অসুস্থ, মৃত ছাগলের মাংস রেস্তোরাঁয় সরবরাহ করতেন তারা



নিউজ ডেস্কঃ হোটেল, রেস্তোরাঁ, জেলখানা, হাসপাতালসহ বিভিন্ন দোকানে দীর্ঘদিন ধরে সরবরাহ করা হচ্ছিল মৃত ও অসুস্থ ছাগলের মাংস। অবশেষে এ অপকর্মের সঙ্গে জড়িত চারজনকে শনিবার সন্ধ্যায় আটক করে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের কাছ থেকে ১৫০ কেজি মৃত ছাগলের মাংস, চারটি মৃত জবাই করা ছাগল ও ২৭টি অসুস্থ ছাগল জব্দ করা হয়।

আসামিরা হলেন- মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার দরগাপাড়া এলাকার মশিউর রহমান আপেল, ফাইসাল এবং তাদের সহযোগী কায়েস ও ফয়সাল হোসেন।

চক্রের চার সদস্যকে আটকের পর রোববার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার আরেফিন জুয়েল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, কতিপয় ব্যক্তি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থেকে মৃত ছাগলের মাংস, জবাই করা মৃত ছাগল এবং অসুস্থ ছাগল রাজশাহী শহরের বিভিন্ন খাবার হোটেলে সরবরাহ করার উদ্দেশ্যে নিয়ে আসছে। এরপর পুলিশ শনিবার সন্ধ্যায় কাশিয়াডাঙ্গা থানার সামনে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের বালিয়ার মোড়ে অবস্থান নেয়। এ সময় শিবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা একটি পিকআপ তল্লাশি করে ঘটনার সত্যতা মেলে। ছাগল ও মাংসের দুই মালিকসহ চারজনকে আটক করা হয়। তারা মাংস সরবরাহ করা-সংক্রান্ত কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি।

পরে বস্তাভর্তি মাংস ও জবাই করা ছাগলগুলো পরীক্ষার জন্য রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পরীক্ষা করে জানান, ছাগলগুলো মৃত অবস্থায় জবাই করা হয়েছে। আর মাংসগুলোও মৃত ছাগলের। জীবিত ছাগলগুলো অসুস্থ ও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বিষয়টি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়।

ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামিরা জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থেকে মৃত ছাগলের মাংস, মৃত জবাই করা ছাগল এবং অসুস্থ ছাগল স্বল্পমূল্যে কিনে রাজশাহীর বিভিন্ন খাবার হোটেল, রেস্তোরাঁ, চায়নিজ রেস্টুরেন্ট, বিরিয়ানি হাউস, জেলখানা, হাসপাতাল ও বাজারে সরবরাহ করত।

তবে অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) ও জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ।

অপরাধ বিবেচনা করে মৃত ছাগলের মাংসের মালিক মশিউর রহমান আপেল ও ফাইসালকে ৮০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মাটিতে পুঁতে ফেলা হয় জবাই করা মৃত ছাগল এবং মাংস।

রাজশাহী বিভাগীয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ বলেন, ‘ধরা না পড়লে এসব মাংস রাজশাহীবাসী খেত। আমরা তাদের সতর্ক করেছি। বিষয়টি নজরদারিতে থাকবে।’

Post a Comment

Previous Post Next Post