ধর্ষণের পর ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ায় বৃদ্ধের ১৪ বছর জেল



নিউজ ডেস্কঃ দুই কিশোরীকে কৌশলে ধর্ষণ করে তার ভিডিও চিত্র ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইলে ছড়িয়ে দেয়ার অপরাধে এক বৃদ্ধকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত। একইসঙ্গে তার ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে তাকে। বুধবার দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামীর নাম আল-আমিন ওরফে আকিল। নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই গ্রামের বাসিন্দা তিনি। ২০১৬ সালে যখন মামলাটি করা হয় তখন তার বয়স ছিল ৬০ বছর। আল-আমিন পলাতক আছেন। তার অনুপস্থিতিতেই এই রায় ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট ইসমত আরা।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্ক জোড়া লাগানোর কথা বলে এলাকার ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে কবিরাজি চিকিৎসার নামে ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন আল-আমিন। ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর ঘটে ওই ঘটনা। এরপর থেকে ওই কিশোরীকে নিয়মিত ধর্ষণ করা হতো। একই বছরের ১৫ নভেম্বর ১৩ বছরের আরেক কিশোরীকে কৌশলে কবিরাজি চিকিৎসার নামে ধর্ষণ করেন তিনি। দুজনকে ধর্ষণেরই ভিডিও করে রাখেন ওই বৃদ্ধ।

ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে দুই কিশোরী মারা যাবে বলে তাদের ভয় দেখানো হত। ওই বৃদ্ধ দুই কিশোরীকে তার কাছে যাওয়ার জন্য চাপ দিতেন। দুই কিশোরী পরে আর না গেলে তাদের ধর্ষণের ভিডিও বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইল ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। 

আইনজীবী ইসমত আরা জানান, ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ভুক্তভোগী এক কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় একটি মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত করে নাটোরের আদালতে বৃদ্ধ আল-আমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর নাটোরের আদালত থেকে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ধারার অংশটির বিচারের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। পরে রাজশাহীতে সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন হলে এটি এখানে আসে। এখানে ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করলেন আদালত।

তিনি আরও জানান, রাজশাহীর আদালতে শুধু ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার বিচার হলো। ধর্ষণের জন্য মামলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারার অংশটির বিচার চলছে নাটোরের আদালতে। ওই অংশটুকুর রায় এখনও হয়নি। মামলা একটি হলেও ধারা আলাদা থাকার কারণে বিচার দুই আদালতে চলছে বলেও জানান আইনজীবী ইসমত আরা।

Post a Comment

Previous Post Next Post