কুলাউড়ার এসিল্যান্ড এখন ময়মনসিংহের ইউএনও


নিজস্ব প্রতিবেদক: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে  সম্প্রতি এসিল্যান্ড ( সহকারী কমিশনার - ভুমি)  পদ থেকে পদোন্নতি পেয়েছেন বেশ কিছু কর্মকর্তা।  এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য  সিলেটের মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার  এসিল্যান্ড  শাহ জহুরুল হোসেন। তাকে পদোন্নতি দিয়ে ইউএনও হিসেবে   ময়মনসিংহ বিভাগে দেয়া হয়েছে। 

বিসিএস ৩৬ ব্যাচের  এ কর্মকর্তা  অল্প দিনের জন্য  মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় সহকারি কমিশনার( ভূমি)  হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও তার কর্মক্ষেত্রের  কার্যক্রমে ছিল মানবিকতা, সততা, কর্মদক্ষতা, ন্যায়পরায়ণতা, পক্ষপাতিত্তমূলক কর্মকান্ডের বিরোধী  অবস্থান। 

যে কারণে  তার পদোন্নতিতে  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম,  অনলাইন নিউজ পোর্টাল,  মাল্টিমিডিয়া, নিউজ পেপার  জুড়ে  প্রশংসিত স্ট্যাটাস, পদোন্নতিতে   অতীত  কার্যক্রম বিশ্লেষণ  পূর্বক সংবাদে  ভাইরাল। 

পদোন্নতি জনিত কারণে  কুলাউড়ার মানুষ সৎ,  নিষ্ঠাবান এ কর্মকর্তার  প্রতি ভালবাসা দেখাতে সফলতা কামনা করলেও  সাধারণ মানুষ  কাঁদছে  নীরবে । তাদের   মতে এসিল্যান্ড জহুরুল হোসেন  নয়  সাধারণ মানুষ( তারা) যেন  হারাচ্ছে এক আস্থার জায়গা। 

অল্পদিনেই   ভূমি  সংক্রান্ত  অনেক  বিরোধ  নিষ্পত্তি করে  ও  দৃশ্যমান  একটি ভূমি মেলা  উপহার দিয়ে  মন জয় করেছেন অসহায় অনেক মানুষের। অতীতে   ইন  জাস্টিস এর   শিকার  অনেক অসহায় পরিবার ফিরে পেয়েছে তার   পৈতিক নিবাস  ও জায়গা জমি।  এ  কারনে মানুষের আস্থা ফিরে এসেছে    স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি।

এদিকে স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতার  নতুন বাংলাদেশ  কে এগিয়ে নিতে  সরকারী নির্দেশনা  মোতাবেক মাদকবিরোধী অভিযান  ও ছিল  তার দৃশ্যমান। 

ভেজাল বিরোধী অভিযানে  ও যানজট নিরাসনের বিরুদ্ধে  কোমর বেঁধে  রীতিমতো  লড়াই করেছেন তিনি। এ কারণে  অনেকেই শত্রু হয়ে উঠলেও  সততার কাছে যেন   হার মানতে বাধ্য হয়েছেন। এমন টি জানিয়েছেন কুলাউড়ার সচেতন মহলের   অনেকেই। 

সরকারি অনেক জায়গা দখলমুক্ত হয়েছে  এসিল্যান্ড জহুরুল  হোসেনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণে  দখলমুক্ত হয়েছে  আওয়ামী লীগ নেতাদের দখলে থাকা  অনেকগুলো দিঘি ( পুকুর)

মানবিক এ কর্মকর্তা  ঈদুল আযহার পূর্বের দিন রাতে  সবাই ঈদের  প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও 

তার অবস্থান ছিল  অসহায় মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্র  ও স্থানে  স্থানে   গিয়ে  মানবিক  সহায়তা  ও ঈদ উপহার পৌঁছে দিতে।

সাম্প্রতিক সময়ে  কুলাউড়ার ওষুধ ফার্মেসীগুলোতে  অভিযান দিয়েও মানুষের প্রশংসা পাচ্ছেন তিনি। কারণ বেশিরভাগ মানুষ এখনো  ওষুধ, কোম্পানি  আর মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ সম্পর্কে  অনভিজ্ঞ।  অভিযান কালে ত্রুটি থাকায় জরিমানা করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ফার্মেসিতে। 

এমন কর্মকর্তাকে সাময়িক হারালেও  তিনি যেন ফিরেন  আবারো   কুলাউড়ার  ইউএনও, মৌলভীবাজার ডিসি  অথবা সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে  এমন প্রত্যাশা   ভুমি অফিসে  আসা সেবা গ্রহীতা  ও কুলাউড়ার  বিভিন্ন প্লাটফর্মের  মানুষজনের। 

সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে  জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের  মাঠ প্রশাসন -২  শাখার উপসচিব  আমিনুল ইসলাম  স্বাক্ষরিত  এক প্রজ্ঞাপনে  কুলাউড়ার এসিল্যান্ড   জহরুল হোসেনকে  ময়মনসিংহ বিভাগে  ইউএনও হিসাবে  পদায়নের বিষয়  নিশ্চিত করা হয়। 

ভূমি সংক্রান্ত নানা অনিয়ম রোধ, ডিজিটাল ভূমি সেবা চালু এবং সরকারি সম্পত্তি দখলমুক্ত  ভূমি অফিসকে দালাল মুক্ত করে কুলাউড়ার সহকারী কমিশনার ভূমি   এর কার্যালয় কে  জনবান্ধব করে তোলার কারিগর  এসিল্যান্ড  জহুরুল হোসেন। 

তিনি  ফুলপুর কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট ( এইচএসসি )  ফাঁস করলেও   গ্রাজুয়েশন  করেন   শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। 

২০১৮ সালে  সহকারী কমিশনার হিসেবে  প্রথম পোস্টিং পিরোজপুর জেলায়  হলেও  পরবর্তীতে   এসিল্যান্ড হিসেবে  প্রথম দায়িত্ব পালন করেন দিনাজপুর জেলার  বিরল উপজেলায়। 

সিলেটের মিডিয়া অঙ্গন  ও সচেতন মহলে  বেশ পরিচিত এসিল্যান্ড জহুরুল  হোসেন । কারণ তিনি  ইতিপূর্বে  জৈন্তাপুর ও  ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায়  এসিল্যান্ড  হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন  বেশ নিষ্ঠার সাথে। 

কুলাউড়ার বাসিন্দা সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের  সহ-সাধারণ সম্পাদক  এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া  জানান, এক সময় কুলাঊড়া ভূমি অফিসের ফাইল নড়তো না  ঘুষের টাকা ছাড়া। কর্মকর্তার সাথে দেখা করা যেত না  দালালদের  সাথে সম্পর্ক  ছাড়া। সেই অবস্থা   থেকে উত্তরণ করেছেন  এবং সাধারণ মানুষের সেবা নিশ্চিত করেছেন  এসিল্যান্ড জহুরুল হোসেন। কুলাউড়ায় যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। 

সাপ্তাহিক বেনীআসহকলা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক  আশরাফুল ইসলাম হিরো জানান, কুলাউড়া দক্ষিণ বাজারে  একটি মিষ্টির দোকানে  মেয়াদোত্তীর্ণ মিষ্টি খেয়ে  তিনি ও তার পরিবারের লোকজন অসুস্থ হয়ে যান  তাৎক্ষণিক উপজেলা প্রসনকে অবগত করলে  দুদিনের মধ্যেই  এসিল্যান্ড জহুরুল হোসেনের নেতৃত্বে  অভিযান হয় সে প্রতিষ্ঠানে  করা হয় জরিমানা  ফেলে দেওয়া হয়  মিষ্টিগুলো। কোন মানুষ অভিযোগ দিয়ে  আর অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে এবং ব্যবস্থা নিলে  যেভাবে প্রান সঞ্চার পায়।সেভাবে ন্যায় বিচার পেয়ে আমাদেরও ভালো লেগেছে। অভিযানের ফুড ইন্সপেক্টর ওর সাথে ছিলেন। 

কুলাউড়ার ভুকশিমইল ইউপির  গৌড়করন  এলাকার  কয়েকজন বাসিন্দা জানান , তাদের পার্শ্ববর্তী এলাকার এক ব্যক্তি  রাস্তার মধ্যে  একটি ঘর নির্মাণ করার কারণে  যাতায়াত বন্ধ ছিল একটি বৃহৎ এলাকার  অভিযোগ দেয়ার পর  প্রথমে কুলাউড়ার এসিল্যান্ড  অভিযানে গেলে  প্রতিপক্ষের লোকজন   অসৌজন্য  আচরণ করে  পরবর্তীতে  এসিল্যান্ড  এর ফোন আলাপে  সেনাবাহিনীর লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে  গুড়িয়ে দেয় সে  ঘরটি। যাতায়াতের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় রাস্তা । এ সময় একজনকে  গাড়িতে তুলে এনে  কিছু সময়ের জন্য উত্তম মধ্যম   দিয়ে  ছেড়ে দেয় সেনাবাহিনী । 

এসিল্যান্ড জহুরুল হোসেনের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলায়। 

সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার উপসচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়   যে কুলাউড়ার এসিল্যান্ড  জহুরুল হোসেন কে  ময়মনসিংহ বিভাগে ইউএনও হিসেবে  পদায়ন করা হয়েছে  বলে।

Post a Comment

Previous Post Next Post