বাঁশের ইজারা নিয়ে তিনি বাশ আহরণ শুর” করেন। ৭ মাসে মহালদার সাড়ে ১৭
লাখ বাশ সংগ্রহ করে মহাল অভ্যন্তরে হান্ডরে মজুত রাখেন। রোববার রাতের ভারি
বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলে মহাল অভ্যন্তরের ৬টি হান্ডর (বাশ মজুতের বাঁধ)
ভেঙ্গে কয়েক লাখ বাশ ভেসে যায়।
সরেজমিনে
সাগরনাল বাঁশ মহালে গেলে বাঁশ কাটা শ্রমিক লিয়াকত আলী খান, পরেশ রুদ্র
পাল, কুমোধ বোনার্জী, মোছব্বির মিয়া প্রমূখ জানান, এ অঞ্চলের দরিদ্র
লোকজনের জীবিকার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে পাহাড়ে বাঁশ কাটা আর হাওরে ধান কাটা।
কিন্তু চৈত্র মাসের বন্যায় হাকালুকির হাজার হাজার একরের বোরো ধান তলিয়ে
যাওয়ায় কেউ কাচি নিয়ে হাওরে নামতে পারেনি। শেষমেষ বাশ মহালের হান্ডর
ভাঙ্গার ফলে বাঁশ মহালের কাজও মনে হয় বন্ধ হয়ে যাবে।
বাঁশ
মহালদার মামুনুর রশিদ জানান, এবার আগাম বন্যায় বাঁশের বাজার নিুমূখী।
সুনামগঞ্জ, আজমেরিগঞ্জ, নবীগঞ্জ, শিপ্পা, নেত্রকোনা, বানিয়াচং, হবিগঞ্জ,
ব্রাহ্মনবাড়িয়া, চাতলপার, আকতাপাড়া অঞ্চলের লোকজন বোরো ধান তুলে বৈশাখ মাসে
বসতঘর তৈরী, মেরামত, আসবাবপত্র তৈরী ও ধান সংরণের বড়বড় ঝুড়ি তৈরীর জন্য
বিভিন্ন প্রকারের বাঁশ ক্রয় করে থাকে। ধান হারানো মানুষ যেখানে পেট চালাতে
পারছে না, সেখানে বাঁশ ক্রয় দুরের কথা। ফলে লোকসান অনিবার্য। তার উপর
রোববারের ভারি বৃষ্টিপাতে হান্ডর ভাঙ্গায় মড়ার ওপর খড়ার ঘা। বাকি সময়ের
মধ্যে হান্ডর নির্মাণ করে বাঁশ নামানো মোটেও সম্ভব নয়।
